ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেললিঙ্ক পুনঃনির্মাণ শুরু

প্রকাশিত: ০৬:১৬, ১১ নভেম্বর ২০১৭

চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেললিঙ্ক পুনঃনির্মাণ শুরু

তাহমিন হক ববী, চিলাহাটি সীমান্ত থেকে ॥ চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলস্টেশন ঘিরে মানুষজনের মুখে মুখে একটি স্মৃতির কথা উঠে এসেছে। দেশ ভাগের আগে এই পথে ট্রেনে করে কেশব সেন কলকাতা থেকে তার মেয়ে সুনীতিদেবীকে নিয়ে চিলাহাটি হয়ে হলদিবাড়ি স্টেশনে নেমে কোচবিহারে গিয়েছিলেন। সুনীতিদেবীর সঙ্গে কোচবিহারের মহারাজা নৃপেন্দ্রনারায়ণের বিয়ে হয়। সুনীতিদেবীই হন কোচবিহারের মহারানী। এই স্মৃতিকে ঘিরে ফের চিলাহাটি হলদিবাড়ি দুই দেশের মানুষজনের প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে পেতে চলেছে। ভারতের কোচবিহার জেলার হলদিবাড়ি ও বাংলাদেশ উত্তরাঞ্চলের নীলফামারীর চিলাহাটির মধ্যে রেলের ব্রডগেজ ইন্টারচেঞ্জ লিংক চালুর নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় উন্নয়ন সহযোগিতায় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বন্ধ হয়ে যাওয়া পুরনো সীমান্ত রেলওয়ে সংযোগের আওতায় এই পুনর্স্থাপনের কাজ শুরু করা হয়। চিলাহাটি-হলদিবাড়ি ইন্টারচেঞ্জ লিংক চালু হলে বন্ধুপ্রতিম দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় উন্নয়নের দুয়ার খুলে যাবে। এতে লাভবান হবে উভয় দেশ। প্রজন্মের মধ্যে সম্প্রীতির মেলবন্ধন আরও সুদৃঢ় হবে। সেই সঙ্গে বদলে যাবে চিলাহাটি হলদিবাড়ির চেহারা। উভয় দেশের রেলযোগাযোগের ক্ষেত্রে হলদিবাড়ি ও চিলাহাটি রেলস্টেশন পুরোদমে দুটি চালু রয়েছে। চিলাহাটি হতে ঢাকা, খুলনা, রাজশাহী পথে ও অপরদিকে হলদিবাড়ি হতে ভারতের বিভিন্ন রুটেও নিয়মিত ট্রেন চলাচল করছে। শুধু সীমান্ত এলাকা বাংলদেশের চিলাহাটি ও ভারতের হলদিবাড়ির মধ্যে ট্রেন চলাচল থমকে রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এই রেলপথ নির্মাণে তাদের অংশে ৩১ কোটি রুপী বরাদ্দ দিয়েছে। সেই বরাদ্দে ঠিকাদার নিয়োগ করে হলদিবাড়ি অংশের প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার রেলপথের এই কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। এর সঙ্গে রয়েছে হলদিবাড়ি রেলস্টেশনকে একটি আন্তর্জাতিক মানের স্টেশনে পরিণত করার কাজ। এখানে ফুডপ্লাজা, পার্ক সবকিছু নির্মাণ করা হবে। এ জন্য স্টেশন বিল্ডিং, প্ল্যাটফর্ম সবকিছু নতুন করে তৈরি করা হবে। এদিকে বাংলাদেশের চিলাহাটি রেলস্টেশন হতে ভারতের সীমান্ত পর্যন্ত, অংশের প্রায় সাড়ে ৭ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের প্রকল্পে ব্যয়ের প্রাক্কলন ধরা হয়েছে ৭৮ কোটি ১৩ লাখ টাকা। এই বরাদ্দকৃত অর্থে সাড়ে ৭ কিলোমিটার রেলপথ, ব্রিজ, চিলাহাটি রেলস্টেশনকে আন্তর্জাতিক মানের স্টেশনে রূপান্তর করা হবে। ভারতের অংশের কাজ শুরু হওয়ায় অতিদ্রুত বাংলাদেশের অংশের কাজ শুরু করা হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে। সূত্রমতে, উভয় দেশের পক্ষে হলদিবাড়ি-চিলাহাটি ব্রডগেজ ইন্টারচেঞ্জ লিংক রেলপথ নির্মাণের শেষ করার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ২০১৯ সালে। বৃহস্পতিবার চিলাহাটি হতে ভারতের হলদিবাড়ি সীমান্ত এলাকা সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, ভারতের অংশের সে দেশের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পুরনো পরিত্যক্ত হয়ে থাকা রেলপথের ব্রিজগুলো বুলডোজার দিয়ে ভেঙ্গে ফেলছে। এসব ভেঙ্গে ফেলা শেষ হলে পরিত্যক্ত রেলপথের মাটি ফেলে উঁচু করা কাজ শুরু করবে তারা। এরপর ব্রিজ নির্মাণ শেষে রেললাইন পাতা হবে। গত ৫ নবেম্বর হতে ভারতের অংশের কাজ শুরু করা হয়।
×