ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

আহত ৭ হাজার এর বেশি ধ্বংসস্তূপের নিচে বহু মানুষ আটকা

ইরাক-ইরান সীমান্তে শক্তিশালী ভূমিকম্পে ৪ শতাধিক নিহত

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ১৪ নভেম্বর ২০১৭

ইরাক-ইরান সীমান্তে শক্তিশালী ভূমিকম্পে ৪ শতাধিক নিহত

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ ইরাক ও ইরানের সীমান্ত অঞ্চলে রবিবার সাত দশমিক তিন মাত্রার ভূমিকম্পে চার শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে সাত হাজারের বেশি মানুষ। ভূমিকম্পে হতাহত বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছে। নিহতদের মধ্যে ইরানের সেনা ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর একাধিক সদস্য রয়েছেন। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল ইরান সীমান্তবর্তী ইরাকের আধা-স্বায়ত্তশাসিত কুর্দিস্তানের সুলাইমানিয়া প্রদেশের পেঞ্জভিনে। এলাকাটি ইরানের সঙ্গে প্রধান সীমান্ত ক্রসিংয়ের সন্নিকটে। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ব্যাপক উদ্ধার অভিযান শুরু হয়েছে। ভূমিকম্পে এখানকার কয়েকটি গ্রামে মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গ্রামগুলোতে স্থানীয়ভাবে তৈরি করা ইটের বাড়িগুলোর ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকেপড়া জীবিতদের উদ্ধারের চেষ্টা করছেন উদ্ধারকর্মীরা। দেশ দুটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে ইরানে এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৩। তবে ইরাকের আবহাওয়া বিভাগ বলছে, সেখানে এর মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৫। খবর এএফপি, বিবিসি ও আল জাজিরার। ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন খবরে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই ইরানী। বাকি কয়েকজন ইরাকী। উদ্ধারকারীরা ইরানের দুর্গম এলাকাগুলোতে পৌঁছানোর পর মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন দেশটির কর্মকর্তারা। ইরানের কয়েকটি প্রদেশে ভূমিকম্প অনুভূত হলেও সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কেরমানশাহ প্রদেশে। কর্তৃপক্ষ ওই প্রদেশে তিন দিনের শোক ঘোষণা করেছে। ইরাক সীমান্তের প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে কেরমানশাহের সারপোল ই জাহাব জেলায় ২৩৬ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এখানকার প্রধান হাসপাতালটি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আহত শত শত মানুষকে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে। ভূমিকম্পের কারণে অন্তত ১৪ প্রদেশে ভূমিধস হওয়ায় উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে বলে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। ইরাকের কুর্দিস্তানের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা সেখানে অন্তত নয়জন নিহত ও পাঁচ শতাধিক লোক আহত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন। ভূমিকম্পে ইরাকে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সুলাইমানিয়া শহরের ৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণের শহর দারবান্দিখান। এখানে ৩০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন কুর্দিস্তানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রেকবত হামা রাশীদ। এ ভূমিকম্পে তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের শহর দিয়ারবাকিরও কেঁপে ওঠে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে থেকে হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত খবর পাওয়া যায়নি। ইরানের ভূমিকম্প বিষয়ক কেন্দ্র জানিয়েছে, এ পর্যন্ত ১১৮টি পরাঘাত রেকর্ড করেছে তারা এবং আরও পরাঘাত হবে বলে আশঙ্কা করছে। ইরানী রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, ৭০ হাজারেরও বেশি মানুষের জরুরী আশ্রয় দরকার। ভূপৃষ্ঠের ৩৩ দশমিক নয় কিলোমিটার গভীরে উৎপত্তি হওয়া ভূমিকম্পটি কোস্টারিকা, ইসরাইল ও কুয়েতেও অনুভূত হয়েছে বলে জানা গেছে।
×