ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আলী ইউনুস হৃদয়

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বিতর্ক চর্চায় একযুগ পেরিয়ে

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ৫ নভেম্বর ২০১৭

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বিতর্ক চর্চায় একযুগ পেরিয়ে

বিতর্ক চর্চার লক্ষ্য নিয়ে পথচলা শুরু ২০০৫ সালে। শত চ্যালেঞ্জকে উপেক্ষা করে আজ প্রতিষ্ঠিত সংগঠনটি। এক যুগেরও বেশি সময়ের সাফল্য, অর্জন ও সুনাম নিয়ে বিতর্ক চর্চায় সমুন্নত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতর্ক সংগঠন গ্রুপ অব লিবারেল ডিবেটরস (গোল্ড বাংলাদেশ)। প্রতি বছর জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা, আন্তঃক্লাব, অন্তঃগোল্ড, ফ্রেশার্স ডিবেট চ্যাম্পিয়নশিপ, বিতর্ক বিষয়ক কর্মশালা ও পহেলা বৈশাখে ছাত্র-শিক্ষক রম্য বিতর্কের আয়োজনের মধ্য দিয়ে সেই অগ্রযাত্রার ধারা অব্যাহত রেখেছে সংগঠনটি। দেশের সকল বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে কৃতিত্ব অর্জনের নজির রয়েছে সংগঠনটির সদস্যদের। সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পল্লী কবি জসীম উদ্দীন ডিবেটিং ক্লাব আয়োজিত ৯ম আন্তঃক্লাব বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় গোল্ড বাংলাদেশের বিতার্কিক রাছিবুল ইসলাম নাহিদ। সপ্তাহে প্রতি রবি ও মঙ্গলবার বিতর্ক সেশন অনুষ্ঠিত হয় দুুটি পর্বে। একটি গ্রুপ জুনিয়র সদস্যদের আর একটি সিনিয়রদের। বিতর্কের বিষয় একাত্তর একটি অসমাপ্ত যুদ্ধ। দুপক্ষের তুমুল বিতর্ক। বিতর্ক সেশন শেষে নিয়মিত চায়ের আড্ডায় সংগঠনের সদস্যরা। এখানেও থামেনি বিতর্কের রেশ। দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান বলেন, ভাই বিতর্কের বিষয়টি খুবই চ্যালেঞ্জের ছিল। মাহমুদুলের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আরেক শিক্ষার্থী বলেন হুম, সত্যিই দারুণ ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েই বিতর্ক চর্চায় যুক্ত হন জান্নাতুল জান্নাত। জানতে চাইলে জান্নাত বলেন, গোল্ড বাংলাদেশ একটি বিতর্ক সংগঠনই নয়, একটি পরিবারও ! স্কুলে পড়ার সময়ই বিতর্কের সঙ্গে সখ্য থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েই গোল্ড বাংলাদেশের সঙ্গে পথচলা শুরু হয়। এখানে আসার পর নতুন হয়েও সহজেই বিতার্কিক হিসেবে বিতর্ক করার সুযোগ পেয়েছি। বাংলা বর্ষবরণ উপলক্ষে পহেলা বৈশাখে ছাত্র-শিক্ষক রম্য বিতর্কে শিক্ষার্থীদের পক্ষে বিতর্ক করেন সংগঠনটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের শিক্ষার্থী এজাজ আহমেদ। শিক্ষকদের বিপক্ষে বিতর্ক করার অনুভূতি নিয়ে এজাজ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস রুমে শিক্ষকদের সঙ্গে একাডেমিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। কিন্তু এভাবে শিক্ষকদের বিপক্ষে সামনে বিতর্ক করার অভিজ্ঞতা সত্যিই অভাবনীয়। এর মধ্য দিয়ে ছাত্র-শিক্ষকের মাঝে একটা সম্প্রীতির বন্ধন গড়ে ওঠে। আর সেই বন্ধন রক্ষার আয়োজনে অংশীদার হতে পারার অর্জন কম নয়। সঙ্গীতা ও সাদিয়া বিতার্কিক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে যোগ দিয়েছেন গোল্ড বাংলাদেশ বিতর্ক সংগঠনে। কথা হয় তাদের সঙ্গে। তারা বলেন, ক্যাম্পাসে এসে প্রথমে এ সংগঠনে সম্পৃক্ত হতে পেরে বিতার্কিক হওয়ার স্বপ্ন পূরণের পথে চলছি। সংগঠনটির সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী সোহরাব হোসেন বলেন, গোল্ড নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম বিতর্ক সংগঠন হিসেবে পরিচিতি লাভ করতে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যুক্তিবাদী দেশপ্রেমিক মানুষ গড়ে তুলতে হবে। এ বছর আমরা জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে যাচ্ছি। সবসময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতা পেয়ে আসছি তবে নির্দিষ্ট জায়গা বরাদ্দ দিলে সুষ্ঠুভাবে বিতর্ক চর্চার কার্যক্রম আরও বেগবান হবে। গোল্ড বাংলাদেশের বর্তমান মডারেটর প্যানেলের সদস্য বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রভাষক মামুন আঃ কাইউম বলেন, বিতর্ককে শিল্প হিসেবে এগিয়ে নেয়া ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে দেয়া, যুক্তিশীল সমাজ গড়ে তোলার স্বপ্ন এবং পড়াশোনার পাশাপাশি নিজেদের দক্ষ নেতৃত্ব হিসেবে গড়ে তোলার আকাক্সক্ষা নিয়ে কাজ করছে গ্রুপ অব লিবারেল ডিবেটরস (গোল্ড বাংলাদেশ)। এখানে শুধু বিতর্ক চর্চাই হয় না, বিতার্কিক ও বিতর্ক অনুরাগী শিক্ষার্থীদের সংগঠিত করে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তির চর্চা উৎসাহিতও করা হয়। ছবি : অন্তর রায়
×