ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ভুতের মূখে রাম নাম ॥ কাদের

প্রকাশিত: ০২:২৪, ১৩ নভেম্বর ২০১৭

ভুতের মূখে রাম নাম ॥ কাদের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ বিএনপি নেতাদের মূখে গুণগত রাজনীতির কথা ’ভুতের মূখে রাম নাম’ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এই দেশে যারা নষ্ট রাজনীতির সুচনা করেছে, এই দেশে যারা সাম্প্রদায়িক শক্তির শ্রেষ্ঠ উৎস, এই দেশে যারা জঙ্গীবাদের বিস্তার ঘটিয়েছে- তারা যদি বলে রাজনীতিতে গুনগত পরিবর্তন করবে, এটা ভুতের মুখে রাম নাম ছাড়া আর কিছুই না। সোমবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাখতে গিয়ে ওবায়দুল কাদের প্রশ্ন রেখে বলেন, রাজনীতির গুনগত মান পরিবর্তন করবে তারা? যারা আগুনে শতশত মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছে, প্রতিহিংসা বিদ্বেষে যারা মানুষকে আগুনে পুড়িয়েছে, তারা (বিএনপি) বলে রাজনীতিতে গুনগত পরিবর্তন আনবে! বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) যৌথ উদ্যোগে ইউনেস্কো কর্তৃক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষন প্রমাণ্য শাখায় স্বীকৃতি পাওয়ায় সাংবাদিকদের আনন্দ সম্মিলনীর আয়োজন করে। বিএফইউজে সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুলের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন প্রধান তথ্য বিষয়ক উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, বিএফইউজের মহাসচিব ওমর ফারুক, ডিইউজের সভাপতি শাবান মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী প্রমূখ। সঠিকভাবে সংবাদ পরিবেশনের জন্য সাংবাদিকদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সমাবেশ নিয়ে আমরা কোন রাজনীতি করছি না, আমাদের সমাবেশ পাল্টা-পাল্টি না। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া রবিবর সমাবেশ করেছেন। এখন আমরা ১৮ তারিখে সমাবেশ করবো। এখানে দু-একদিনের মধ্যে আমি দেখবো অনেকে লিখছেন, আমরা পাল্টা সমাবেশ দিয়েছি। প্লিজ, আমরা পাল্টা-পাল্টি কোন সমাবেশে যাচ্ছি না। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ যা ছিল বাঙালীর সম্পদ, সেটা আজকে বিশ্বের সম্পদ। যা ছিল বাঙালীর প্রামাণ্য দলিল তা আজকে বিশ্বের হেরিটেজ। এটা নিয়ে আমরা কোন রাজনীতি করছি না। এখানে যারা আছেন এদের মধ্যে অনেকেই এটাকে পাল্টা-পাল্টি সমাবেশ হিসেবে দেখছেন। এটা দেখবেন না। কারণ বিএনপি সমাবেশের তারিখ ঘোষনার আগেই আমরা বঙ্গবন্ধুর সম্মানে এই সমাবেশের ঘোষনা দিয়েছি। বর্তমান সাংবাদিকতার মান নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “সাংবাদিকরা এখন এই পেশাটাকে যে কি অবস্থায় নিয়ে গেছে, তা দেখে কষ্ট লাগে। আজকে এই উৎকর্ষ পেশাটাকে যে কি অবস্থায় আপনারা নিয়ে গেছেন। ব্যাঙ্গের ছাতার মত মিডিয়া সৃষ্টি হয়েছে। আমি নিজেও সাংবাদিক ছিলাম। যারা ভালো সাংবাদিক, প্রফেশনাল কাজ করে, পড়াশোনা করে সাংবাদিকতা করে তাদের এই পেশায় নিয়ে আসুন। সরকারের তথ্যমন্ত্রীকে সাংবাদিকদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন সাংবাদিকরা যা (বেতন) পায় তাতে চলে না, সাংবাদিকরা বাসায় বসে পড়াশোনা করার জন্য তো একটা মুড লাগে; তাদের ইন্সপাইরেশন তো দরকার। আমার পেটে নেই ভাত, সংসারের ছেলে-মেয়েদের খরচ দিতে পারছি না, বাড়ি ভাড়া দিতে পারছি না। এ রকম করে কিভাবে সে ভালো সাংবাদিকতা করবে? একটা মানবিক বিষয় আছে এই মানবিক দৃষ্টিকোনটাও উপেক্ষিত করার নয়। সাংবাদিকরা তো ভিন্ন কোন গ্রহের বাসিন্দা না। তাদের সঙ্গে বসে আলোচনা করে সমাধান করতে হবে। আমি বলবো যুক্তিসংগত সমাধান করে দিন। বেশিরভাগ সাংবাদিকরা এখন কপি পেষ্ট করছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, “সাংবাদিকদের মধ্যে যা দেখবো তা লিখবো এটা কি এখন আছে? এখন একজন রিপোর্ট লিখেন অন্যদের কাছে শুনে শুনে। এখন দেখা যাচ্ছে একজন গেছেন অন্য কেউ যাননি, তার কাছ থেকে ধার নিয়ে রিপোর্ট তৈরি করছে। পরের দিন দেখা যায় এই রিপোর্ট সব পত্রিকায়। যখন তারা নিজে যান না, তখন অন্যের কাছ থেকে নেওয়া রিপোর্টটি নিয়ে রাজনৈতিকভাবে রিপোর্ট তৈরি করেন। এই কাজটাই এখন হচ্ছে। এ সময় সাংবাদিক নেতাদের মফস্বল সাংবাদিকতার মান যাচাইয়ের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “ আমি অনুরোধ করবো প্লিজ মফস্বলে যান, ওখানে কোন সাংবাদিকতা নেই।”
×