ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিএনপি’র আন্দোলনের মরা গাঙ্গে এখন আর জোয়ার আসে না ॥ সেতুমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৩:১৬, ১১ নভেম্বর ২০১৭

বিএনপি’র আন্দোলনের মরা গাঙ্গে এখন আর জোয়ার আসে না ॥ সেতুমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর ॥ বিএনপি’র আন্দোলনের মরা গাঙ্গে এখন আর জোয়ার আসে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সেতুমন্ত্রী বলেন, চিহ্নিত কোন সন্ত্রাসী আওয়ামীলীগের সদস্য হতে পারবে না, চিহ্নিত কোন চাঁদাবাজ আওয়ামীলীগের কোন সদস্য হতে পারবে না, চিহ্নিত কোন সাম্প্রাদায়িক অপশক্তি আওয়ামীলীগের সদস্য হতে পারবে না। বিএনপি’র নেতা কর্মীরা বলছেন প্রধান বিচারপতি পদত্যাগের বিষয়ে সরকারের হাত রয়েছে। বিষয়টি ভিত্তিহীন। কারণ, প্রধান বিচারপতি সিঙ্গাপুর থেকে তার পদত্যাগ পত্র পাঠিয়েছেন। সেখানে বাংলাদেশ সরকারের পুলিশ বাহিনী বা কোন স্পেশাল ফোর্স নেই যারা তাকে পদত্যাগের জন্য চাপ প্রয়োগ করবেন। তিনি সেচ্ছায় পদত্যাগ পত্র পাঠিয়েছেন। কারণ আপীল বিভাগের ৫ জন বিচারপতি রাষ্ট্রপতি কাছে গিয়ে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে কাজ করবেন না বলে জানিয়েছেন। বিষয়টি তিনি বুঝতে পেরেই পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন। তিনি বলেন, বিএনপি’র রাজনীতি অন্ধকারের রাজনীতি। তারা ক্ষমতায় এলে দেশে আবারো লুটপাট, আগুন সন্ত্রাসী, জঙ্গীবাদের উত্থান হবে। দেশের মানুষ অন্ধকারে ফিরে যেতে চায় না। তারা আবারো আওয়ামীলীগকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। তাই আগামী সংসদ নির্বাচনের ফাইনালে খেলে আমরা বিএনপি’কে পরাজিত করবো ইনশাআল্লাহ। শনিবার বিকেলে মন্ত্রী গাজীপুরের ভাওয়াল বদরে আলম সরকারী কলেজ মাঠে গাজীপুর মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রম-এর উদ্বোধন উপলক্ষে এক বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে দেশে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। এসরকারের আমলে ভিজিডি ছাড়াও মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা, বয়ষ্ক ভাতা, প্রতিবন্ধি ভাতা দেয়া হচ্ছে। ঘরে ঘরে বিদ্যুত দেয়া হচ্ছে। দেশের ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে আজ ১৩ কোটি মানুষ মোবাইল ব্যবহার করছে। প্রায় সাড়ে ৬ কোটি মানুষের ঘরে ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে। এসবই সম্ভব হয়েছে প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার সঠিক নেতৃত্বের কারনে। অথচ বিএনপি এখন ক্ষমতায় থাকলে হতো লুটপাট, সন্ত্রাসী ও নাশকতার কর্যকলাপ। বিদ্যুতের পরিবর্তে মানুষ শুধু হাওয়া ভবনের খাম্বা দেখতে পেত। তাই দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যহত রাখতে আগামী নির্বাচনেও আওয়ামীলীগকে বিজয়ী করতে হবে। তিনি বলেন, বিএনপি’র আন্দোলনের মরা গাঙ্গে এখন আর জোয়ার আসে না। তাদের আন্দোলন এখন দূরাশায় পরিনত হয়েছে। বিএনপি এখন বাংলাদেশ নালিশী পার্টিতে পরিনত হয়েছে। গত সাড়ে ৮ বছরের মধ্যে তারা সাড়ে ৮ মিনিটের জন্যও মাঠে নামে নি। বিএনপি’র নেতারা আন্দোলনের ডাক দিয়ে এসি কক্ষে বসে হিন্দি সিনেমা দেখেন আর মোবাইল ফোনে খোঁজ খবর নেন। আর ঘরে বসে কয়েকজন প্যাথলোজিক্যাল লায়ার মিথ্যাচারের ভাঙ্গা রেকর্ড বাজান। আন্দোলনের ডাক দিয়ে ম্যাডাম খালেদা জিয়াও রমজানের ঈদের পর লন্ডনের টেমস নদীর পাড়ে চলে গেছেন। তিনি দুইমাসের কথা বলে সাড়ে তিন মাসেও দেশে ফিরেন নি। এটাই হচ্ছে এখন বিএনপি’র রাজনীতি। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে ও মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় জনসভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিষ্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সিমিন হোসেন রিমি এমপি, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি এমপি, মোঃ জাহিদ আহসান রাসেল এমপি, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজ, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা এসএম মোকছেদ আলম, কাজী ইলিয়াস, কাজী আলিম উদ্দিন বুদ্দিন, অ্যাডভোকেট ওয়াজ উদ্দিন মিয়া, জেলা যুবলীগ আহবায়ক এসএম আলতাব হোসেন, মহানগর যুবলীগের আহবায়ক কামরুল আহসান সরকার রাসেল, যুবলীগ নেতা সেলিম আজাদ, মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম দীপ প্রমুখ। তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদারতাকে কেউ দুর্বলতা হিসেবে নিবেন না। তিনি যা ওয়াদা করেন, তা রক্ষা করেন। শেখ হাসিনা আজ জনগণের বিশ্বাসের ঠিকানা, তিনি যা ওয়াদা করেন তার সবগুলো রক্ষা করেন। শেখ হাসিনা সার্টিফিকেট ও সকল কাগজপত্রে পিতার নামের সাথে মায়ের নাম লেখার নিয়ম করেছেন। নারীরা এখন সচিব, এয়ারফোর্সের পাইলট, সেনাবাহিনীতে মেজর জেনারেল হচ্ছেন। নারীদের উপেক্ষা করে আমরা এগিয়ে যেতে পারবো না। উন্নয়নের চাকা সচল রাখতে হলে নারীদের গুরুত্ব দিতে হবে। তিনি জনগণের উদ্দেশে বলেন নৌকায় ভাসিয়া ভোট দিবেন হাসিয়া। পরে মন্ত্রী অনুষ্ঠান মঞ্চে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক, মেহের আফরোজ চুমকি এমপি, সিমিন হোসেন রিমি এমপি, জাহিদ আহসান রালে এমপি, ইকবাল হোসেন সবুজ, জাহাঙ্গীর আলমসহ স্থানীয় নেতাকর্মীদের আওয়ামীলীগের সদস্যপদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
×