ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ঠাকুরগাঁওয়ে কিশোর হত্যার নেপথ্যে পরকীয়ার ভিডিও ধারণ

প্রকাশিত: ০০:৪৫, ১১ নভেম্বর ২০১৭

ঠাকুরগাঁওয়ে কিশোর হত্যার নেপথ্যে পরকীয়ার ভিডিও ধারণ

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও ॥ সদর উপজেলার আকচা নিববাড়ি মুন্সিপাড়া এলাকায় কিশোর অন্তর (১৮) হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ এবং হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকা সন্দেহে তিন জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে বলে সদর থানা সূত্রে জানা গেছে। শনিবার ভোর রাতে পুলিশ সুপার ফারহাত আহমেদ বিশেষ টেকনোলজি ব্যবহার করে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের আটকের বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন। আটককৃতরা হলো শহরের গোয়ালপাড়া এলাকার ভূমি অফিসে কর্মরত রফিক, হত্যাকান্ডের শিকার অন্তরের খালা লুৎফা ও অন্তরের বন্ধু শাহীন। পুলিশ জানায়, হত্যাকান্ডের শিকার অন্তরের (১৮) খালা লুৎফার সাথে ঠাকুরগাঁও সদর ভূমি অফিসের কর্মচারী গোয়ালপাড়া এলাকার রফিকের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। অন্তর এক সময় পরকীয়ার বিষয়টি টের পেলে লুৎফা ও রফিকের অবৈধ সম্পর্কের বিষয়টি মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে। সেই ভিডিও দিয়ে অন্তর ভূমি অফিসের কর্মচারী রফিকের কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে ভিডিও ও মেমোরি কার্ড দিয়ে দেওয়ার শর্তে। টাকার জন্য অন্তর রফিককে প্রায় চাপ সৃষ্টি করে। রফিক বৃহস্পতিবার ৫০ হাজার টাকা দেনা করে অন্তরকে দেওয়ার জন্য রাজি হয়। টাকা প্রদানের আগেই রফিক অন্তরকে হত্যার পরিকল্পনা গ্রহণ করে অন্তরের এক বন্ধু শাহীন সাথে। রফিক অন্তরকে টাকা প্রদানের জন্য মুঠো ফোনে কল দেয় রাতেই। পড়ে শাহীন অন্তরকে ডেকে মুন্সিপাড়ার একটি লিচু বাগানে নিয়ে যায়। অন্তর রফিকের কথা মত লিচু বাগানে দেখা করলে প্রথমে ধারণকৃত ভিডিও ও মেমোরি কার্ড নিয়ে ৫০ হাজার প্রদান করে। উক্ত টাকা পেয়ে অন্তর চলে যেতে চাইলে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী রফিক ও শাহীন তাকে পথরোধ করে গলায় ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করে। এ সময় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে অন্তর। মৃত্যূ নিশ্চিত হলে হত্যাকারী রফিক ও শাহীন ওই ৫০ হাজার টাকা নিয়ে সটকে পড়ে। হত্যাকান্ডের বিষষে এমন তথ্য অনুসন্ধানে বেড়িয়ে এসেছে বলে জানায় পুলিশ। উল্লেখ্য, শুক্রবার সন্ধ্যায় পুলিশ লিচু বাগান থেকে যুবক অন্তরের লাশ উদ্ধার করে। এ সময় পুলিশ সুপার ফারহাত আহমেদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তাৎক্ষনিক হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটনের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেওয়ান লালন আহমেদের নেতৃত্বে একটি বিশেষ টিম কাজ শুরু করে। অবশেষে পুলিশের বিশেষ টেকনোলজি ব্যবহার করে হত্যাকান্ডের মূল রহস্য ও অভিযুক্ত ৩ জনকে রাতে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেওয়ান লালন আহমেদ জানান, গলাকাটা লাশ পাওয়ার পরে পুলিশ সুপারের নির্দেশে আমি, এএসপি সার্কেল হাসিব ও ওসি সদর কে নিয়ে একটি টিম করা হয়। সেই টিম বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই খুনের রহস্য উদ্ঘাটন করি। পুলিশ সুপার ফারহাত আহমেদ হত্যাকান্ডের জড়িতদের আটকের স্বীকার করে বলেন, হত্যার মূল রহস্য পুলিশ তাৎক্ষনিক উদঘাটন করতে পেরে দক্ষতা পরিচয় দিয়েছেন। পুলিশ অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রেখেছেন বলে তিনি উল্লেখ্য করেন। উল্লেখ্য, হত্যাকেন্ডর স্বীকার অন্তর ইসলাম (১৮) সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের মুন্সিপাড়া এলাকার নূর ইসলামের ছেলে। অন্তর দীর্ঘদিন ধরে পিকাপভ্যানের চালক হিসেবে কাজ করতো।
×