ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

ভোলায় টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় বিকাশকর্মীকে গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০০:৪২, ৭ নভেম্বর ২০১৭

ভোলায় টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় বিকাশকর্মীকে গ্রেফতার

নিজস্ব সংবাদদাতা, ভোলা ॥ ভোলার চরফ্যাসন উপজেলায় বিকাশ এজেন্টের কর্মীর কাছ থেকে দিনদুপুরে ১৭ লাখ ৫ হাজার টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় টাকা বহনকারি বিকাশের ডিএসও নিজাম উদ্দিনকেই অবশেষে পুলিশ গ্রেফতার দেখিয়ে মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরন করেছে। তবে ছিনতাইকৃত টাকা উদ্ধার করতে পারেনি। এমনকি রহস্য জনক এই ছিনতাইয়ের ঘটনার ৩ দিনপরও প্রকৃত কোন ক্রু উদঘাটন করতে পারেননি। এদিকে এ ছিনতাইয়ের ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষদর্শী এক ইউপি সদস্য’র সম্পৃক্ততা থাকার অভিযোগ উঠলেও তাকে আটক না করায় নানা প্রশ্ন উঠেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়,ভোলার চরফ্যাসন বিকাশ শাখার হিসাব রক্ষক সোলায়মান সাগর এক কোটি ১৪ লাখ টাকা গত রবিবার দুপুরে চরফ্যাসন পূবালী ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে। ওই টাকা থেকে বিকাশের ডিএসও নিজাম উদ্দিন কে ১৭ লাখ ৫ হাজার টাকা চরফ্যাসনের আঞ্জুর হাটের বাবুর হাট মার্কেটে এজেন্টদের কাছে পৌছানোর জন্য দেওয়া হয়। তিনি মটরসাইকেল যোগে একা তার গন্তব্যের উদ্দ্যেশে যাওয়ার সময় বিকাল ৩ টার দিকে হঠাৎ করে কাশেম গঞ্জ বাজারের কাছে পাটোয়ারি বাড়ির সামনে একটি মটরসাইকেলে ৩ আরোহি বিকাশ প্রতিনিধির মটরসাইকেলের গতি রোধ করে। এর মধ্যে একজন হেলমেট পরা ছিলো। বিকাশ কর্মী জানায়, এ সময় মটরসাইকেলের অজ্ঞাত ৩ ব্যক্তি তার গলায় চাকু ঠেকিয়ে ব্যাগ ভর্তি ১৭ লাখ ৫ হাজার টাকা নেওয়ার চেষ্টা করলে সে প্রথমে বাধা দেয়। এসময় ধস্তা ধস্তির এক পর্যায়ে টাকা ব্যাগ ছিনিয়ে ও মটরসাইকেলের চাবি ছিনিয়ে পালিয়ে চলে যায়। এসময় বিকাশ কর্মী নিজাম উদ্দিন ডাক চিৎকার করছিলো। ওই সময় এওয়াজপুর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের মেম্বার শাহাবুদ্দিন যাওয়ার সময় ছিনতাই কারিকে ধাওয়া করে। এক পর্যায়ে একটি অটো রিক্সার ভিতরে টাকার ব্যগটি ফেলে রেখে তারা পালিয়ে যায়। কিন্তু পুলিশ এ ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছে না। ইউপি সদস্য ও যুবলীগ নেতা শাহাবুদ্দিন জানান, তিনি মটরসাইকেল যোগে দাওয়া করে। এর পর তার ভাই জিহাদের পালচার মটরসাইকেল যোগে জাহানপুর দিকে ধাওয়া করে। পরে আঞ্জুর হাটের দিকে ছিনতাইকারিরা চলে গেলে তাদের ধরতে পারেনি। এদিকে অভিযোগ উঠেছে, যখন ইউপি সদস্য ধাওয়া করে তা চিৎকারে তো এলাকার লোকজন এগিয়ে আসার কথা ছিলো। কিন্তু কেন তিনি ডাকচিৎকার করেনি। এ ছাড়াও তিনি মোবাইলে বিভিন্ন সময়ে পুলিশকে ছিনতাইকারি আটক হয়েছে বলে ভূল তথ্য দেয় বলেও অভিযোগ উঠেছে। বিকাশ কর্মী নিজাম ৫ মাস আগে ভোলার চরফ্যাসনে ডিএসও হিসাবে যোগ দেয়। তার বাড়ি ভোলার ভেদুরিয়া ইউনিয়নের ব্যাংকের হাট এলাকায়। এ ঘটনায় চরফ্যাসন বিকাশ অফিসের হিসাব রক্ষক সোলায়মান সাগর বাদী হয়ে গত রবিবার রাতে চরফ্যাসনের শশীভূষন থানায় অজ্ঞাত আসামী হিসাবে ছিনতাই মামলা করেন। শশীভূষন থানার ওসি হানিফ সিকদার জানান,এ ঘটনায় সন্দেহ ভাজন হিসাবে তারা বিকাশ কর্মী নিজামকে প্রথমে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার বক্তব্যে গরমিল থাকায় মঙ্গলবার সকালে তাকে টাকা ছিনতাইয়ের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে প্রেরন করা হয়। এর আগে বিকাশ কর্মী তাদের কাছে লিখিত বক্তব্য দেন। তাতে উল্লেখ করা হয়, গত মাসে অজ্ঞাত ২ ব্যক্তি তাকে ফলো করতো। এ ঘটনা সুপার ভাইজর ও বিকাশের ম্যানেজারকে জানো হয়। কিন্তু তারা কোন ব্যবস্থা নেয়নি। ওসি ধারনা করছেন, বিকাশের একটি চক্র এ ছিনতাইয়ের সাথে জড়িত থাকেতে পারে। তারা মোবাইলের কল লিষ্ট পেলে তদন্তের অনেক কিছু নিশ্চিত হওয়া যাবে। এ ছাড়াও ব্যাংকের ভিডিও ফুটেজে কিছু সন্দেহ জনক চিত্র পাওয়া গেছে। সে অনুযায়ী তারা তদন্ত করছেন বলেও জানান।
×