ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

৭ মার্চের ভাষণ বিশ্ব ঐতিহ্য শিক্ষার্থী ও ভবিষ্যত প্রজন্মকে অবহিত করাই লক্ষ্য

২৫ নবেম্বর আনন্দ শোভাযাত্রা দেশজুড়ে

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ১১ নভেম্বর ২০১৭

২৫ নবেম্বর আনন্দ শোভাযাত্রা দেশজুড়ে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় আগামী ২৫ নবেম্বর দেশব্যাপী আনন্দ শোভাযাত্রা করা হবে। গোটা বাঙালী জাতি এ উৎসবে অংশ নেবেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরীর সভাপতিত্বে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ/ অধিদফতর, গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজের সদস্যরা এ সভায় উপস্থিত ছিলেন। এ বিষয়ে ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী জানান, আমরা মনে করি বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ ‘বিশ্ব ঐতিহ্য’ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া জাতির জন্য তথা এর ইতিহাস ও ঐতিহ্যের জন্য একটি বিরাট অর্জন। বিশ্বের প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে এর অন্তর্ভুক্তির মানে হচ্ছে চিরস্থায়ী বিশ্ব ঐতিহ্যের সঙ্গে এর সম্পৃক্ততা। তিনি বলেন, এই বিরাট অর্জন উদযাপনের লক্ষ্যে আগামী ২৫ নবেম্বর বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের তথা সরকারী ও বেসরকারী সংগঠনের অংশগ্রহণে দেশব্যাপী আনন্দ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে। মুখ্য সচিব বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গুরুত্ব সম্পর্কে জনগণকে, বিশেষত শিক্ষার্থীদের এবং ভবিষ্যত প্রজন্মকে অবহিত করার লক্ষ্যে এই কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, এই উদযাপন শুধু উৎসবেই সীমাবদ্ধ থাকবে না বরং এটা হবে সচেতনতা সৃষ্টির কর্মসূচী; যাতে শিক্ষার্থীরা এবং ভবিষ্যত প্রজন্ম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের কালজয়ী ভাষণ সম্পর্কে সঠিকভাবে জানতে পারে। এই স্বীকৃতিকে বাঙালী জাতি ও বাংলা ভাষার জন্য বিশাল গৌরব হিসেবে উল্লেখ করে কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, সবাইকে, বিশেষত শিক্ষার্থীদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গুরুত্ব সম্পর্কে জানা উচিত। তাদের জানা উচিত ‘মেমোরি অব ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্ট্রার’ কি এবং বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য কি? তিনি আরও বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়গুলো সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের অবহিত করার লক্ষ্যে আমরা প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশেষ ক্লাস নেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হবে উল্লেখ করে মুখ্য সচিব বলেন, জাতির গৌরব এই ভাষণটি প্রদর্শনের জন্য সকল পাবলিক লাইব্রেরীতে ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এটি রাখা হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ পরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের ওপর কুইজ ও সাধারণ জ্ঞান প্রতিযোগিতার মতো বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করবে। মুখ্য সচিব বলেন, ৭ মার্চের ভাষণের তাৎপর্য সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করতে দেশজুড়ে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও কনসার্টের আয়োজন করা হবে। ভাষণটি বিভিন্ন ভাষায় সম্প্রচার করা হবে যাতে বিশ্ববাসী এ সম্পর্কে জানতে পারে। এ কাজে আমরা বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশ মিশনকে উৎসাহিত করব। উল্লেখ্য, গত ৩০ অক্টোবর ইউনাইটেড নেশন এডুকেশন, সায়েন্টিফিক এ্যান্ড কালচারাল অর্গানাইজেশন (ইউনেস্কো) ৭ মার্চে বঙ্গবন্ধুর ভাষণকে (ওয়ার্ল্ড ডকুমেন্টারি হেরিটেজ) বিশ্বে প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে। প্যারিসে ইউনেস্কোর প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক ইরিনা বুকোভা এই ঘোষণা দেন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ বিশ্বের আন্তর্জাতিক রেজিস্ট্রার স্মৃতিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এটি ইউনেস্কো কর্তৃক তৈরি বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ প্রামাণ্য ঐতিহ্যের একটি তালিকা। এটি বিশ্বের বিভিন্ন ঐতিহ্যগত তাৎপর্যপূর্ণ প্রামাণ্য দলিলসমূহের আন্তর্জাতিকভাবে রেজিস্টার্ড একটি তালিকা। আন্তর্জাতিকভাবে রেজিস্টারকৃত এই তালিকা তৈরির উদ্দেশ্য হলো, বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ঐতিহ্যগত প্রামাণ্য দলিলসমূহের সংরক্ষণ ও ব্যবহার নিশ্চিত করা। বর্তমানে মেমোরি অব ওয়ার্ল্ড রেজিস্টারে সব মহাদেশ থেকে ৪২৭টি প্রামাণ্য দলিল ও সংগ্রহ তালিকাভুক্ত রয়েছে।
×