ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ঝিনাইদহে হরতাল ডেকে মাঠে নেই বিএনপি

প্রকাশিত: ১৮:২৫, ২৬ অক্টোবর ২০১৭

ঝিনাইদহে হরতাল ডেকে মাঠে নেই বিএনপি

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঝিনাইদহ ॥ ‘বিএনপি’র চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও ঝিনাইদহ জেলা বিএনপি’র সভাপতি মসিউর রহমানর বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলার রায় ও গ্রেফতারের প্রতিবাদে ঝিনাইদহে অর্ধদিবস হরতালের ডাক দিয়ে মাঠে নেই বিএনপি। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অর্ধদিবস এ হরতালের ডাক দেয় জেলা বিএনপি। সকাল থেকে মাঠে দেখা যায়নি বিএনপি নতো কর্মীদের। এমনকি কোন ধরনের পিকেটিংও চোখে পড়েনি। অন্যদিকে বিশৃঙ্খলা ও নাশকতা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহীনিকে শহরের মোড়ে মোড়ে সতর্ক অবস্থায় দেখা গেছে। ঝিনাইদহ থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে হালকা ও ভারী যানবাহন স্বাভাবিকভাবে চলাচল করছে। দোকান-পাট খোলা, ব্যাক, বীমা, অফিস আদালত, স্কুল কলেজ চলছে। জনজীবণ স্বাভাবিক রয়েছে। এদিকে হরতালের প্রতিবাদে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌরসভা মেয়র সাইদুল করিম মিন্টুর নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিলসহ নানা-কর্মসূচী নিয়ে মাঠে অবস্থান করছে জেলা আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মী ও তার বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনগুলো। বুধবার সকাল ১১ টার দিকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলার দুটি ধারায় যশোরের স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক নিতাই চন্দ্র সাহা মসিউর রহমানকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেন। একই সঙ্গে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা ও ১০ কোটি ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৩৩০ টাকার সম্পদ বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এর মধ্যে ২৬ (২) ধারায় তথ্য গোপনের অভিযোগ তিন বছরের কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা; ২৭ (১) ধারায় ৭ বছরের কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদন্ডের আদেশ দেওয়া হয়। উল্লেখ্য, মসিউর রহমানের জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিবিহীন প্রায় ১০কোটি ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৩৩০ টাকার সম্পদ অবৈধভাবে অর্জনের অভিযোগে ২০০৮ সালের ১৪ ডিসেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয় কুষ্টিয়ার তৎকালীন সহকারী পরিচালক মোশারফ হোসেন মৃধা মামলা দায়ের করেন। ২০০৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর মামলাটি তদন্ত শেষে মসিউর রহমানকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা ও দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে যশোরের উপ-পরিচালক মো: নাসির উদ্দিন। যার নম্বর ৩৮৮। ২০০৯ সালের শেষের দিকে ঝিনাইদহ সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত মামলাটি আমলে নেন। আমলযোগ্য মামলাটির বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে প্রসিডিং কোয়াসমেন্টের জন্য আবেদন করেন মসিউর রহমান। এরপর ২০১০ সালের ৬ জুন উচ্চ আদালত মামলাটির পরবর্তী কার্যক্রম স্থগিত করেন। যার নম্বর ক্রিমিনাল মিসকেস নম্বর ১৬৬/৭১/২০১০। চার বছর পর ২০১৪ সালের ১৭ এপ্রিল উচ্চ আদালত আসামির মকর্দ্দমা খারিজ করে স্থগিতাদেশ বাতিল করেন। একই সঙ্গে স্পেশাল জজ আদালত যশোরকে মামলার কার্যক্রম আইন অনুযায়ী পরিচালনার নির্দেশ দেন। এরপর আসামি পক্ষের বিভিন্ন সময়ের আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০১৫ সালের ১ ফেব্র“য়ারি আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি শুরু হয়। অভিযোগ গঠনের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে লিভ টু আপিল (যারা নম্বর ৩৩২/১৪) দাখিল করেন আসামি। পরবর্তীতে লিভ টু আপিল খারিজ হয়ে গেলে পুনরায় সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ পিটিশন ৭৪/১৫ দাখিল করেন। রিভিউ পিটিশন খারিজ হলে বিচার কাজ শুরু হয়। পুনরায় আয়কর আইনের বিরুদ্ধে ৪৩৩৭/১৬ রিট পিটিশন দাখিল করেছেন উচ্চ আদালতে। সেখানে এই মামলার বিষয়টিও অর্ন্তভুক্ত করা হয়। এদিকে, ১৬ অক্টোবর আদালতে দুই পক্ষের আইনজীবীর যুক্তি তর্ক উপস্থাপন সম্পন্ন হয়। এরপর আদালত নির্ধারিত দিনে ২৫ অক্টোবর মামলার রায় ঘোষিত হয়। রায় ঘোষণার পর আদালত বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য মসিউর রহমানকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
×