ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জাবিতে মৌখিক পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে দুই দিনে আটক ১০

প্রকাশিত: ০১:৫১, ১৩ নভেম্বর ২০১৭

জাবিতে মৌখিক পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে দুই দিনে আটক ১০

জাবি সংবাদদাতা ॥ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষার মৌখিক পরীক্ষায় দুই দিনে জালিয়াতির অভিযোগে মোট ১০ জনকে আটক করা হয়েছে। উত্তরপত্রের লেখা ও স্বাক্ষরের সঙ্গে হাতের লেখা ও স্বাক্ষরের মিল না পাওয়ায় সাক্ষাৎকার দিতে আসা ওই শিক্ষার্থীদের আটক করেছে জাবি প্রশাসন। পরে জালিয়াতির অভিযোগ স্বীকার করলে সন্ধ্যায় তাদের আশুলিয়া থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়। প্রক্টর অফিস সূত্রে জানা যায়, ১৩ নবেম্বর সোমবার মৌখিক পরীক্ষার দ্বিতীয় দিনে আশরাফুজ্জামান, মাহমুদুর রশীদ সৌরভ, নাইমুর রহমান, নিশাদ আহমেদ নামের চার ভর্তিচ্ছুসহ মোট ৬ জনকে আটক করা হয়। এছাড়া নিশাদের বড় ভাই নাইমুল সরকারকে ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি চক্রের সাথে যোগসাজসের অভিযোগে আটক করা হয়। তবে সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগ না পাওয়া গেলেও নাইমুল সরকারের সাথে থাকায় সন্দেহভাজন হিসেবে মো. রেজওয়ানকে আটক করে পুলিশে দেয়া হয়েছে। প্রক্টর অফিসে জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্তরা প্রক্সির মাধ্যমে চান্স পাওয়ার কথা স্বীকার করে। এদের মধ্যে আশরাফুজ্জামান ৫ লাখ টাকা চুক্তিতে ‘সি’ ইউনিটে (রোল নং-৩৪২৪৭৩) প্রক্সির মাধ্যমে ১৭ তম হয়। আরেক আটককৃত মাহমুদুর রশীদ সৌরভ ৫লাখ টাকার বিনিময় ‘ই-ইউনিটে’ (রোল-৫২৩২৫৩) প্রক্সির মাধ্যমে ১৫২ তম হন। এছাড়া নাইমুর রহমান ২ লাখ টাকা চুক্তিতে ‘ই-ইউনিটে’ রোল-৫২৬০৯৮) প্রক্সির মাধ্যমে ১২৭ তম হওয়ার কথা স্বীকার করে। অন্যদিকে নিশাদ আহমেদ ‘এফ-ইউনিটে’ রোল নং-৬৩২১৩৬) প্রক্সি সহায়তা নিয়ে ৪৭ তম অবস্থান করেন। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহা বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাদের জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়ায় তাদের পুলিশে দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, এর আগে ১২ নবেম্বর রবিবার মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার সময় আটক হয় চার শিক্ষার্থী। আটককৃতরা হলেন- মাহবুব হোসেন, ইমাম হোসেন, অমিত হাসান ও আশিকুল হাসান রবিন। এদের মধ্যে তিনজন জালিয়াতির কথা স্বীকার করলেও রবিন বিষয়টি অস্বীকার করেন। জানা যায়, মাহবুব হোসেন ভর্তি জালিয়াতি চক্রের সদস্য সনদ নামের একজনের সঙ্গে সাড়ে তিন লাখ টাকা চুক্তি করেন। চুক্তি অনুযায়ী মাহবুবের পরিবর্তে সনদ পরীক্ষা দেন। তাতে মাহবুব ‘ই’ ইউনিটে (বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ) ৩য় স্থান লাভ করেন। তার ভর্তি পরীক্ষার রোল নম্বর- ৫৩০৯৪২। ইমাম হোসেন ছয় লাখ টাকার বিনিময়ে রাহাত নামের এক শিক্ষার্থীর সাথে চুক্তি করে। ইমাম ‘এফ’ ইউনিটে (আইন ও বিচার অনুষদ) ৩য় স্থান লাভ করেন। তার ভর্তি পরীক্ষার রোল নম্বর- ৬৩৭৩৪৪। অমিত হাসানের হয়ে ছয় লাখ টাকার বিনিময়ে তার প্রক্সি দিয়ে দেয় সনেট নামের একজন। অমিত ‘এইচ’ (আইআইটি) ইউনিটে ১১তম স্থান লাভ করেন। তার ভর্তি পরীক্ষার রোল নম্বর- ৮১২৬৮৬। অন্যদিকে আশিকুল হাসান রবিন ‘এফ’ (আইন ও বিচার অনুষদ) ইউনিটে ১৬তম স্থান লাভ করেন। উত্তরপত্রের লেখার সঙ্গে তার হাতের লেখার মিল না পাওয়ায় তাকে আটক করা হয়। কিন্তু তিনি জালিয়াতির কথা অস্বীকার করেছেন।
×