ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ভারতে পাচারকারীকে ধরিয়ে দিয়েল এক তরুণ

প্রকাশিত: ১৯:৪৪, ২৪ অক্টোবর ২০১৭

ভারতে পাচারকারীকে ধরিয়ে দিয়েল এক তরুণ

অনলাইন ডেস্ক ॥ কাজ দেওয়ার নাম করে ভিন্ রাজ্যে পাচার করে দেওয়া হয়েছিল মেয়েটিকে। মাস আটেক পরে বহু কষ্টে কোনওক্রমে বাড়ি ফিরেছিল সেই নাবালিকা। কিন্তু ঘরে ফিরে দেখে, পাড়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছে তারই পাচারকারীরা। এর পরেই পুলিশের কাছে হাজির হয় মেয়েটি। চিনিয়ে দেয় দুষ্কৃতীদের। ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম বন্দর থানা এলাকার ব্রুক লেনে। ওই নাবালিকার অভিযোগের ভিত্তিতে দুই দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করেছে পশ্চিম বন্দর থানার পুলিশ। ধৃতদের নাম শেখ সেলিম এবং জিকু মোল্লা। ধৃতেরা বন্দর এলাকার বাসিন্দা। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শিশু যৌন নির্যাতন বিরোধী আইন, নাবালিকাকে পাচার করা-সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ধৃতদের সোমবার আলিপুর আদালতে পেশ করা হলে বিচারক তাদের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। অভিযোগকারী নাবালিকাকে তার পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছে রাজ্য শিশু কমিশন। তদন্তকারীদের দাবি, ধৃতেরা আন্তঃরাজ্য নারী পাচার চক্রের সঙ্গে যুক্ত। পুলিশ জানায়, অভিযোগকারী তেরো বছরের নাবালিকা পশ্চিম বন্দর থানা এলাকার বাসিন্দা। এক বছর আগে কাজ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে তাকে বেঙ্গালুরুতে নিয়ে যায় শেখ সেলিম এবং জিকু মোল্লা। এলাকার পরিচিত মুখ হওয়ায় তার পরিবারের তরফে আপত্তি করা হয়নি বলে পুলিশকে জানিয়েছে ওই নাবালিকা। তার অভিযোগ, ধৃতেরা প্রথমে তাকে নিয়ে গিয়ে বেঙ্গালুরুর আন্দ্রাহালি বলে একটি জায়গার এক বহুতলে আটকে রাখে। পরে তাকে দেহ ব্যবসায় নামতে বাধ্য করে দুষ্কৃতীরা। পুলিশের কাছে ওই নাবালিকার অভিযোগ, তাকে ওই ভাবে প্রায় আট মাস আটকে রাখার পরে এক ব্যক্তির সাহায্যে কলকাতায় পালিয়ে আসে সে। রবিবার ওই এলাকায় ফের সে শেখ সেলিম এবং জিকু মোল্লাকে ঘুরে বেড়াতে দেখে। তার পরেই সে পুলিশের দ্বারস্থ হয়। তদন্তকারীরা জানান, গত বছর নভেম্বর মাসে ওই নাবালিকাকে পাচারের পরে কোন অভিযোগ করেনি পরিবার। এমনকী, সে ফিরে আসার পরেও পুলিশের খাতায় কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। কেন তাঁরা ওই সময়ে অভিযোগ করলেন না, সে বিষয়েও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রের খবর, রবিবার অভিযোগ পাওয়ার পরেই ব্রুক লেনে তল্লাশি চালায় পুলিশ। সেখান থেকেই ওই দুই দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতেরা জানিয়েছে, ওই এলাকার বেশ কয়েক জন নাবালিকাকে মোটা টাকায় কাজ পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভিন্ রাজ্যে নিয়ে যেতে তারা। সেই ফন্দিতেই তারা এলাকায় এসেছিল। অভিযোগকারী ওই নাবালিকা ছাড়াও আরও পাঁচ জন মহিলাকে ধৃতেরা গত কয়েক বছরে পাচার করেছে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানতে পরেছেন, ওই এলাকার আর্থিক ভাবে দুর্বল পরিবারের নাবালিকাদের নিশানা বানাত পাচারকারীরা। তাদের পরিচারিকার কাজ দেওয়া হবে বলে ভিন্ রাজ্যে নিয়ে গিয়ে দেহ ব্যবসায় নামতে বাধ্য করা হত। এক তদন্তকারী অফিসার বলেন, ‘‘ধৃতদের জেরা করে ওই চক্রের আরও কয়েক জনের নাম পাওয়া গিয়েছে। তারাই ওই দুই ধৃত দুষ্কৃতীকে এই কাজে সাহায্য করত।’’ সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
×