ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নৌকা ডুবে ২ জেএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যু

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ২ নভেম্বর ২০১৭

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নৌকা ডুবে ২ জেএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যু

স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ॥ জেলার নবীনগরে জেএসসি পরীক্ষার্থীবাহী একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা ডুবে ২ জেএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এতে আহত হয় ১০ জন। ঘটনার তদন্তে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। দুর্ঘটনার জন্য মৃতদের স্বজনেরা বীরগাঁও স্কুল শিক্ষকদের অবহেলাকেই দায়ী করেছেন। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বুধবার সকালে বীরগাঁও উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১ শতাধিক পরীক্ষার্থী নিয়ে বীরগাঁও, গাছতলা, আমতলী থানাকান্দি থেকে নৌকাযোগে কৃষ্ণনগর রওনা হয়। তাদের পরীক্ষার আসন পড়েছিল কৃষ্ণনগর আবদুল জব্বার স্কুল এ্যান্ড কলেজে। থানাকান্দি থেকে কৃষ্ণনগরের দিকে যাওয়ার সময় পাগলা নদীতে একটি খুঁটির সঙ্গে ধাক্কায় নৌকাটি উল্টে যায়। উদ্ধারকারী একজন প্রত্যক্ষ্যদর্শী জনকণ্ঠকে বলেন, নৌকাটি নদীর মধ্যে অবস্থিত কচুরিপানার জটলার (দাম) কাছে গিয়ে প্রথমে কাত হয়ে যায়। এ সময় উপরে থাকা ছাত্ররা দ্রুত নামতে নৌকার মধ্যে দাঁড়িয়ে গেলে নৌকাটি ডুবে যায়। এ সময় নৌকায় উপস্থিত শিক্ষার্থীদের আর্তচিৎকারে তীরের লোকজন এসে তাদের উদ্ধার করে। নৌকার ভেতর থেকে ১০ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। অন্যরা সাঁতরিয়ে তীরে ওঠে। খবর পেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থালে পৌঁছে। স্থানীয় ডুবুরী দল দীর্ঘক্ষণ চেষ্টা করে নৌকাটি উদ্ধার করে। মৃত দুই পরীক্ষার্থী নাদিরা আক্তার ও সোনিয়া আক্তার। নাদিরা বীরগাঁও ইউনিয়নের বাইশমৌজা গ্রামের সৈয়দ হোসেনের মেয়ে এবং সোনিয়া একই ইউনিয়নের নজরদৌলত গ্রামের শিশু মিয়ার মেয়ে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ স্বজনেরা জানান, স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রতিটি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে নদী পারাপারের জন্য ৩০০ টাকা করে নিয়েছে। যেখানে একটি নৌকা ৫০/৬০ জন যাত্রী ধরার কথা তারা কিভাবে ১০০ জনের অধিক শিক্ষার্থী উঠালেন। নৌকাটিতে তখন কোন শিক্ষক ছিল না বলে জানান তারা। স্থানীয় এক যুবক জানান, নদী পারাপারের জন্য জন প্রতি ২ শ’ টাকা করে নেয়া হলেও তাদের প্রয়োজনীয় নৌকার ব্যবস্থা করা হয়নি। একসঙ্গে গাদাগাদি করে অতিরিক্ত পরীক্ষার্থী নৌকাতে ওঠানোয় এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে স্বজনদের দাবি। তারা ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবি জানান। ঘটনায় জড়িত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছে কৃষ্ণনগর স্কুল মাঠ প্রাঙ্গণে। নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সালেহীন তানভীর গাজী বলেন, পুরো ঘটনার খোঁজ-খবর নিয়ে আমরা তদন্ত করব। জেলা প্রশাসক রেজওয়ানুর রহমান বলেন, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার খোঁজখবর নিয়েছি। মৃত দু’জনের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা আর্থিক সহযোগিতা করা হবে। বীরগাঁও স্কুল এ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ নাজির হোসেন বলেন, গত কয়েক বছর ধরে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে নৌকা ভাড়া নেয়ার রেওয়াজ চলছিল। এবারও তাই হয়েছে। তবে আমাদের কোন অবহেলা ছিল না।
×