ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ঠাকুরগাঁওয়ে ননদ ভাবীর যাবজ্জীবন

প্রকাশিত: ০১:৫৫, ৯ নভেম্বর ২০১৭

ঠাকুরগাঁওয়ে ননদ ভাবীর যাবজ্জীবন

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও ॥ জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে এক প্রতিবেশিকে ফাঁসাতে নাদিরা বেগম (৫) নামে এক শিশুকে শাসরুদ্ধ করে হত্যার দায়ে বৃহস্পতিবার মাজেদা খাতুন ও তারই ভাবী তহমিনা খাতুন নামে দুই নারীকে যাবজ্জীবন স্বশ্রম কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরো তিন মাসের সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মোঃ হায়দায় আলী। দন্ডিতরা হলো, ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার চাঁদগাও গ্রামের মৃত তারাবুদ্দীনের স্ত্রী মাজেদা খাতুন ও তারই সৎ ভাই ভুবন আলীর স্ত্রী তহমিনা খাতুন। মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, চাঁদগাও গ্রামের জনৈক মহসিন আলীর সঙ্গে প্রতিবেশি মাজেদা খাতুনের মধ্যে পাঁচ শতক জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। উক্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিবেশি মহসিনকে মামলায় ফাঁসাতে মাজেদা খাতুন পরিকল্পনা আঁটে এবং ২০১৪ সালের ১৭ এপ্রিল দুপুরে অপর প্রতিবেশি আব্দুল কুদ্দুসের পাঁচ বছর বয়সের শিশু কন্যা নাদিরা বেগমকে তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায় এবং মাজেদা ও তার সৎ ভাইয়ের স্ত্রী তহমিনা শিশুটির গলায় শাড়ির আঁচল পেচিয়ে শাসরুদ্ধ করে হত্যা করে। পরে শিশুটির লাশ বাড়ির অনতিদূরে জনৈক দুলালের ভুট্রাক্ষেতে ফেলে রাখে। পরে হত্যাকারী মাজেদা প্রত্যক্ষদর্শী স্বাক্ষী হিসেবে দাবি করে শিশুটিকে মহসিন নামে এক ব্যক্তি ধর্ষন করে হত্যা করেছে বলে প্রচারণা চালায়। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা বাদী হয়ে পীরগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে একটি মামলা দায়ের করে। ঘটনার পরদিন প্রকৃত ঘটনা ফাঁস হয়ে গেলে পুলিশ প্রকৃত আসামী মাজেদা খাতুনকে গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদে মাজেদা ঘটনা স্বীকার করে বিজ্ঞ ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেয়। পরে পুলিশ তহমিনা খাতুনকেও গ্রেফতার করে। তদন্তশেষে পীরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক ওয়াহেদ আলী দ:বি; ৩০২/২০১/৩৪ ধারায় আসামী মাজেদা ও তহমিনার বিরুদ্ধে আদালতে চার্জসিট দাখিল করেন এবং অপর আসামী মহসিন আলীকে চার্জসিট থেকে অব্যাহতি দেয়। পুলিশের চার্জসিট, ময়না তদন্ত রিপোর্ট, আসামীদের জবানবন্দী এবং স্বাক্ষীদের সাক্ষ্যে অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় আদালত ননদ মাজেদা ও ভাবি তহমিনাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করেন।
×