ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টিতে সফলতা দেখিয়েছে সরকার

প্রকাশিত: ০১:১৬, ২৮ অক্টোবর ২০১৭

মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টিতে  সফলতা দেখিয়েছে সরকার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, রোহিঙ্গা ইস্যূতে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টিতে সফলতা দেখিয়েছে সরকার। মিয়ানমারের ওপর আšøর্জাতিক চাপ দিন দিন বাড়ছে। জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র , যুক্তরাজ্যসহ প্রভাবশালী দেশগুলোর পাশাপাশি সম্প্রতি ভারতও রোহিঙ্গা ইস্যূতে বাংলাদেশের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। কিন্তু দু:খের বিষয় এই ইস্যূতে এ ধরনের সফলতার জন্য খালেদা জিয়া একবারও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ পর্যন্ত জানালেন না। শনিবার রাজধানীর একটি পাঁচতারা হোটেলে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডি’র সহায়তায় বাংলাদেশের শহরগুলোতে যক্ষ্মার প্রাদুর্ভাব শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার লক্ষ্যে আয়োজিত কর্মসূচীর উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শিয়া ব্লুম বার্নিকাট । রোহিঙ্গা ইস্যুতে সমর্থন জানানোর জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকার, সিনেটরদের ধন্যবাদ জানান। একইসঙ্গে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে ফেরত নেওয়ার বিষয়ে আন্তর্জাতিক চাপ আরও বাড়াতে রাষ্ট্রদূতদের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তরিক সমর্থন ও সহায়তা চান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। স্বাস্থ্যখাতে সাফল্যের চিত্র তুলে ধরে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, স্বাস্থ্যখাতের সরকারের সফলতা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত । সরকারের প্রচেষ্টায় পোলিও, ধুনষ্টংকার নির্মূলের পাশাপাশি মা ও শিশু মৃত্যু হ্রাসসহ সংক্রামক ব্যাধি মোকাবেলায় বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়েছে। এবার আমরা যে কোনো মূল্যে যক্ষ্মা নির্মূল করতে চাই। যক্ষাকে শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে সরকার বদ্ধ পরিকর। যক্ষ্মা নির্মূলে দেশের বস্তি অঞ্চলকে সবচেয়ে বড় বাঁধা উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বস্তি অঞ্চলের জনগোষ্ঠীকে চিকিৎসার আওতায় আনা দূরুহ ব্যাপার। ওষুধের নির্ধারিত কোর্স সম্পন্ন না করায় বস্তি অঞ্চলে যক্ষ্মা মুক্ত করা চ্যালেঞ্জিং। এ কাজে গণমাধ্যমকর্মী ও সমাজের সচেতন নাগরিকদের সহায়তা চান তিনি। স্বাস্থ্যখাতে বাংলাদেশের সাফল্যের প্রশংসা করে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, বিগত কয়েক বছরে সংক্রামক রোগ প্রতিরোধে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য সফলতা দেখিয়েছে। যক্ষ্মা শুধু বাংলাদেশেরই নয়, বিশে^র বেশকিছু দেশের মারাত্মক সমস্যা। বিশ্বে যক্ষ্মায় আক্রান্ত ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। এ সমস্যা দূর করতে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচী খুবই প্রশংসনীয়। এ কর্মসূচীতে ইউএসএআইডি সহায়তা অব্যাহত রাখবে। অন্য বক্তারা বলেন, যক্ষ্মা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বে প্রতি সেকেন্ডে একজন ব্যক্তি যক্ষ্মার জীবাণু দ্বরা আক্রান্ত হয়। বর্তমানে বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ জনগণ যক্ষ্মার জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত। তবে নিয়মিত পূর্ণ মেয়াদের চিকিৎসায় যক্ষ্মা সম্পূর্ণ ভাল হয়। তিন সপ্তাহের বেশি কাশি যক্ষ্মার প্রধান লক্ষণ। অবহেলা না করে কফ পরীক্ষা করাতে হবে। বিশেষজ্ঞরা জানান, যক্ষ্মা একটি সংক্রামক রোগ, যা মাইকোব্যাটেরিয়াম টিউবারকুলোসিস নামক অতি সুক্ষ জীবাণুর মাধ্যমে সংক্রমিত হয়। প্রধানত ফুসফুসই যক্ষ্মা জীবাণু দ্বারা সর্বাধক আক্রান্ত হয়। যক্ষ্মা জীবাণু দেহের অন্য অংশকেও আক্রান্ত করে যক্ষ্মা রোগ তৈরি করতে পারে। ফুসফুসের যক্ষ্মায় আক্রান্ত কফে জীবাণুযুক্ত রোগী যদি বিনা চিকিৎসায় থাকে, তবে বছরে প্রায় ১০ থেকে ১৫ জন লোককে যক্ষ্মার জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত করে। জীবাণু দ্বারা সকল সংক্রমিত ব্যক্তিই যক্ষ্মা রোগে ভুগে না। যে সকল ব্যক্তির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তারাই প্রধানত যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হয়।তাই প্রতিটি রোগীর দ্রুত রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা শেষ করা জাতীয়, আঞ্চলিক ও বিশ্বের যক্ষ্মা প্রতিরোধের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপায়। বিশ্বে প্রতি বছর ৮.৮ মিলিয়নের বেশি লোক যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আর প্রতি বছর ১.৪ মিলিয়ন লোক প্রতি বছর যক্ষ্মায় মারা যায়। ২২টি দেশে বিশ্বের মোট যক্ষ্মা রোগীর শতকরা ৮০ ভাগ বাস করে। মোট যক্ষ্মা রোগীর শতকরা ৪০ ভাগ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে বাস করে।
×