ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

মেহেরপুরে শত্রু পোকা নিধনে আলোক ফাঁদে আগ্রহী কৃষকরা

প্রকাশিত: ২৩:৪৯, ২২ অক্টোবর ২০১৭

মেহেরপুরে শত্রু পোকা নিধনে আলোক ফাঁদে আগ্রহী কৃষকরা

সংবাদদাতা, মেহেরপুর ॥ ফসলে শত্রু পোকা নিধনে কীটনাশক বিষ প্রয়োগের বদলে চাষীরা এখন আলোক ফাঁদ পদ্ধতির মাধ্যমে ফসলকে পোকামুক্ত করা শুরু করেছে। আর্থিক সাশ্রয় ও সহজ হওয়ায় এই পদ্ধতি চাষীদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। জেলা কৃষি বিভাগ বলছে, আলোক ফাঁদ একদিকে চাষিদের ফসল থেকে পোকা নিধনে সহায়তা করবে অন্যদিকে বিভিন্ন প্রজাতির পোকার পরিচিতিও পাওয়া সম্ভব হবে। একটা সময় ছিল যখন ফসলে আক্রমনকারী বিভিন্ন জাতীয় ক্ষতিকর পোকা নিধনের জন্য ফসলে বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক বিষ প্রয়োগ করতে হতো। এটা চাষীদের জন্য যেমন ব্যায়বহুল তেমনি ফসলের জন্য ছিলো ক্ষতিকর। কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও চাষীদের উদ্ভাবনে মেহেরপুরে আলোক ফাঁদ পদ্ধতির মাধ্যমে ফসলের জমিতে আক্রমনকারী শত্রু পোকা নিধন করা হচ্ছে। পাশাপাশি এই ফাঁদের মাধ্যমে ফসলী জমিতে কত প্রকার শত্রু ও বন্ধু পোকা রয়েছে, সেটা নির্ণয় করা যায় বলে কৃষিবিভাগের দাবী। একটি পাত্রে কাপড় কাচার সাবান অথবা পাউডার মিশ্রিত পানি এবং তার ৩ ফুট উচ্চতায় একটি বৈদ্যুতিক বাতি জ্বালিয়ে রাত্রে এই ফাঁদ তৈরী করতে হয়। আলো দেখে পোকা সেখানে জড়ো হয় এবং একপর্যায়ে সাবান মিশ্রিত পানিতে আটকে যায়। এভাবেই ফসলী জমিতে ব্যবহৃত শত্রু পোকামুক্ত পদ্ধতি মেহেরপুরে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। মেহেরপুরের বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে এই পদ্ধতিতে ফসল থেকে পোকা নিধনে চাষিদের মাঝে ব্যপক আগ্রহ রয়েছে। মেহেরপুর মুজিবনগর উপজেলার রশিকপুর গ্রামের চাষি আবু হানিফ, হাসেম সহ আরো অনেক চাষি জানান, আলোক ফাঁদের মাধ্যমে শুধু শত্রু পোকা নিধনই নয়, সহজেই শত্রু ও বন্ধু পোকা নির্ণয় করে তাঁর প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যায়। মেহেরপুর সদর উপজেলার উজলপুর গ্রামের চাষি রশিদুল ইসলাম, ফলেজ আলী সহ আরো অনেক চাষি জানান, এই পদ্ধতিতে ধানের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর পোকাকে সহজেই নিয়ন্ত্রনে আনা যায়। সহজ ব্যায়মুক্ত ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় এই পদ্ধতি এখন চাষীদের মধ্যে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। মেহেরপুর মুজিবনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোফাকখারুল ইসলাম জাননা, কৃষককে আলোক ফাঁদ পদ্ধতি ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। এতে কৃষক শত্রু ও বন্ধু পোকাকে চিনতে পারে এবং ফসলকে সহজেই শত্রু পোকামুক্ত করতে পারে। মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে চাষিদের ফসলে কোন পোকা আত্রমণ করতে পারবে না ফলে, জমির ফসল কীটনাশক বিষমুক্ত হয়। এতে একদিকে ফসল ভালো থাকবে অন্য দিকে চাষিদের ফসল আরো অনেক বৃদ্ধি পাবে। চাষিরাও আর্থিকভাবে লাভবান হবে।
×