ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সখীপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে খাদ্য সরবরাহে অনিয়ম

প্রকাশিত: ০৩:৩৯, ১৭ নভেম্বর ২০১৭

সখীপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে খাদ্য সরবরাহে অনিয়ম

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল, ১৬ নবেম্বর ॥ সখীপুরে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ঠিকাদারের ইচ্ছায় রোগীদের খাদ্য সরবরাহে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠেছে। নিম্নমানের খাবার সরবরাহ, প্রয়োজনের তুলনায় কম মাছ, মাংস ও তেল সরবরাহ করা হচ্ছে বলে জানা যায়। ভর্তিকৃত রোগীদের জন্য যে পরিমাণ খাবার সরবরাহ করার কথা, তা না করে ঠিকাদারের ইচ্ছামত খাবার দেয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ ওঠেছে। জানা গেছে, মাথাপিছু রোগীর জন্য প্রতিদিন পাউরুটি ২৪৪ গ্রাম, চাল ৪০০ গ্রাম, তেল ৪০ গ্রাম, মাংস (খাসি) ২৫৪ গ্রাম, মুরগী (দেশী) ২৮২ গ্রাম, মাছ (রুই, কাতল, মৃৃগেল) ২৮২ গ্রাম, মাছ (গ্রাসকার্প, সিলভার কার্প, আমেরিকান রুই) ৩৩৮ গ্রাম, পাঙ্গাস ৪২৩ গ্রাম, সবজি ৩৫০ গ্রাম, পিঁয়াজ ৫০ গ্রাম, রসুন ২০ গ্রাম, জিরা পাঁচ গ্রাম, আদা পাঁচ গ্রাম, তেজপাতা পাঁচ গ্রাম, এলাচ ১০ গ্রাম, দারুচিনি ১০ গ্রাম ও লবঙ্গ পাঁচ গ্রাম সরবরাহ করার নিয়ম রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রোগীদের সপ্তাহে তিনদিন মাংস ও চারদিন মাছ সরবরাহ করার কথা থাকলেও ১০ দিনে একদিন মাংস সরবরাহ করা হয়। তাও আবার ব্রয়লার মুরগীর মাংস। বাকি দিন রুই, কাতল ও মৃগেল মাছের বদলে দেয়া হয় পাঙ্গাস ও তেলাপিয়া মাছ। মাছের মাথা ও লেজ বাদ দিয়ে রোগীদের দেয়ার নিয়ম থাকলেও তাও মানা হচ্ছে না। সকালের নাস্তায় দেয়া পাউরুটির পরিমাণ কম। চিকন চালের বদলে রোগীদের খাওয়ানো হয় মোটা ও নি¤œমানের চাল। রোগীরা সাধারণত ওই খাবার খেতে চান না। আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ও নার্সিং সুপার ভাইজারের উপস্থিতিতে সরবরাহকৃত মালামাল রান্নার জন্য প্রস্তুতির কথা বলা হলেও তা করা হয় না। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার তার ইচ্ছামাফিক পণ্য সরবরাহ করে থাকেন। এদিকে রোগীদের খাসির মাংসের বদলে ব্রয়লার ও রুই মাছের বদলে পাঙ্গাস ও তেলাপিয়া মাছ দেয়া হলেও সরকারী নিয়মে খাসি ও রুই মাছের বিল উত্তোলন করছেন ঠিকাদার। হাসপাতালের বাবুর্চি মজিবর রহমান ও তার স্ত্রী আফরোজা বেগম জানান, এখানে রোগীদের খাবারের কোন তালিকা নেই। ঠিকাদাররা যখন যা দেন তাই আমরা রান্না করে সরবরাহ করি। খাবারের তত্ত্বাবধানে থাকা হাসপাতালের সিনিয়র নার্স খোদেজা আক্তার বলেন, বিধি মোতাবেক রোগীদের খাবার দেয়ার জন্য ঠিকাদারকে বারবার বলার পরেও তিনি কোন তোয়াক্কা না করে ইচ্ছেমত খাবার সরবরাহ করে যাচ্ছেন। হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডাঃ শাহীনুর আলম বলেন, আমি সম্প্রতি এ পদে যোগদান করেছি। দায়িত্ব বুঝে পেলে খাবারের অনিয়মের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। হাসপাতালে খাবার সরবরাহকারী ঠিকাদার মীর শামসুল আলমের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি তালিকা মোতাবেকই খাবার সরবরাহ করছেন বলে দাবি করেন। এ বিষয়ে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ রাফিউল করিম খান জানান, হাসপাতালে রোগীদের খাদ্য দেখভালের দায়িত্ব আরএমও ও সিনিয়র স্টাফ নার্সের, খাদ্য সরবরাহে কোন অনিয়ম হয়ে থাকলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×