ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সব্যসাচী দাশ

পিয়ার দিন রাত্রি

প্রকাশিত: ০৭:১৭, ৯ নভেম্বর ২০১৭

পিয়ার দিন রাত্রি

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তিনি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে বিল বোর্ডের স্ক্রিনে উড়ছেন! সঙ্গে জাতীয় ক্রিকেট দলের দুরন্ত পেসার তাসিক আহমেদ। মহাপতঙ্গের মতো তার এই উড়ে চলার স্থিরচিত্র দেশের অসংখ্য জুতার ব্র্যান্ড আউটলেট এপেক্সের সামনে শোভা পাচ্ছে। টিভির ছোট স্ক্রিনেও তার অসামান্য সন্দৌর্যের সৌরভ সমানে ছড়িয়ে পড়ছে। জান্নাতুল ফেরদৌস পিয়া। এই নামের সঙ্গে অনেক বিশেষণ অনেক আগেই অলঙ্কৃত হয়েছে। আসলে সৌভাগ্য যখন কারও সঙ্গে আলিঙ্গন করে তখন, নতুন নতুন সোনালি পালক তার নামের যোগ হতে থাকে। এমনটাই নিত্য ঘটছে পিয়ার সঙ্গে! পিয়া এখন জন্মস্থান খুলনা ও জীবনযাপনের শহর ঢাকা ছেড়ে সবুজের নগরী সিলেটের অস্থায়ী বাসিন্দা। সিলেট এখন উৎসবের নগরী। শহরের প্রান্তে প্রান্তে চলছে ক্রিকেট খেলার উন্মাদনা। সকলের এই উন্মাদনা আরও এক ধাপ বাড়াতে, ক্রিকেট খেলা এবং অসংখ্যা ক্রিকেটপ্রেমীর সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন দেশ-বিদেশ বরেণ্য এই মডেল-অভিনেত্রী। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) এর পঞ্চম আসরে সরাসরি মাঠে উপস্থাপন করছেন হালের এই ব্যস্ত মানুষটি। কিভাবে করছেন? কেমন পারছেন? কেমন লাগছে? এমন একাধিক প্রশ্নের উত্তর জানতে ঢাকা থেকে টেলিফোনে তার সঙ্গে কথা। জানতে চাওয়া সকল প্রশ্নের উত্তর পিয়া তার সভাব-সুলভ চরিত্রে সোজাসুজি দিয়েছেন। সকাল থেকে তাকে ফোনে পাচ্ছি না, আবার ফোনও বন্ধ না। বুঝলাম তিনি যেখানে আছেন সেখানে নেটওয়ার্ক দুর্বল। মুঠোফোনে ছোট বার্তা দিয়ে রেখেছিলাম। দুপুরের দিকে ফোন ব্যাক। কেমন আছেন? বেশ ভাল। সকাল থেকে আপনাকে ফোনে পাচ্ছি না। পিয়া, আর বোলবেন না এখন যেখানে আছি সেখানে মোবাইল নেটওয়ার্ক খুবই দুর্বল। এখন একটু নোটওয়ার্কের মধ্যে এসেছি। আজ আপনাদের ডে অফ। কি করছেন সারাদিন? সকাল থেকেই সিলেটের অপূর্ব নৈঃস্বর্গিক দৃশ্য ক্যামেরায় ধারণ করছি। কেমন লাগছে সিলেট আর ক্রিকেট? ভীষণ ভীষণ সুন্দর! যদিও সিলেট এর আগেও এসেছি। তারপরও পাহাড় আর সাগড় আমার কাছে সুন্দৌর্যের নতুন নতুন দ্বার খুলে দেয়। ক্রিকেট বা বিপিএল এ কিভাবে? দেশের অগণিত মানুষের মতো আমিও ক্রিকেটের ভীষণ অনুরাগী। আর সবার মতো আমারও খুব আবেগ কাজ করে। বিশেষ করে, যখন এই খেলা দেখি এবং আলোচনা করি। যখন আমার কাছে এবারের টুর্নামেন্টের মাঠের হোস্ট হবার প্রস্তাব এলো তখন আমার ভেতর দুটা বিষয় কাজ করেছে এক- প্রথমত এটা ক্রিকেট কারণ আমারা বাংলাদেশীরা সবাই ভীষণ ক্রিকেটপ্রেমী এবং সবাই বেশ ভালভাবেই এই খেলা বুঝি! এখানে ভাল করলে সে ভালর অন্ত থাকবে না। দ্বিতীয়ত- কোন রকম ভুল হলে মূলটাও আমাকে দিতে হবে! কেমন লাগছিল প্রথমদিন? প্রথমদিন খেলা শুরুর আগে একটু অন্যরকম লাগছিল পরে আমার মতো করেই মানিয়ে নিয়েছিলাম বাকিটা দর্শক ভাল বলতে পারবেন। ক্রিকেটের এতবড় আসরে যোগ দেবার আগে নিশ্চয়ই একটা তাত্ত্বিক প্রস্তুতি দরকার হয়েছে? সে তো অবশ্য! ক্রিকেট বিষয়ক লেখাপড়া তো করতেই হযেছে। আবেগ দিয়ে বিচ্ছিন্ন অনেক কিছুই বলা যায় কিন্তু গুছিয়ে? তার জন্য নিশ্চয়ই শুদ্ধ জ্ঞান থাকতে হয়। শ্রুতিমুধুর বাংলা বলতে কোন অসুবিধা? না একেবারেই না! আমি তো এর আগে অনেক প্রোগ্রামে বাংলায় উপস্থাপন করেছি। এ ক’দিনের অভিজ্ঞতা বলেন? অভিজ্ঞতা ভীষণভাবে ভাল। দর্শকদের সঙ্গে আমিও উত্তেজনা নিয়ে খেলা দেখছি। মাঠের দর্শকদের উচ্ছ্বাস ও অনুভূতি দেশের সব দর্শকদের মধ্যে পৌঁছে দিচ্ছি, ভীষণভাবে এনজয় করছি। সাপোর্ট করছেন কোন দলের? আমার বাড়ি খুলনায় বাস করি ঢাকায়। যে কারণে ঢাকা-খুলনা দুটোই আমার পছন্দের টিম। এছাড়া বাকি টিমগুলোও আমার পছন্দের। বিপিএল শেষ করে কী করবেন? একটা বড় প্রোগামে কাজ করার কথা চলছে এখনও কথা পাকা হয়নি। যে কারণে এর বাইরে তথ্য দিতে পারছি না। আসলে কোনকিছু নিশ্চিত না হলে বলা ঠিক হবে না। আমার কাছে প্রায়শই একাধিক কাজ একসঙ্গে আসে। এরই মধ্যে যাদের সঙ্গে কথা এবং কাজে মিলে যায় তাদের সঙ্গেই কাজ করা হয়ে ওঠে। জান্নাতুল ফেরদৌস পিয়া একান্ত ব্যক্তিগত জীবনে যতখানি সুলক্ষণা, দায়িত্ববান তেমনি, পেশাগত জীবনেও সে লেখাপড়া হক আর অন্য দিক হোক পিয়া প্রচ- প্রত্যয়ী! পিয়া এখন নিজের বাড়ি এবং বসবাসের শহর ছেড়ে ক্রিকেটের সঙ্গে দিন যাপন করছেন সেই সুদূর শ্রীহট্ট সিলেট নগরীতে। হেমন্তের গাঢ় কুয়াশার সঙ্গে প্রকৃতির নব সাজের প্রস্তুতি এরই সঙ্গে আশা-ভালবাসার ক্রিকেট, সবমিলিয়ে ওই নগরীকে করেছে এখন তুলনাহীনা সঙ্গে পিয়ার লাস্যময়ী আচরণ!
×