ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

দিনাজপুরে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যু

প্রকাশিত: ০২:২৫, ১২ নভেম্বর ২০১৭

দিনাজপুরে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যু

স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর ॥ দিনাজপুর উপশহর এলাকার জামিয়া আরাবিয়া হাফিজিয়া ক্বারিয়ানা মাদ্রাসার এক শিক্ষার্থী’র রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। মাদ্রাসার সভাপতি আনিসুর রহমান চৌধুরী জানান, রবিবার সকাল সাড়ে ৯টায় দিনাজপুর উপশহর জামিয়া আরাবিয়া হাফিজিয়া ক্বারিয়ানা মাদ্রাসার ১৪ বছর বয়সের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ তাকে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করার আধা ঘন্টা পর সে মারা যায়। নিহত মেহেদী হাসান দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার নোখাপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের পুত্র। সে দিনাজপুর উপশহর (মহাজনপাড়ার) জামিয়া আরাবিয়া হাফিজিয়া ক্বারিয়ানা মাদ্রাসা লিল্লাহ বোডিং ও এতিম খানার কিতাব বিভাগের প্রথম শ্রেণীর ছাত্র। মাদ্রাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ৪ বছর ধরে মেহেদী হাসান উক্ত মাদ্রাসায় আবাসিক ছাত্র হিসেবে পড়াশোনা করতো। ২ নবেম্বর মাদ্রাসা ছুটি হলে সে তার গ্রামের বাড়িতে যায়। শনিবার বিকালে অসুস্থ অবস্থায় সে বাড়ি থেকে মাদ্রাসায় ফিরে আসে। রবিবার সকাল সাড়ে ৮ টায় মেহেদীর বমি শুরু হলে মাদ্রাসার তার খালু মাদ্রাসার অফিস সহকারী মনতাজ আলী তাকে সাড়ে ৯টায় দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে ১০ মিনিট চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় মেহেদী হাসানের মৃত্যু হয়। মাদ্রাসার শিক্ষক মাসুম বিল্লা জানান, মেহেদী হাসান ইদুর মারার বিষ খেয়ে সে আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু ওই শিক্ষার্থীর মা বলছে, আত্মহত্যার কোন কারণই নেই। একই রুমে থাকা মাদ্রাসার ছাত্র আল আমীন জানান, সকালে খারাপ লাগছে জানিয়ে মেহেদী তাকে বিছানা ঠিক করে দিতে বলে। পড়ে সে বিছানায় মাথা পর্যন্ত ঢাকা নিয়ে শুয়ে পড়ে। সকাল সাড়ে ৮ টায় বিছানা থেকে উঠে বমি করতে থাকে। মেহেদীর খালু ও মাদ্রাসার অফিস সহকারী মনতাজ আলী জানান, মেহেদী হাসান তার আপন শ্যালিকার ছেলে। ২ নবেম্বর মাদ্রাসায় ছুটি থাকায় সে বাড়িতে গিয়েছিল। সেখান থেকে ফিরে আসার পরে সে অসুস্থ্য ছিল। মারা যাওয়ার আগে মেহেদী হাসান বলেছে যে সে ইদুর মারার বিষ খেয়েছে। মেহেদী হাসান দীর্ঘদিন যাবৎ অসুখে ভুগছিল। হয়তো সেই যন্ত্রনা থেকে মুক্তি পেতেই বিষখেয়ে আত্মহত্যা করেছে। তবে ওই শিক্ষার্থীর মা ফরেসা বেগম জানান, তার ছেলে আত্মহত্যা করতেই পারে না। কারও প্রতি কোন বিষয়ে অভিযোগ না থাকলেও তিনি বলেন, এমন কোন ঘটনা নেই, যার জন্য ছেলে বিষ খাবে। তার যে অসুখ ছিল তা সামান্য। এরজন্য সে বিষ খেতে পারে না। দিনাজপুর কোতয়ালী থানার ওসি রেদওয়ানুর রহিম জানান, মৃত্যুর ঘটনাটি ময়না তদন্তের পর প্রকৃত রহস্য উন্মোচন করা হবে। রবিবার বিকালে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মেহেদীর ময়না তদন্ত শেষে লাশ স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে এখনও পরিবার কিংবা মাদ্রাসার পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। এ ব্যাপারে কোতয়ালী থানায় ইউডি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
×