ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির জনসভা

আগামী সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে খালেদা জিয়া ॥ হাসিনার অধীনে নয়

প্রকাশিত: ০৫:০২, ১৩ নভেম্বর ২০১৭

আগামী সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে খালেদা জিয়া ॥ হাসিনার অধীনে নয়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিদেশে এজেন্সির লোক পাঠিয়ে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে চাপ সৃষ্টি করে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। রবিবার বিকেলে রাজধানীর সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে ‘বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে বিএনপি আয়োজিত বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন। সরকারের অত্যাচার-নির্যাতনে এখন ঘরে ঘরে আহাজারি মন্তব্য করে তিনি বলেন, এ অবস্থার অবসানে দেশের মানুষ পরিবর্তন চায়। এ পরিবর্তন হতে পারে ভোটের অধিকারের মাধ্যমে। তাই পরিবর্তনের জন্য নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না, নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। দলের নেতাকর্মীদের সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিজয় আমাদের হবেই ইনশাআল্লাহ। আমরা ক্ষমতায় গেলে কারও প্রতি প্রতিশোধ নেব না, হিংসার রাজনীতিও করব না। দেশকে সম্মানের আসনে নিয়ে যাব। বিএনপি চেয়ারপার্সন বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ কমিশনারদের বলব, দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করার দায়িত্ব আপনাদের। আপনারা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের কথা বলুন। নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, শুধু সেনা মোতায়েন করলেই হবে না, তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ারও দিতে হবে। কোন ইভিএম চলবে না। ইভিএম বন্ধ করতে হবে। ইভিএম আমরা চাই না। খালেদা জিয়া বলেন, দেশে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নেই। সত্য কথা বলায় প্রধান বিচারপতিকে জোর করে অসুস্থ বানিয়ে বিদেশে পাঠানো হয়। সরকারের বিরুদ্ধে যে-ই কথা বলে তাকেই হয় মামলা দিয়ে জেলে না হয় বিদেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়। জেলখানাগুলো এখন বিএনপির লোক দিয়ে ভরা। বর্তমান সরকারকে লুটপাটের সরকার আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, ওয়াশিংটন ভিত্তিক একটি গবেষণা সংস্থার দেয়া তথ্য অনুসারে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ গত ১০ বছরে সাড়ে ৪ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। আওয়ামী লীগ যতদিন ক্ষমতায় থাকবে ততদিন একদিকে চলবে লুটপাট ও অপরদিকে চলবে গুম, খুন ও হত্যা। এদেশের মানুষ বাঁচল কি মরল এ নিয়ে আওয়ামী লীগের মাথা ব্যথা নেই। আওয়ামী লীগ দেশের মানুষকে সবচেয়ে বেশি ভয় পায় মন্তব্য করে খালেদা জিয়া বলেন, আর ভয় পায় বলেই আমাদের জনসভা করতে দেয় না। আর এবার জনসভা করার অনুমতি দিয়েও জনগণকে আসতে পদে পদে বাধা দেয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, আসুন একই দিনে আপনারাও একটি জনসভা করবেন আমরাও একটি জনসভা করব। দেখেন কার জনসভায় বেশি লোক হয়। তাতেই প্রমাণ হবে জনগণ কাদের সঙ্গে আছে। তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে প্রতিহিংসার রাজনীতি করবে না। তবে ক্ষমতায় গেলে শুদ্ধি অভিযানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে শুদ্ধ করব। সরকার যা চায় নির্বাচন কমিশন তাই করতে চায় অভিযোগ করে খালেদা জিয়া বলেন, নির্বাচনে ইভিএম বন্ধ করতে হবে। আর সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সেনাবহিনী মোতায়েন করতে হবে আর তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিতে হবে। তা না হলে আওয়ামী লীগের গুন্ডাবাহিনী ভোটারদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে জোর করে ভোট নিয়ে নেবে। এ সরকার প্রতি পদে মানুষের ওপর অত্যাচার নির্যাতন চালাচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এভাবে অত্যাচার নির্যাতন চলতে পারে না। তাই জনগণের ঐক্য সৃষ্টি করে দেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ সরকারকে সুষ্ঠু নির্বাচনে ভোটের মাধ্যমে বিদায় জানাতে হবে। খালেদা জিয়া বলেন, এ সরকার বলেছিল ক্ষমতায় এসে ১০ টাকা কেজি দরে চাল খাওয়াবে। কিন্তু আজ মানুষ ৭০ টাকা কেজি দরে চাল খাচ্ছে। এভাবে ৭০ টাকার নিচে কোন জিনিসের দাম নেই। প্রতিটি জিনিসের দামই মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। আর তারা বলেছিল কৃষককে বিনামূল্যে সার দেবে। কিন্তু সারের মূল্য এখন ৫ গুণ বেড়েছে। তারপরও কৃষক ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা দেয়ার পাশাপাশি তাদের কাছ থেকে উৎপাদন মূল্যেও বেশি দিয়ে পণ্য ক্রয় করা হবে। বিএনপি সংঘর্ষের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না মন্তব্য করে খালেদা জিয়া বলেন, আওয়ামী লীগ সংঘর্ষ বাধিয়ে বিএনপির জনসভা প- করতে চেয়েছিল। আর এ জন্যই আমাদের জনসভায় আসতে নেতাকর্মীদের পথে পথে বাধা দিয়েছে। এমনকি গুলশানের বাসা থেকে বের হওয়ার পর রাস্তায় খালি বাস দাঁড় করিয়ে যানজট সৃষ্টি করেছে যাতে আমি জনসভায় আসতে না পারি। তিনি বলেন, দেশ এখন অচল হয়ে গেছে, দেশে কোন কিছুই চলছে না। রোহিঙ্গা সমস্যা কেবল সরকারেরই নয়, এটা জাতীয় সমস্যা বলে মন্তব্য করে খালেদা জিয়া বলেন, এ সমস্যার সমাধানে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। বিশেষ করে চীন, রাশিয়া ও ভারতকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে। এ জন্য সরকারকে কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়াতে হবে। জিয়াউর রহমানের আমলে এবং আমার আমলেও এ সমস্যা কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে সমাধান করে আমরা রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠিয়ে ছিলাম। জনসভায় দেয়া বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে খালেদা জিয়া নিজের ছেলেদের প্রসঙ্গ তুলে ধরে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, আপনাদের কী মনে পড়ে ফখরুদ্দীন-মঈন উদ্দীনের সময়ে কত অত্যাচার আমাদের সহ্য করতে হয়েছে। সেই তত্ত্বাবধায়ক আমলে আমি ১ বছর ৮ দিন জেল খেটেছি। তারা বলেছিল সপরিবারে বিদেশে চলে যেতে আমি যাইনি, এ কারণে, তারা আমার ছেলেদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে। এক ছেলেকে পঙ্গু করে দিয়েছে। আরেক ছেলেকে আমি চিরদিনের জন্য হারিয়ে ফেলেছি। আমি তাদের বলেছিলাম, আমি দেশের বাইরে যাব না। দেশের বাইরে আমার কোন ঠিকানা নাই। এই দেশের মানুষ, এই দেশের জনগণই আমার সবকিছু। আমি তাদের নিয়েই এই দেশের মাটি এবং জনগণকে নিয়ে এই দেশে থাকব। সম্প্রতি লন্ডনে গিয়ে চিকিৎসার সময়ে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয়েছিল বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, আমি চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলাম, তারা অপপ্রচার চালিয়েছে। আমি নাকি দেশে ফিরব না। আমি বললাম, আমার জায়গা হলো বাংলাদেশ, আমার ঠিকানা বাংলাদেশ, এই দেশের মানুষ। কাজেই আমি বাংলাদেশে ফিরে আসব। খালেদা জিয়া বলেন, আওয়ামী লীগের লোকেরা সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভয় দেখাচ্ছে যে, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তাদের ওপর নির্যাতন হবে। তাই সরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উদ্দেশে বলছি আমরা হিংসাত্মক কাজ করি না। আপনাদের কাজ সরকারের আদেশ-নির্দেশ মেনে কাজ করা। তাই আপনাদের প্রতি কোন প্রতিহিংসা হবে না। আমরা যোগ্যতা ও দক্ষতার ভিত্তিতে চাকরি দেব। একই বিবেচনায় পদায়ন ও পদোন্নতি দেব। তাই আপনাদের কোন ভয় নেই। আপনারা নির্ভয়ে নিরপেক্ষ অবস্থানে থেকে আপনাদের দায়িত্ব পালন করুন। খালেদা জিয়া বলেন, আওয়ামী লীগের লোকেরা আরও একটি কথা বলছে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে নাকি দেশে অনেক লোক মারা যাবে। কখনও না, বিএনপি মানুষ মারার রাজনীতি করে না। খালেদা জিয়া বলেন, আওয়ামী লীগ ও জামায়াত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য ১৭৩ দিন হরতাল করেছিল। যানমালের অনেক ক্ষতি তারা করেছে। সম্প্রতি রোহিঙ্গাদের ত্রাণ বিতরণ করতে যাওয়া-আসার পথে ফেনীতে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে সাংবাদিক ও আমাদের নেতাকর্মীদের আহত করেছে। অথচ মিথ্যে মামলা দিয়েছে আমাদের নেতাকর্মীদের নামে। তারা যাত্রী বাসেও আগুন দিয়েছে। আওয়ামী লীগকে বলব অনেক দিন জোর করে ক্ষমতায় ছিলেন। এখন একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন দিন। জনপ্রিয়তা প্রমাণ করুন। তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন নয়। কারণ এ নির্বাচনে ১৫৪ জন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত। আওয়ামী লীগের লোকেরাও ভোট দিতে যায়নি। এ জন্যই মাত্র ৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। তাই এ সরকার ও সংসদ অবৈধ। বিএনপির অনেক নেতাকর্মী জেলে রয়েছে জানিয়ে তিনি অবিলম্বে তাদের মুক্তি দাবি করেন। বিকেল ৪টা ১০ মিনিট থেকে শুরু করে ১ ঘণ্টা ২ মিনিটব্যাপী বক্তব্যে খালেদা জিয়া বর্তমান সরকারের অনিয়ম-দুর্নীতি, বিএনপি আমলের উন্নয়ন, ভিশন ২০৩০ অনুসারে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কি করবে, বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি, লুটপাট ও সরকারী দলের অত্যাচার-নির্যাতনসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, জনগণকে নিয়েই আমরা রাজনীতি করি। জনগণই আমাদের ভালবাসা। তাই আমরা জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে চাই। তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার উন্নয়নের নামে লুটপাট করছে। ইউরোপ ও আমেরিকায় ব্রিজ নির্মাণ করতে যে খরচ এদেশে তারচেয়েও বেশি খরচ হচ্ছে। আর বিদ্যুত উৎপাদনের নামে কুইকরেন্টালের নামে দুর্নীতি হচ্ছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে জনসভায় আরও বক্তব্য রাখেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, এ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, এ্যাডভোকেট জয়নাল আবদিন, শওকত মাহমুদ, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, খায়রুল কবির খোকন, হারুন অর রশিদ, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব-উন নবী খান সোহেল ও স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি সফিউল বারী বাবু। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে লাখ লোকের সমাগম হলেও সভায় আসতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ॥ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভাকে কেন্দ্র করে বড় ধরনের শোডাউন করেছে বিএনপি। দীর্ঘদিন পর জনসভা করার সুযোগ পেয়ে বিএনপির সর্বস্তরের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও আশপাশের এলাকায় গিয়ে জড়ো হয়। তবে জনসভাস্থালে প্রায় এক লাখ লোক জড়ো হওয়ার পরও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াসহ দলের নেতারা অভিযোগ করেছেন দলীয় নেতাকর্মীদের নাকি জনসভায় আসতে বাধা দেয়া হয়েছে। বিএনপির জনসভাকে ঘিরে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যায়। আর এ জনসভা সফল হওয়ায় দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হয়েছেন। অনেক দিন পর বড় ধরনের একটি জনসভা করার মধ্য দিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলটির সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের মধ্যে চাঙ্গা ভাব ফিরে এসেছে বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করছে। এদিকে জনসভায় আসার পথে কোন স্লোগান দেয়া যাবে না পুলিশের পক্ষ থেকে এমন নিষেধাজ্ঞা থাকলেও বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেক নেতাকর্মীকে স্লোগানসহ বিভিন্ন ব্যানার, পোস্টার ও প্লাকার্ড বহন করে জনসভাস্থলে আসতে দেখা গেছে। বিকেল ৩টায় খালেদা জিয়া জনসভাস্থলে আসার আগেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ভরে মৎস্য ভবন থেকে শুরু করে রমনা পার্কের টেনিস কোর্টের কাছাকাছি পর্যন্ত রাস্তায় লোকজন জড়ো হয়। তবে খালেদা জিয়া জনসভাস্থলে আসার পর আস্তে আস্তে লোকজন নিজ নিজ গন্তব্যে চলে যেতে থাকে। বিএনপির জনসভাকে কেন্দ্র করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আশপাশের এলাকাসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে আসে। বিশেষ করে সারাদিন কাজ শেষে ঘরমুখো মানুষকে অনেক কষ্ট স্বীকার করতে হয়েছে। ৭ নবেম্বর ‘বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে এই জনসভা ডাকা হলেও এতে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি গুরুত্ব পায়। মঞ্চের পেছনে লাগানো ব্যানারে লেখা ছিল- ‘৭ নবেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে জনসভা। মঞ্চের চারপাশে বসানো হয় সিসি টিভি ক্যামেরা। এ ছাড়াও জনসভাস্থলে র‌্যাব-পুলিশের কঠোর প্রহরা লক্ষ্য করা যায়। এর বাইরে পুরো জনসভা সুশৃঙ্খল রাখতে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের দুই হাজারের বেশি নেতাকর্মী নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক টিম গঠন করা হয়। জনসভা ঘিরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আশপাশের এলাকা সাজানো ছিল নানা রঙের ব্যানার-ফেস্টুনে। আর বিভিন্ন ডিজিটাল ব্যানারে ছিল জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি। জনসভা শেষে নিজ নিজ গন্তব্যে ফিরে যাওয়ার সময় বিএনপি নেতাকর্মীদের বেশ হাসি-খুশি মনে হয়েছে। জনসভায় সংঘাত-সংঘর্ষের মতো ঘটনা ঘটতে পারে এমন আশঙ্কা থাকার পরও শেষ পর্যন্ত এত বড় একটি অনুষ্ঠান শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হওয়ায় দলটির নেতাকর্মীদের স্বস্তি প্রকাশ করতে দেখা গেছে।
×