ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সুনামগঞ্জে একই প্রশ্নে দিয়ে দুই বিদ্যালয়ের নির্বাচনী পরীক্ষা

প্রকাশিত: ০০:১৯, ২৬ অক্টোবর ২০১৭

সুনামগঞ্জে একই প্রশ্নে দিয়ে দুই বিদ্যালয়ের নির্বাচনী পরীক্ষা

নিজস্ব সংবাদদাতা, সুনামগঞ্জ ॥ সুনামগঞ্জের লবচান চৌধুরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও বুলচান্দ উচ্চ বিদ্যালয়ে একই প্রশ্ন দিয়ে দুই বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের নির্বাচনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরীক্ষা শুরু হওয়ার পূর্বেই এমন প্রস্তুতি নিয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরীক্ষার রুটিন তৈরি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পরীক্ষায় একদিনের ব্যবধান থাকায় দুই বিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের যোগসাজসে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে বলে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা জানিয়েছেন। প্রশ্নপত্র নিয়ে এমন জাঁল জালিয়াতির ঘটনায় মেধাবি শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। অভিভাবকরা জানান, এভাবে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যদি আমাদের সন্তানদের নিয়ে এই ধরনের দায়িত্ব জ্ঞানহীন কান্ড করে তাহলে মেধাবি ও প্রশ্নপত্র পাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে কোনো ব্যবধান থাকবে না। সংশ্লিষ্ঠ সুত্রে জানা গেছে, জেলার বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২০১৭ সালের এসএসসি নির্বাচনী পরীক্ষা চলছে। নীতিমালা অনুযায়ী স্ব স্ব বিদ্যালয় বিষয় ভিত্তিক প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করার কথা থাকলেও শহরের লবজান চৌধুরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও বুলচান্দ উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে একই প্রশ্নপত্রে। প্রশ্নপত্রের উপরের অংশে শুধুমাত্র বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। আগের দিন লবজান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে যে বিষয়ের উপর পরীক্ষা নেয়া হয়েছে পরের দিন একই প্রশ্নে বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে পরীক্ষা নিয়েছে বুলচান্দ উচ্চ বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ। এতে দেখা গেছে ভূগোল ও পরিবেশ বিষয়ের(বহু নির্বাচনী) প্রশ্নপত্র দু’টিতে ১ নম্বর থেকে ৩০ নম্বর প্রশ্নের কোথাও কোন অমিল নেই। দুই স্কুলেরই প্রশ্নপত্র একই রকম। এমন কান্ড করা হয়েছে সকল বিষয়ের পরীক্ষার ক্ষেত্রে। লবজান উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাহমিনা বেগম জানায়, আমাদের পরীক্ষার প্রশ্ন আর বুলচান্দ বিদ্যালয়ের প্রশ্ন একই। শুধু বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। আগের দিন আমরা যে বিষয়ে পরীক্ষা দিয়েছি পরের দিন দেখি বুলচান্দ উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রশ্নপত্রের সাথে আমাদের প্রশ্ন হুবুহু মিলে গেছে। এরপর থেকেই পরীক্ষা শেষ করেই আমাদের পাড়াই থাকা সহপাঠিদের এই প্রশ্ন দিয়ে দেই। এই প্রশ্ন পড়েই তারা পরীক্ষা দেই। বুলচান্দ উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থী সুজন দাস জানায়, আমার সহপাঠীরা লবজানের প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করে সহজে শতভাগ উত্তর দিয়ে প্রতিযোগিতায় আমার চেয়ে এগিয়ে গেছে। অথচ আমি সারা বছর পরিশ্রম করেও শতভাগ প্রশ্নের উত্তর দিতে পারিনি। কাজেই সবগুলো পরীক্ষা বাতিল করে নতুন করে পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এ ব্যাপারে বুলচান্দ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল আবেদীনকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি তবে এখন পর্যন্ত প্রশ্নপত্রগুলো দেখিনি। এ ব্যাপারে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখবো। এ ধরনের ঘটনা ঘটলে জালিয়াতিদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হবে।
×