ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

মেহেরপুরে বীজ কোম্পানীর প্রতারনায় লোকশানের মুখে ফুলকপি চাষিরা

প্রকাশিত: ২৩:৪০, ৭ নভেম্বর ২০১৭

মেহেরপুরে বীজ কোম্পানীর প্রতারনায় লোকশানের মুখে ফুলকপি চাষিরা

সংবাদদাতা, মেহেরপুর ॥ বীজ কোম্পানীর প্রতারনায় মেহেরপুরে ফুলকপি চাষিরা লোকশানের মুখে পড়েছে। চলতি মৌসুমে হুয়াইট রাজা নামের বীজ জমিতে রোপন করে শত শত কপি চাষিরা। ঋন নিয়ে কপি চাষ করে এখন সর্বস্ব হারিয়ে দিশেহারা হয়ে দিন পার করছে তারা। এদিকে কপির বীজ সংগ্রহ করে ল্যাবে পরীক্ষা করে আইনগত ব্যাবস্থা নেওয়ার কথা জানান জেলা বীজ প্রত্যয়ন কর্মকর্তা। গত কয়েক বছর ধরে আগাম কপি চাষ করে লাভবান হয়ে আসছে জেলার চাষিরা। চলতি বছরও চাষিরা ব্যপক হারে কপি চাষের লক্ষে হুয়াইট রাজা নামের ফুলকপির হাইব্রিড জাতের বীজ রোপন করে। বিশেষ করে সদর উপজেলার গোপালপুর গ্রামের শতাধিক চাষী ৫’শ বিঘার উপরে জমিতে ফুলকপির চাষ করে। ৬৫ দিনে দুই থেকে আড়াই কেজি করে কপির ফলন হবে এমন প্রলোভনে চাষিরা বীজ রোপন করে। ৯০ দিন পার হয়ে গেলেও গাছে এখনও কপির ফুল আসে নি। ফলে হতাশায় দিন পার করছে চাষিরা। বিঘা প্রতি জমিতে কপি চাষে খরচ হয়েছে ২০-২৫ হাজার টাকা। পুরো কপি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এখন জমি থেকে কপির গাছ তুলে ফেলে দিচ্ছেন চাষিরা। ক্ষতিগ্রস্থ চাষী লিয়াকত আলী বলেন, ভালো লাভের আশায় এনজিও থেকে সুদের উপর ২০ হাজার টাকা লোন নিয়ে এক বিঘা জমিতে হোয়াইট রাজা ফুলকপির বীজ রোপণ করেছিলাম। কিন্তু বীজে সমস্যা থাকায় গাছে ফুল আসেনি। এখন চিন্তা কি করে এই টাকা পরিশোধ করব। তার সাথে অন্যান্য আরো অনেক চাষীরা জানান, এ বছর হোয়াইট রাজা নামের কপির বীজ রোপণ করে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। জমি থেকে ফুলকপির গাছ তুলতে এখন ঘর থেকে আরও ৫-১০ হাজার টাকা লাগছে। বীজ কোম্পানির প্রতারণার শিকার হয়ে আমরা নিঃস্ব হয়ে পড়েছি। গত বছর এই বীজ রোপণ করে আমরা লক্ষ টাকা ঘরে তুলেছিলাম। কিন্তু, এবার বীজের ডিলারের কারণে আমরা ক্ষতির মুখে পড়েছি। আমাদের বীজের ডিলার আসল বীজ না দিয়ে নকল বীজ দিয়েছে। এজন্য গাছে কোনো ফুল আসেনি। আমরা এই বীজে ডিলারের নামে আদালতে মামলা করব। মেহেরপুর বড়বাজারের হোয়াইট রাজা বীজের ডিলার দয়াল রাজা ফুল না আসার কথা অস্বীকার করে বলেন, আগাম কপির বীজ রোপণ করায় গাছে ফুল আসেনি। বীজের কোনো সমস্যা নেই। মেহেরপুর জেলা বীজ প্রত্যয়ন কর্মকর্তা আক্তারুজ্জামান জানান, হাইব্রিড জাতের বীজের ওপর আমাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। আমরা চাষীদের কাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করে ল্যাবে পরীক্ষা করে আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহণ করব। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এস এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, চলতি মৌসুমে শতাধিক কৃষক বীজ কোম্পানির প্রতারণার শিকার হয়েছেন। বীজের সমস্যার কারণে গাছে ফুল আসেনি বলে আমরা ধারণা করছি।কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের আইনের আওতায় গিয়ে ডিলার ও কোম্পানির নামে মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।
×