ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রশ্ন ওবায়দুল কাদেরের

কখনও সহায়ক, কখনও তত্ত্বাবধায়ক আসলে বিএনপি কী চায়?

প্রকাশিত: ০৪:৩২, ১১ নভেম্বর ২০১৭

কখনও সহায়ক, কখনও তত্ত্বাবধায়ক আসলে বিএনপি কী চায়?

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণে বিএনপির সঙ্গে সংলাপের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে বলেছেন, কখনও সহায়ক আবার কখনও তত্ত্বাবধায়ক; আসলে বিএনপি কী চায় সেটাই আমরা জানতে চাই। আর বিএনপিকে আহ্বান করলেও তারা নির্বাচনে আসবে, না করলেও আসবে। নির্বাচনে তারা আসবেই। তাদের নেতারাই বলেছেন তারা নির্বাচনে আসবেন। কাজেই এখানে আহ্বানের তো কোন প্রয়োজন নেই। শহীদ নূর হোসেন দিবস উপলক্ষে রাজধানীর জিরো পয়েন্টে নূর হোসেন চত্বরে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, আমরা চাই প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক একটি নির্বাচন হোক। বিএনপি একটা বড় দল। তারা অংশ নিলে নির্বাচনটা প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে। সেজন্য আমরা চাই বিএনপি নির্বাচনে আসুক। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার তো পাগল আর শিশু ছাড়া আর কেউ বোঝে না- এ কথা কি শেখ হাসিনার? এ কথা তো খালেদা জিয়ার। এ দলটি কখনও সহায়ক আবার কখনও তত্ত্বাবধায়ক; আসলে তারা কী চায় সেটাই আমরা জানতে চাই। সংলাপের সম্ভাবনা আছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সংলাপ কেন? দরকার তো নেই। বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দিয়ে তাদের প্রতি সরকার নমনীয় হচ্ছে কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা কোন নমনীয়তার ব্যাপার না। ব্যাপার হচ্ছে, বিএনপি সমাবেশের অনুমতি চেয়েছে। অনুমতি দেয়ার ব্যাপারে কোন বাধা তো কখনও ছিল না। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, অনুমতি নিয়ে এখন পর্যন্ত তাদের এমন একটি জনসভাও হয়নি যেখানে কোন বিশৃঙ্খলা হয়নি। বিএনপির সমাবেশে বিশৃঙ্খলা প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, এ বিশৃঙ্খলাগুলো ভয় পাই বলেই আমরা বিষয়টা নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত ছিলাম। আমরা সব সময় অনুমতি দিতে চাই। তারা একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল, তাদের অবশ্যই সভা-সমাবেশ করার অধিকার রয়েছে। শেখ হাসিনা সরকার কতটা গণতান্ত্রিক এ অনুমতি দিয়ে আবারও তা প্রমাণিত হলো। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির অংশ না নেয়ার বিষয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিএনপি আসেনি বলে গণতন্ত্রের কী দোষ? তারা নির্বাচন বয়কট করল। এরপর ‘গণতন্ত্র নেই’ বলে তারা সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করে। তাদের মনে রাখা উচিত, গণতন্ত্র না থাকলে ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন (আইপিইউ) ও কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি এ্যাসোসিয়েশনের কনফারেন্স (সিপিসি) বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হতো না। বাংলাদেশে আইপিইউ এবং সিপিসি সম্মেলন সফলভাবে অনুষ্ঠিত হওয়ার মধ্য দিয়ে এটিই প্রমাণিত হলো যে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র আছে। আছে বলেই বিশ্বের অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশ বাংলাদেশকেই সম্মেলনের স্থান হিসেবে ঠিক করেছে। শহীদ নূর হোসেনের স্মৃতিচারণ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, নূর হোসেনের রক্ত গণতন্ত্রের বন্ধু। রক্ত দিয়ে, জীবন দিয়ে দেশমাতৃকার ঋণ শোধ করেছেন তিনি। নূর হোসেনের স্বপ্নের গণতন্ত্র মুক্তি পেয়েছে। এখন আমাদের অঙ্গীকার হবে বহু রক্তমূল্যে অর্জিত এ গণতন্ত্রকে আমরা প্রতিষ্ঠানিক রূপ দেব। এটাই আজকের দিনের অঙ্গীকার। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, একেএম এনামুল হক শামীম, দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, কৃষিবিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন নাহার লাইলী, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এসএম কামাল হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
×