ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

রংপুরের সাম্প্রদায়িক সহিংসতার দোষীদের বিচার দাবী জাপা ও ওয়ার্কার্স পার্টির

প্রকাশিত: ০১:১১, ১৩ নভেম্বর ২০১৭

রংপুরের সাম্প্রদায়িক সহিংসতার দোষীদের বিচার দাবী জাপা ও ওয়ার্কার্স পার্টির

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ রংপুরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত করার অভিযোগে রংপুরে নিরীহ হিন্দুদের বাড়ি-ঘরে যারা সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে- তারা যে-ই হোক তাদের বিচার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। একই সাথে তিনি বলেন, ধর্মীয় অনুভুতিতে যারা আঘাত করবে- তাদেরও সঠিকভাবে সনাক্ত করার দাবি জানান। এদিকে হামলার ঘটনায় বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সহ পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ অব্যাহত রয়েছে। এরশাদ তাঁর বনানীস্থ কার্যালয়ে দলীয় নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠককালে বলেছেন, রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি কু-চক্রিমহল পরিকল্পিতভাবে এধরণের ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে। ফেসবুকে ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত করে পোষ্ট দেয়ার পেছনে কোনো পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র থাকলে তাও অনুসন্ধান করে বের করতে হবে এবং এর সাথে যে বা যারা জড়িত তাদেরও বিচারের আওতায় আনতে হবে। তিনি বলেন, এই ঘটনাকে পুঁজি করে যারা নিরীহ হিন্দুদের বাড়ি-ঘরে হামলা-অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করেছে- আমি তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। যারা এই ঘটনা ঘটানোর পেছনে ইন্ধন জুগিয়েছে- তাদের খুঁজে বের করতে হবে। রংপুরে ক্ষতিগ্রস্থ হিন্দু পল্লী পরিদর্শন এবং ক্ষতিগ্রস্থদের সাহায্য-সহযোগিতা করার জন্য পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সোমবার পাঠানো হয়। প্রতিনিধি দলের অপর দুই সদস্য হচ্ছেন- পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায় এবং যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মাহবুবুল আলম মিঠু। এই প্রতিনিধি ক্ষতিগ্রস্থ হিন্দু পল্লী পরিদর্শনে যান এবং ক্ষতিগ্রস্থতের আর্থিক সহযোগিতা করেন। পরিদর্শনের সময় ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানান রুহুল আমিন হাওলাদার। ওয়ার্কার্স পার্টির প্রতিবাদ ॥ ওয়ার্কার্স পার্টি ঢাকা মহানগর কমিটির উদ্যোগে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে রংপুরে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার প্রতিবাদে এক মানববন্ধন কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর সভাপতি আবুল হোসাইন। বক্তব্য রাখেন পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য কামরূল আহসান, ঢাকা মহানগর সাধারণ সম্পাদক কিশোর রায়, মহানগর নেতা জাহাঙ্গীর আলম ফজলু, কৃষক নেতা মোস্তফা আলমগীর রতন, খেতমজুর নেতা জাকির হোসেন রাজু, নারী নেত্রী শিউলী শিকদার, শ্রমিকনেতা আব্দুল্লাহ আল মামুন, গৃহ শ্রমিকনেতা মুর্শিদা আখতার, যুবনেতা সাদাকাত হোসেন বাবুল, ছাত্রনেতা এমরান প্রমুখ। নেতৃবৃন্দ রংপুরে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে পরিকল্পিতভাবে আগ্নিসংযোগ ও ভাঙ্গচুর ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, ফেসবুকে কথিত পোস্ট দেয়ার নাম করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর এই আক্রমণ সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি তৈরির চক্রান্ত। ইতোপূর্বেও কক্সবাজারের রামুতে বৌদ্ধ মন্দির ধ্বংস, নাসির নগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ী ঘরে তান্ডব চালানোসহ বিভিন্ন জায়গায় সাম্প্রদায়িক হামলা চালানোর জন্য পরিকল্পিতবাবে “ফেসবুক গল্প” সৃষ্টি করা হয়েছে। হামলার সাথে যুক্ত হোতাদের চিহ্নিত করে তাদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার শাস্তি প্রদানের আহ্বান জানানো হয়। রংপুরের সলেয়াস বাজারের ব্রাহ্মণ পাড়া হিন্দুদের বাড়ী-ঘরে আক্রমণ ও জ্বালিয়ে দেয়ার ঘটনাটিও একই ষড়যন্ত্রের কেন্দ্র থেকে উৎসারিত। এই ঘটনায় জামাত-শিবিরের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি সামনে এসেছে। দেশে একটি সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি তৈরি করে রাজনৈতিক সুবিধা অর্জন করতে যারা তৎপর তারাই এই ঘটনার সাথে জড়িত। নেতৃবৃন্দ, হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘর-বাড়ীতে সন্ত্রাসী হামলা ও অগ্নিসংযোগকারীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের আহ্বান জানান। পাশাপাশি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জানমালের নিরাপত্তা প্রদান ও এলাকায় সৃষ্ট ভয়ার্ত অবস্থা দূর করে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পুনর্বাসনে সহায়তাদানে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তারা।
×