ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ডোমার-চিলাহাটি সড়ক সংস্কার বন্ধ ॥ দুর্ভোগ

প্রকাশিত: ০৩:৩৯, ১৭ নভেম্বর ২০১৭

ডোমার-চিলাহাটি সড়ক সংস্কার বন্ধ ॥ দুর্ভোগ

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ ভ্যানচালক রাশেদুল ইসলামের ভাষায়, এভাবে আর কতদিন চলা যায়। ভ্যানরিক্সার টায়ার ১৫দিনও যায় না। চাকা পাংচার হয়ে যায়। একবার এই পথে চলাচল করলে শরীরে আর কিছু থাকেনা। হামার মরণ হইছে বাহে। ডোমার-চিলাহাটি সড়কটি সংস্কার কাজ থমকে যাওয়ায় জনদুর্ভোগ চরমে ওঠেছে। ওই পথে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। এলাকাবাসীর অভিযোগ সড়কটি সংস্কারের জন্য তা ভেঙ্গে গোটা সড়কে ইটের খোয়া বিছিয়ে প্রায় এক বছর ধরে ফেলে রাখা হয়েছে। ওই পথে চলাচলকারীদের দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বাংলাদেশ সরকার ও জাইকার অর্থায়নে নর্দান বাংলাদেশ ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর ওই কাজটি বাস্তবায়ন করছে। সাত কোটি ৭৯ লাখ ১৭ হাজার ২২৮ টাকা ব্যয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আতিয়ার রহমানকে ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ কার্যাদেশ দেয়া হয়। ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ কার্যাদেশের মেয়াদ শেষ হয়। কিন্তু ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সময় বৃদ্ধি করে ২০১৮ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত করে নিয়েছে। কিন্তু এলাকাবাসী ওই সড়কে চলাচলকারী যানবাহনের চালক ও পথচারীরা অভিযোগ করে জানায়, গত ছয় মাস ধরে ঠিকাদার সড়কের সংস্কার কাজ বন্ধ করে রেখেছে। এদিকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ বলছে ঠিকাদারকে সড়কের ভাগে ভাগে কাজ করতে বলা হয়েছিল, কিন্তু তারা গোটা সড়ক ভেঙ্গে কাজ শুরু করায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে গিয়ে দেখা গেল ডোমার থেকে চিলাহাটির বোতলগঞ্জ পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার সড়কের খোয়া বিছানো কাদাপানি আর খানাখন্দে ভরে গেছে। কোথাও কোথাও ধুলা জমে একাকার। কোন গাড়ি চললে এলাকাটি ধুলায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ছে। রায়পুর নিজস্ব সংবাদদাতা, রায়পুর লক্ষ্মীপুর থেকে জানান, রায়পুর-হায়দরগঞ্জ ১২ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার কাজ চলছে তো চলছেই। কাজ শেষ হওয়ার নির্ধারিত সময় পেরিয়ে তিন মাস অতিবাহিত হতে চলেছে। এ কারণে কেউ বলতে পারছেন না কাজ কবে শেষ হবে। এদিকে উপজেলার সবচেয়ে ব্যস্ততম এ সড়কটির সংস্কার কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন ওই রাস্তায় চলাচলরত যাত্রী, যানবাহন চালক ও এলাকাবাসী। সংস্কার করতে গিয়ে রাস্তার কার্পেটিং উল্টিয়ে ফেলায় রাস্তার ফুটপাথ দিয়ে পথচারীদের চলতে হচ্ছে ঝুঁকি নিয়ে। খানাখন্দে ভরা সড়কে যান চলাচলের যন্ত্রণার চেয়ে আতঙ্কে থাকা যাত্রীরা প্রাণভয়ে কাঁপতে থাকেন ছিনতাইকারীদের উপদ্রবে। যথাসময়ে কাজ শেষ হওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন অনেকেই। আর এ অবস্থার জন্য এলাকাবাসী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করছেন। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ব্রিকফিল্ড থেকে জনকল্যাণ হাইস্কুল পর্যন্ত ৭ থেকে ৮ কিলোমিটার রাস্তার কাজ সবচেয়ে ধীরগতিতে এগোচ্ছে। কোন কোন স্থানে খোয়া ওঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তার ফুটপাথ দিয়ে যান চলাচল করছে। মনে হচ্ছিল, এই বুঝি উল্টে যাচ্ছে। উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী আক্তার হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ওই সড়কের ১২ কিলোমিটারের মধ্যে ৪ কিলোমিটারের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কার্যাদেশ অনুযায়ী দ্রুত কাজ শেষ করতে ঠিকাদারকে বলা হয়েছে অন্য স্থান থেকে ট্রাকে করে মাটি এনে ওই স্থানে ফেলার নির্দেশনা রয়েছে। তার পরিবর্তে সড়কের পাশের মাটি কেটে সড়কে লাগানো যাবেনা। এ অনিয়ম করে থাকলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×