ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

কামরাঙ্গীরচরে গৃহবধুকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ

প্রকাশিত: ০২:৫১, ৮ নভেম্বর ২০১৭

কামরাঙ্গীরচরে গৃহবধুকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকার কামরাঙ্গীরচরে এক স্বামীর বিরুদ্ধে তার স্ত্রীকে কেরোসিন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ ওঠেছে। দগ্ধ গৃহবধূ লিপি আক্তার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন। গৃহবধূর শরীরের ৪০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে কামরাঙ্গীরচরের আলীনগর ৩ নম্বর গলিতে ঘটনাটি ঘটে। দগ্ধ গৃহবধূর স্বজনরা বলছিলেন, রাত তিনটার দিকে লিপির স্বামী জাহাঙ্গীর হোসেন ও দেবর রনি দগ্ধ অবস্থায় লিপিকে (২৫) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে ভর্তি করেন। লিপির মা হাজেরা বেগমের অভিযোগ, যৌতুকের জন্য জাহাঙ্গীর প্রায়ই লিপিকে মারধর করতো। কিছুদিন আগে জাহাঙ্গীরকে ৫৫ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে। এরপর জাহাঙ্গীর আবারও চাইছে। টাকা নিয়ে সে জুয়া খেলে। জুয়ায় হেরে এসে সে মেয়েকে টাকার জন্য চাপ দেয়। জাহাঙ্গীর টাকার জন্য লিপিকে চাপ দিচ্ছিল। এ নিয়ে অশান্তির এক পর্যায়ে জাহাঙ্গীর লিপির গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন লিপির স্বামী ফল ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর। তার দাবি, কোনো কারণ ছাড়াই লিপি রান্না ঘরে গিয়ে নিজের গায়ে নিজেই কেরোসিন ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পোড়া গন্ধ পেয়ে দ্রুত রান্না ঘরে গিয়ে লিপির গায়ে আগুন জ্বলতে দেখি। আগুন নিভিয়ে দ্রুত তাকে হাসপাতালে ভর্তি করি। বার্ন ইউনিটের চিকিৎসকরা জানান, লিপির অবস্থা আশঙ্কাজনক। লিপির স্বামী ও দেবরকেও চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। লিপির স্বামী জাহাঙ্গীরের বাম হাত পুড়ে গেছে। লিপির দেবরও দগ্ধ হন। কামরাঙ্গীরচর থানার ওসি শাহীন ফকির জনকণ্ঠকে বলেন, এ ব্যাপারে লিপির মা হাজেরা বেগম বাদি হয়ে তিন জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় লিপি ও দেবর ছাড়াও আরও একজন আসামী রয়েছে। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। লিপির স্বামী ও দেবর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েই কৌশলে পালিয়ে গেছে। লিপির অবস্থা আশঙ্কাজনক। তিনি আরও জানান, লিপির স্বামী জুয়া খেলে। দুই দিন আগে লিপির বাড়ি থেকে আট হাজার টাকা নিয়ে আসে জাহাঙ্গীর। সেই টাকা কোথায় খরচ করেছে তা স্বামীর কাছে মঙ্গলবার রাতে জানতে চায় লিপি। এ নিয়ে কথাবার্তার এক পর্যায়ে জাহাঙ্গীর তার স্ত্রীকে বেধড়ক মারধর করে। এরপর তাকে পুড়িয়ে হত্যা করবে বলে হুমকি দেয়। যা আশপাশের মানুষজন শুনেছেন। এর খানিক পরেই লিপির চিৎকারে সেখানে লিপির স্বামী, দেবর ও প্রতিবেশীরা জড়ো হন। পরে উদ্ধার করে লিপিকে হাসপাতালে ভর্তি করে। আসামীদের গ্রেফতারের পর পুরো রহস্য জানা যাবে।
×