ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

রংপুরে দুই কোল্ডস্টোরে আলুতে পচন

প্রকাশিত: ০৬:২৩, ১১ নভেম্বর ২০১৭

রংপুরে দুই কোল্ডস্টোরে আলুতে পচন

নিজস্ব সংবাদদাতা, রংপুর, ১০ নবেম্বর ॥ রংপুরে দুটি কোল্ড স্টোরের প্রায় ৩১ হাজার বস্তা আলুতে পচন ধরায় শতাধিক কৃষক ও ব্যবসায়ী চরম লোকসানে পড়েছেন। একটি ‘রংপুর কোল্ডস্টোর’ ও অপরটি তারাগঞ্জের ‘সিনহা কোল্ডস্টোর’। রংপুর কোল্ডস্টোরের প্রায় ৩০ হাজার বস্তা এবং সিনহা কোল্ডস্টোর ৭শ’ বস্তা আলুতে পচন ধরেছে। কৃষক ও ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, কোল্ড স্টোর দুটিতে দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুত সরবরাহ না থাকায় মজুদকৃত আলু শীতলীকরণ সম্ভব হয়নি। তাই অধিকাংশ আলুতে পচন ধরেছে। লিখিত অভিযোগে জানা যায়, এ বছর রংপুর কোল্ডস্টোরে প্রায় এক লাখ আলুর বস্তা সংরক্ষণ করা হয়েছিল। ইতোমধ্যে প্রায় ৬০ হাজার বস্তা আলু বের করেছে সংরক্ষণকারীরা। অবশিষ্ট ৪০ হাজার বস্তা আলুর মধ্যে ৩০ হাজার বস্তার আলুতে পচন দেখা দিয়েছে ও গাছ বেরিয়েছে। এ বিষয়ে রংপুর কোল্ডস্টোরের ব্যবস্থাপক সালাউদ্দিন বিদ্যুত বিভ্রাটের কথা স্বীকার করে বলেন, যে তার দিয়ে কোল্ডস্টোরে বিদ্যুত সরবরাহ করা হয়েছে তা পুড়ে যাওয়ায় সেখানে কিছুদিন বিদ্যুত ছিল না। এ কারণে কোল্ড স্টোরের আলুতে ঠা-া হাওয়া সরবরাহ করা যায়নি। তবে আলুতে পচন ধরার কথা অস্বীকার করেছেন তিনি। তিনি বলেন, সামান্য কিছু আলুতে পচন দেখা দিয়েছে। আর আলুতে ঠা-া বাতাস সরবরাহ বন্ধ হওয়ায় কিছু আলুতে গাছ গজিয়েছে। তবে সালাউদ্দিনের যুক্তি মানতে রাজি নন আলু সংরক্ষণকারী কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। তারা বলেন, বিল পরিশোধ না করায় রংপুর কোল্ডস্টোরের বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে পল্লী বিদ্যুত সমিতি। দীর্ঘদিন বিদ্যুত সরবরাহ না থাকায় তাদের আলুতে পচন ধরেছে। কোল্ডস্টোরে আলু সংরক্ষণকারী কৃষক আব্দুর রউফ জানান, এমনিতেই বাজারে আলুর দাম নেই। তারপর কোল্ডস্টোরে আলুতে পচন। এ পরিস্থিতিতে তারা দিশাহারা। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আব্দুল আজিজ বলেন, ক্ষতিপূরণ না দিলে তাদের পক্ষে এ বছর আলু চাষ করা সম্ভব হবে না। তাই তিনি সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরকে এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অনুরোধ জানান। তারাগঞ্জের সিনহা কোল্ড স্টোর এক লাখ ১০ হাজার ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন। চলতি বছর এক লাখ সাত হাজার আলুর বস্তা সংরক্ষণ করা হয়েছিল। কিশোরগঞ্জের নিতাই গ্রামের কৃষক তারাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ও কৃষি অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগে জানান, ১শ’ নয় বস্তা আলু রেখেছেন কিন্তু এর মধ্যে ৫০ বস্তা আলু পচে গেছে। এছাড়া আরও কয়েকজন কৃষকের আলু পচে গেছে। সিনহা কোল্ডস্টোরের ব্যবস্থাপক দুলাল হোসেন বলেন, আমাদের ব্যবস্থপনায় কোন ত্রুটি ছিল না। কৃষক নষ্ট আলু রাখায় এমনটা হয়েছে। তবে তিনি বিদ্যুত বিভ্রাটের কারণে এ অবস্থা হয়েছে বলে মনে করেন। তারাগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা আমার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি তদন্ত প্রক্রিয়াধীন।
×