ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জামালপুরে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষে সংঘর্ষ, আহত ১০

প্রকাশিত: ০১:৪৭, ২৮ অক্টোবর ২০১৭

জামালপুরে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষে সংঘর্ষ, আহত ১০

নিজস্ব সংবাদদাতা, জামালপুর ॥ জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় পৌরকর্মচারী ও ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মারুফ হাসান হত্যাকান্ডকে কেন্দ্র করে শনিবার দুপুরে আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। ওই হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে ডাকা উপজেলা আওয়ামী লীগের সংবাদ সম্মেলনে সরিষাবাড়ী আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক এমপি ড. মুরাদ হাসানকে জড়িত থাকার অভিযোগ করার জের ধরে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ও পিংনা ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার মোতাহার হোসেন জয়সহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সরিষাবাড়ী পৌরসভার সনদ পরিদর্শক ও আওনা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মারুফ হাসান (৩৫) ২০ সেপ্টেম্বর সকালে একই ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মেন্দারবেড় গ্রামের আব্দুল গণির ছেলে মোবারক হোসেন রাজার হাতে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়ে একমাস পর বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে মারা যান। এ ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার বেলা ১১টায় সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আওনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সংবাদ সম্মেলন ডাকে। সংবাদ সম্মেলনে মারুফ হত্যাকান্ডে সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. মুরাদ হাসানের সরাসরি নির্দেশনা ছিল বলে অভিযোগ করা হয়। নিহতের বাবা মতিয়র রহমান সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে বলেন, মারুফ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। এমপি মুরাদ হাসানের পক্ষে কাজ না করায় তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বেল্লাল হোসেন এবং সহ-সভাপতি আমজাদ হোসেন বলেন, মারুফকে নির্যাতনের আগের দিন হামলাকারী সন্ত্রাসী মোবারক হোসেন রাজার বাড়িতে সাবেক এমপি ডা. মুরাদ হাসান গভীর রাত পর্যন্ত বৈঠক করেছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছানোয়ার হোসেন বাদশার সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উপাধ্যক্ষ হারুন-অর-রশিদ, সহসভাপতি আব্দুল লতিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি উপাধ্যক্ষ মিজানুর রহমান, পোগলদিঘা ইউপি চেয়ারম্যান সামস উদ্দিন, পিংনা ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার মোতাহার হোসেন জয় প্রমুখ। ওই সংবাদ সম্মেলন শেষে সরিষাবাড়ী মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এলাকায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উপাধ্যক্ষ হারুন-অর-রশিদ ও সাবেক এমপি ডা. মুরাদ হাসানের সমর্থকদের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইট-পাটকেলের আঘাতে নিরব, সাজ্জাদ, সুমন, মিল্টন, কপিল, খোকন ও অন্তরসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। গুরুতর আহত ছাত্রলীগ নেতা এস এ নিরবকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও পৌর ছাত্রলীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেনকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে সরিষাবাড়ী পৌর এলাকা, আওনা ও পিংনা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগে দু’পক্ষের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল ইসলাম খান সংঘর্ষের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সংঘর্ষের সময় ঘটনাস্থলে পুলিশ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত রয়েছে।
×