ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

শ্রীপুরে চুরির অভিযোগে দুই শ্রমিককে নির্যাতন

প্রকাশিত: ০২:০৮, ৬ নভেম্বর ২০১৭

শ্রীপুরে চুরির অভিযোগে দুই শ্রমিককে নির্যাতন

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর ॥ গাজীপুরের শ্রীপুরে চুরির অভিযোগে সোমবার এক কারখানার দুই শ্রমিককে মারধর করে জানালার গ্রীলের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে আহত ওই শ্রমিকদের কাছ থেকে কয়েকটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর রেখে তাদের পাওনাদি পরিশোধ না করেই এলাকা ছাড়া করেছে কারখানার মালিকপক্ষের লোকজন। নির্যাতনের শিকার শ্রমিকরা হলো- খুলনা জেলার দৌলতপুর থানার গিলাতলা গ্রামের খোকন মিয়া ছেলে রাসু হোসেন (২৭) এবং পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানি থানার চরবলেশ্বর গ্রামের খলিল মিয়া ছেলে শাহিন আলম (২০)। নির্যাতনের শিকার শ্রমিক ও স্থানীয়রা জানান, গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া পূর্ব খন্ড এলাকায় গেলি ইন্ডাস্ট্রিয়াল কোম্পানী লিমিটেড নামের ব্যাটারী তৈরীর কারখানায় কাজ করে রাসু ও শাহিন। তারা কারখানার পাশের বাড়িতে ভাড়া থাকে। সোমবার সকালে ওই কারখানার কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদ শিপন পাটোয়ারী ও কওয়া পূর্ব খন্ড গ্রামের শামসুল হকের ছেলে কবির হোসেন কারখানার নিরাপত্তা কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে রাসু ও শাহিনের বাসায় যায়। তারা রাসু ও শাহিনকে ঘুম থেকে তুলে কারখানায় নিয়ে আসে। এসময় কারখানার মালিকপক্ষের লোকজন চুরির অভিযোগে রাসু ও শাহিনকে বেধড়ক মারধর করে। এতে তারা আহত হয় ও জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরে আহত ওই দুই শ্রমিকের জ্ঞান ফিরে এলে গলায় চোর লেখা কাগজ ঝুঁলিয়ে তাদেরকে কারখানার প্রধান ফটকের সামনে জানালার গ্রীলের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে রাখে। নির্যাতনের এখবর ছড়িয়ে পড়লে সংবাদকর্মীসহ লোকজন ঘটনাস্থলে ভীড় জমাতে থাকে। পরে অবস্থা বেগতিক দেখে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহলের সহায়তায় কারখানা কর্তৃপক্ষ ওই দুই শ্রমিকের কাছ থেকে জোর পূর্বক কয়েকটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে তাদের পাওনাদি পরিশোধ না করেই ভয় দেখিয়ে এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেয়। শাহিনের ভাড়া বাসার সামনে একটি সীসার দন্ড পাওয়া যায়। এতে রাসু ও শাহিনকে চোর সাব্যস্ত করে নির্যাতন চালানো হয়। তবে চুরির অভিযোগ অস্বীকার করেছে নির্যাতনের শিকার ওই দুই শ্রমিক। এব্যাপারে কারখানার কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদ শিপন পাটোয়ারী ও স্থানীয় ব্যবসায়ী কবির হোসেন ওই দুই শ্রমিককে মারধরের কথা স্বীকার করে জানান, তাদেরকে থানায় দিলে পুলিশের ঝামেলায় পড়তে হতো। তাই তাদেরকে মারধর করে চাকুরী থেকে অব্যাহতি দিয়ে এলাকা ছাড়া করা হয়েছে। এবিষয়ে শ্রীপুর মডেল থানার এসআই নাজমুল হক বলেন, বিকেল পর্যন্ত এ ঘটনায় লিখিতভাবে থানায় কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×