ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জনকন্ঠে সংবাদ প্রকাশের দায়ে

বাঁশখালীতে জনকন্ঠের সাংবাদিককে প্রধান শিক্ষকের হুমকি

প্রকাশিত: ০১:০৮, ২৬ অক্টোবর ২০১৭

বাঁশখালীতে জনকন্ঠের সাংবাদিককে প্রধান শিক্ষকের হুমকি

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাঁশখালী, চট্টগ্রাম ॥ চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার চাম্বল ইউনিয়নের ১২৩ নং পশ্চিম চাম্বল ডেপুটিঘোনা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জামায়েত নেতা আবদু ছামাদের বিরুদ্ধে সেচ্ছাচারিতাসহ ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ এনেছে এলাকাবাসী। এ বিষয়ে বুধবার দৈনিক জনকণ্ঠের অনলাইন বিভাগে সংবাদ প্রকাশের পর ওই প্রধান শিক্ষক তার মুটোফোন (নং-০১৮১২৭৯৩৩৩৩) হতে বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) বিকাল ৩ টা ৪৪ মিনিটে আমাদের নিজস্ব সংবাদদাতা জোবাইর চৌধুরী দেখে নেয়ার হুমকি প্রদান করেন। তাছাড়া বিদ্যালয়ের ওই প্রধান শিক্ষক অভিযোগ থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে তদবীর চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) বিদ্যালয়ে উপস্থিত না থেকে নিজেকে বাঁচানোর জন্য চট্টগ্রাম নগরে স্থানীয় সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর বাসায় পাড়ি জমিয়েছেন বলে অভিযোগকারীরা জানান। এ ঘটনায় আমাদের প্রতিনিধি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করিলে ইউএনও ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস প্রদান করেন। এদিকে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বুধবার স্থানীয় সাংসদ, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর শতাধিক স্কুল ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক স্বাক্ষরিত অভিযোগপত্র দায়ের করেছিলেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান মোল্লা জানান, সবেমাত্র বিদ্যালয়ের অনিয়মের বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে প্রকৃত ঘটনা। বিদ্যালয়ের দুর্নীতি ও অনিয়ম সম্পর্কে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে বলে তিনি জানান। এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে জনকণ্ঠকে বলেন, এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্তের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার চাম্বল ইউপির পশ্চিম চাম্বল ১২৩ নং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণের দিন ধার্য্য ছিল ১৮ অক্টোবর। ভোট গ্রহণ শেষে গণনার সময় পেরিয়ে গেলেও বিজয়ী প্রার্থীদের ঘোষণা না দিয়ে অর্থের বিনিময়ে বিজীত প্রার্থীকে নির্বাচিত ঘোষণা করা। তাছাড়া শিক্ষানুরাগী পদে জমি দাতা সদস্যদের নিয়োগ না দিয়ে অশিক্ষিত ফিশিং বোটের মাঝিকে নিয়োগসহ প্রধান শিক্ষক জামায়েত নেতা আবদু ছামাদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলেছে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকগণ। এই ঘটনায় এলাকায় অভিভাবক, শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এদিকে সরেজমিনে বিদ্যালয় এলাকায় গিয়ে জানা যায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রত্যেক শ্রেণীর কোচিং ফি বাবদ অতিরিক্ত অর্থ আদায়, নির্বাচনে প্রার্থীদের কাছ থেকে ৪ হাজার টাকা করে উৎকোচ গ্রহণসহ নারী কেলেঙ্কারিরও অভিযোগে অভিযুক্ত এলাকাবাসীর কাছে। এই ঘটনায় ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী নানা অভিযোগ এনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পাশাপাশি ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের বিষয়গুলো তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া জন্য প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন অভিভাবকগণ। উল্লেখ্য তাছাড়া ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে এই প্রধান শিক্ষক আলবদর বাহিনীর সদস্য ছিলেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকগণ ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন থেকে বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগও করে আসছিলেন প্রশাসনের ভিন্ন ভিন্ন দফতরে।
×