ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অধিনায়ক কোহলি চান মাথার ওপর ছায়া

তবু ধোনীকে প্রয়োজন ভারতীয় দলে

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ১০ নভেম্বর ২০১৭

তবু ধোনীকে প্রয়োজন ভারতীয় দলে

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ টেস্ট ক্রিকেট ছেড়েছেন তিন বছর আগেই। আর স্বেচ্ছায় ছেড়ে দিয়েছেন স্বল্প পরিসরের ক্রিকেটে অধিনায়কত্ব। এখন পর্যন্ত ওয়ানডে ও টি২০ খেলা চালিয়ে যাচ্ছেন ভারতের সাবেক অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনী। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসের এই অন্যতম সেরা অধিনায়ককে নিয়ে নানা গুঞ্জন। সেটা তৈরি করেছেন বেশ কয়েকজন সাবেক ক্রিকেটারই। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সদ্য শেষ হওয়া টি২০ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ হারের পর বিশ্লেষণের এক পর্যায়ে ধোনীকে নিয়ে যে সমালোচনা হয়েছে সেটার মূল বার্তাই ছিল ‘ধোনী আর চলে না’ ভারতীয় দলে। কিন্তু বর্তমান অধিনায়ক বিরাট কোহলি বিষয়টি নিয়ে দারুণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তার দাবি এখনও ভারতীয় দলে ধোনীকে প্রয়োজন। কারণ দলের ক্রিকেটারদের ওপর এ অভিজ্ঞ ক্রিকেটার ছায়ার মতো। টানা ক্রিকেটের মধ্যেই আছে ভারতীয় দল। দম ফেলার ফুরসত নেই। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজ শেষ করার পরই নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সিরিজ শেষ করেছে। আর টানা সাফল্যও পাচ্ছে কোহলির দল। যখন দলের সাফল্য আসে সে সময় কোন সমালোচনা না হলেও একটা ম্যাচ হারের সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয়ে যায় দোষারোপ। এবার কিউইদের বিরুদ্ধে যেমন টি২০ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে হারের পর হয়েছে। ক্রিকেটারদের পারফর্মেন্স নিয়ে বিশ্লেষণের এক পর্যায়ে এমনকি ধোনীর মু-ুপাত করতেও ছাড়েননি সমালোচকরা। কোহলির তরুণ দলে একমাত্র ধোনীই এখন সবার চেয়ে বেশি বয়সী। দ্বিতীয় টি২০ ম্যাচে ধোনী স্ট্রাইক রেট বাড়াতে পারেননি এটাই দোষ। অথচ ১৯৭ রান তাড়া করতে নামা ভারতের পক্ষে তিনি ৩৭ বলে ৪৯ রানের ইনিংস খেলেন। এ কারণে কোহলি বলেন, ‘আমি বুঝতে পারি না কেন মানুষ শুধু তার দিকেই আঙ্গুল তোলেন। আমি যদি টানা তিনবার ব্যর্থ হই কখনও কাউকে দেখি না সমালোচনা করতে। কারণ হয়তো একটাই যে আমার বয়স ৩৫-এর বেশি নয়। কিন্তু তিনি (ধোনী) পুরোপুরি ফিট। যতভাবে সম্ভব তিনি দলের হয়ে কোন না কোন অবদান রেখে যাচ্ছেন। কৌশলগত দিক থেকে মাঠে এবং ব্যাট হাতেও। এর আগে শ্রীলঙ্কা সফর এবং অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজে তিনি দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়েছেন। আর এই সিরিজে (নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে) তিনি ব্যাট করার পর্যাপ্ত সময়ই পাননি।’ ধোনীর ব্যাটিং পজিশন নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। সাধারণত ৫/৬ নম্বরেই ব্যাট করে থাকেন তিনি। কারণ দলের বিপর্যয়ে ইনিংস মেরামতের গুরুদায়িত্বটা তার কাঁধেই দেয়া হয়েছে। কিউইদের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টি২০ ম্যাচে তিনি ৬ নম্বরে নামেন যখন ১১ ওভারে ভারতের জিততে প্রয়োজন ছিল ১৩০ রান! ওভারপ্রতি যেখানে প্রায় ১২ রান করে প্রয়োজন ছিল সেই ম্যাচে ধোনীর ইনিংস নিয়ে সমালোচনা করা খুবই অবিবেচকের কাজ বলেই মনে করেন কোহলি। এ বিষয়ে কোহলি বলেন, ‘এমনকি হারদিকও তখন রান করতে পারেননি। সবার বুঝতে হবে যে পরিস্থিতিতে ধোনী ব্যাট করতে নেমেছিলেন তখন রান করা কঠিনই ছিল। তাহলে কেন একজন মানুষের দিকেই বারবার সবাই অভিযোগের আঙ্গুল তুলছেন? এটা সম্পূর্ণই অবিচার। আর ওই সময় উইকেটের পরিস্থিতিও সুবিধার ছিল না যেটা নতুন বলে খেলা শুরুর পর ছিল।’ এবার ভারত সফরে এসেছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দল। তাদের বিরুদ্ধে তিন টেস্টের পর ৩টি করে ওয়ানডে ও টি২০ খেলবে ভারতীয় দল। এ বিষয়ে কোহলি বলেন, ‘মানুষ আমাদের বিষয়ে কখন কি বলছে সেসব নিয়ে আমরা কখনও মাথা ঘামাই না কিংবা উত্তেজিত হয়ে পড়ি না। খেলার সময় আমাদের শুধু মনোযোগী হতে হয় উইকেট কেমন আচরণ করছে এবং পরিস্থিতিটা কেমন সেসব নিয়ে। এসব ক্ষেত্রে আমি বলব তিনি দারুণ ভাল করছেন। খেলাটাকে তিনি খুব ভালভাবে বোঝেন, নিজের দায়িত্ব সম্পর্কেও জানেন। হয়তো সবসময় সেটা কার্যকর হয়ে ওঠে না। দিল্লীতে তিনি একটা ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন এবং সেটা পোস্ট ম্যাচে ৫ বার দেখানো হয়েছিল। এরপর একবার তিনি পারলেন না আর আমরা তার ক্যারিয়ার নিয়ে টানাটানি শুরু করলাম। তিনি এমন ব্যক্তি যে কিনা সব ক্রিকেটারকেও বোঝেন। দারুণ সপ্রতিভ ব্যক্তিত্ব তিনি, তার মতো একজনকে আমাদের সবসময়ই প্রয়োজন। কারণ ভারতীয় দলের ওপর তিনি একটা ছায়ার মতো।’
×