ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বর্তমান সরকারের অধীনেই আগামীতে ইনক্লুসিভ নির্বাচনের আয়োজন হবে: বাণিজ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০২:৩২, ১৩ নভেম্বর ২০১৭

বর্তমান সরকারের অধীনেই আগামীতে ইনক্লুসিভ নির্বাচনের আয়োজন হবে: বাণিজ্যমন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া তার বক্তব্যে শেষ পর্যন্ত অটল থাকতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনেই আগামীতে ইনক্লুসিভ নির্বাচনের আয়োজন হবে। এই নির্বাচনে বিএনপি যদি না আসে, তাহলে নির্বাচন তো আর থেমে থাকবে না। নির্বাচন যথাসময়ে হবে। বিএনপি কোনোদিন নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। তাদের সেই ক্ষমতাও নেই। তিনি আরও বলেন, নির্বাচন নিয়ে বেগম জিয়ার বক্তব্য অপ্রত্যাশিত। কারণ আগামী নির্বাচনে তার দলকে অংশ নিতে হবে। তা না হলে তার দল অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে। সোমবার সচিবালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত সিঙ্গাপুর হাইকমিশনার ডেরেক লো’র সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশে আর কোনোদিন নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকার আসবে না। প্রসঙ্গত, রবিবার বিএনপির সমাবেশে বেগম খালেদা জিয়া বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে কোনও নির্বাচনে অংশ নেবে না বিএনপি। কারণ ক্ষমতাসীন দলের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে না। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে খালেদা জিয়ার এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ক্ষমতাসীন দলের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে সম্ভব না এ বিষয়ে খালেদা জিয়ার পূর্ব-অভিজ্ঞতা আছে। কারণ জিয়াউর রহমানের অধীনে নির্বাচন হয়েছিল। সেটি সুষ্ঠু হয়নি। এটা খালেদা জিয়া দেখেছেন। এছাড়া নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দেয়ার বিষয়েও খালেদা জিয়ার আগের অভিজ্ঞতা রয়েছে। ২০০১ সালে সেটা তিনি দেখেছেন। এটাও তার অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেছেন। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় এটা পড়ে না। সংলাপ প্রসঙ্গে তোফায়েল আহমেদ বলেন, বিএনপির সঙ্গে আর সংলাপ হবে না। কারণ তাদের অনেক সুযোগ দেয়া হয়েছে। তারা সেগুলো নিতে পারেনি। তারা আগুন সন্ত্রাস করে দেশের মানুষকে হত্যা করেছেন। কিন্তু তার বিনিময়ে কিছুই অর্জন করতে পারেনি। বরং তারা নিজেদের ক্ষতি করেছে। ভবিষ্যতে যদি তারা এরকম করতে চায়, তাহলে তাদের আরও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। এদিকে, সিঙ্গাপুরে রফতানিযোগ্য সকল পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা চাওয়া হয়েছে। দেশটির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধিতে এই শুল্কমুক্ত সুবিধা বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। দেশটির হাইকমিশনারের সঙ্গে বৈঠক শেষে তোফায়েল আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, সিঙ্গাপুরের সঙ্গে এমনিতে আমাদের সম্পর্ক অনেক ভালো। দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক আরও বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। তবে দেশটিতে বাংলাদেশের যেসব পণ্যের চাহিদা রয়েছে সেগুলো রফতানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিলে দুই সেই সম্পর্ক আরও জোরদার হবে। বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, সিঙ্গাপুরের হাইকমিশনারকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে সেই দেশের ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করার আহবান জানিয়েছেন তিনি। তোফায়েল আহমেদ বলেন, তাদেও দেশে অনেক ব্যবসায়ী আছেন। তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে পারেন। হাইকমিশনের মাধ্যমে তাদের জানাতে চাই তারা মুনাফার শতভাগই নিতে পারবেন। তিনি বলেন, সিঙ্গাপুরেই প্রথম ১৯৯৬ সালে ডব্লিউটিও মিনিস্টার কনফারেন্স হয়েছিল। ঐ কনফারেন্সে আমি সমন্বয়ক ও মুখপাত্র ছিলাম। এসময় সিদ্ধান্ত হয়েছিল স্বল্প উন্নতদেশগুলোতে ডিউটি ফি, কোটা ফি সুবিধা দেওয়া হবে। এর পর থেকেই পৃথিবীর বহুদেশে বাংলাদেশ ডিউটি ফি, কোটা ফি সুবিধা পায়। বাণিজ্য মন্ত্রী বলেন, বৈঠকে হাইকমিশনকে বলেছি- সঙ্গাপুর হতে আমরা ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন আমদানি করি। রফতানি করি ৩২৫ মিলিয়ন । যদিও ওখানে ডিউটি কম, তারপর অনুরোধ করেছি-এ ডিউটি ফি টা যেন শূন্য কওে দেন। বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, সিঙ্গাপুরের অনেক ব্যবসায়ীর আমাদের বেপজায় বিনিয়োগ রয়েছে। আমরা বলেছি-আমরা ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল করতে যাচ্ছি। এর যেকোনো একটি সিঙ্গাপুর নিতে পারে। অথবা বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে তারা আলাদা ভাবে বিনিয়োগ করতে পারে। তিনি বলেন, এদেশের বিনিয়োগ পলিসি খুবই চমৎকার। আমরা শতভাগ বিনিয়োগ গ্রহণ করি। কেউ কো- শেয়ার ছাড়াই পুরো ইন্ডাস্ট্রি করতে পারে। এ বিনিয়োগ এবং মুনাফা তারা যেকোন সময় ফেরত নিতে পারবেন। এটা আইনের দ্বারা সংরক্ষিত করা হয়েছে।
×