ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ইউনিয়ন পরিষদের সক্ষমতা বাড়াতে ভূমিকা রেখেছে ইউপিজিপি

প্রকাশিত: ০২:০৯, ২২ অক্টোবর ২০১৭

ইউনিয়ন পরিষদের সক্ষমতা বাড়াতে ভূমিকা রেখেছে ইউপিজিপি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ইউনিয়ন পরিষদের ওয়ার্ড সভা, স্থায়ী কমিটি ও উন্মুক্ত বাজেট সভা অধিকতর কার্যকর ও শক্তিশালীকরণ, পরিষদের উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং বাজেট প্রণয়নে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ইউনিয়ন পরিষদ গভর্ন্যান্স প্রজেক্ট (ইউপিজিপি) ২০১২-২০১৭ মেয়াদে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আজ রবিবার “ইউনিয়ন পরিষদ গভর্ন্যান্স প্রজেক্ট এর অর্জিত ফলাফল, উদ্ভাবন, উত্তম চর্চা, শিখন ও অভিজ্ঞতা” শীর্ষক এক সমাপনী কর্মশালায় বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন। স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক গৃহিত ইউনিয়ন পরিষদ গভর্ন্যান্স প্রজেক্ট (ইউপিজিপি) এর বাস্তবায়ন শেষে রাজধানীর বিয়াম ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে এ সমাপনী কর্মশালার আয়োজন করে। স্থানীয় সরকার বিভাগের মাধ্যমে সরাসরি বাস্তবায়িত পাঁচ বছর মেয়াদী এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১২ সালে। ইউএনডিপি, ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন, ডানিডা ও ইউএনসিডিএফ এ প্রকল্পে আর্থিক ও কারিগরী সহায়তা প্রদান করে। প্রকল্পটি ৭টি বিভাগের ৭টি জেলা - কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিরাজগঞ্জ, বরগুনা, খুলনা, সুনামগঞ্জ ও রংপুর এর ৫৬৪টি ইউনিয়নে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। প্রকল্পের সমাপনী এ কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবদুল মালেক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউএনডিপি-বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর মি. সুদীপ্ত মূখার্জী ও ইউরোপিয়ান ডেলিগেশন-বাংলাদেশ-এর গভর্ন্যান্স টীম লিডার, মিজ ওড্রে মেইলট। স্থানীয় সরকার বিভাগ এর অতিরিক্ত সচিব ইকরামুল হক এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ কর্মশালায় “ইউনিয়ন পরিষদ গভর্ন্যান্স প্রজেক্ট” কর্তৃক অর্জিত ফলাফল, উত্তম চর্চা, শিখন ও অভিজ্ঞতাসমূহ তুলে ধরেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. সালাহউদ্দিম এম আমিনুজ্জামান। কর্মশালায় মাঠ পর্যায়ে নিয়োজিত সরকারী কর্মকর্তা, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও প্রকল্পের সুবিধাভোগী জনগণ তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। প্রকল্পের সমন্বয়কারী মো: অলিউল্লাহ কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবদুল মালেক বলেন, “ইউপিজিপি স্থানীয় সরকার বিভাগের একটি “ফ্ল্যাগশীপ” প্রকল্প যা নির্ধারিত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য মানসম্মতভাবে অর্জন করেছে। প্রকল্পটির মাধ্যমে স্থানীয় সুশাসন ও বিকেন্দ্রীকরণের ওপর ২০টি নীতি সমীক্ষা পরিচালনা করা হয়েছে। যেগুলোর কয়েকটি সুপারিশমালা সরকারের সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।” তিনি আরো বলেন, “এ প্রকল্প ওয়ার্ড সভা, স্থায়ী কমিটি, উন্মুক্ত বাজেট অধিবেশন ইত্যাদি জনঅংশগ্রহণের মাধ্যমে সক্রিয়করণ এবং ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ কার্যক্রম পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ৪৬৩০টি এমডিজি সংশ্লিষ্ট উন্নয়ন স্কিম বর্ধিত থোক বরাদ্দের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হয় এবং ইউনিয়ন পরিষদের জন্য ওয়েব-বেইজড তথ্য ব্যাবস্থাপনা পদ্ধতি বা এমআইএস পাইলট ভিত্তিতে প্রকল্পভুক্ত ৫৬৪টি ইউনিয়ন পরিষদে প্রবর্তন করা হয়। এছাড়াও, প্রকল্প এলাকায় নির্বাচিত নারী জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে নারীর ক্ষমতায়নে নারী উন্নয়ন ফোরাম গঠন করা হয়।” প্রকল্পের বিভিন্ন কার্যক্রমের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন “প্রকল্পের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার বিভাগ ও ইউনিয়ন পরিষদের জন্য ৫টিরও বেশী গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট প্রণয়ন করা হয়েছে যেমন- ইউনিয়ন পরিষদের পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা ও বাজেট বই, ইউনিয়ন পরিষদের জন্য আদর্শ কর তফসিল অনুযায়ি কর নির্ধারণ বই, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের জন্য সক্ষমতা উন্নয়ন কাঠামো, ইউনিয়ন পরিষদের জন্য এসডিজি ম্যানুয়াল, স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯, বিধি, প্রবিধি ও গুরুত্বপূর্ণ সার্কুলার ইত্যাদি একত্রিত করে সংকলন বই এবং কয়েকটি নীতিমালা খসড়া প্রণয়ন করেছে যা ইতোমধ্যে গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়েছে।” বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইউএনডিপি-বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর সুদীপ্ত মূখার্জী স্থানীয় সরকার সংস্কার বিষয়ে সমন্বিত স্থানীয় সরকার কাঠামো প্রণয়ন, আর্থিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন ও আন্তঃসরকার আর্থিক বরাদ্দ ও স্থানান্তর নীতি ও সামাজিক নিরীক্ষাসহ সাতটি সুপারিশ প্রদান করেন।
×