ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রিয়ালের প্রতিপক্ষ আজ এইবার

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ২২ অক্টোবর ২০১৭

রিয়ালের প্রতিপক্ষ আজ এইবার

জিএম. মোস্তফা ॥ গত মৌসুমটা সোনায় মোড়ানো ছিল রিয়াল মাদ্রিদের। লা লিগা, চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ছাড়াও একের পর এক শিরোপা উচ্ছ্বাসে মেতেছে তারা। কিন্তু চলতি মৌসুমের শুরুতেই যেন খেই হারিয়ে ফেলে জিনেদিন জিদানের দল। বিশেষ করে নিজেদের ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে এই মৌসুমে একটি মাত্র ম্যাচ জিতেছে তারা। আজ আবারও বার্নাব্যুতে মাঠে নামছেন রোনাল্ডো-বেনজামারা। প্রতিপক্ষ তুলনামূলক খর্বশক্তির দল এইবার। এই ম্যাচে অবশ্য জয়ের বিকল্প ভাবছেন না রিয়াল মাদ্রিদের ফরাসী কোচ জিনেদিন জিদান। মৌসুমের প্রথম ৮ ম্যাচ থেকে পাঁচ জয় ২ ড্র আর বাকিটিতে হারায় ১৭ পয়েন্ট নিয়ে লীগ টেবিলের তৃতীয় স্থানে অবস্থান করছে রিয়াল মাদ্রিদ। সমান সংখ্যক ম্যাচ থেকে ২২ পয়েন্ট নিয়ে সবার ওপরে যথারীতি তাদেরই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সিলোনা। আর এইবারের অবস্থান ষোলোতে। দুই জয় এক ড্র আর বাকি পাঁচ ম্যাচেই পরাজয়ের স্বাদ পেয়েছে তারা। রিয়ালের বিপক্ষেও অতীত ইতিহাস সুখকর নয় তাদের। কেননা ছয়বারের মুখোমুখি লড়াইয়ে পাঁচটিতেই জয় পেয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। আর বাকি ম্যাচটি ড্র। ২০১৬ সালের অক্টোবরে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর সেই ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়েছিল। তাই জিনেদিন জিদান অবশ্য সতর্ক থেকেই এইবারের বিপক্ষে মাঠে নামার পরামর্শ দিবেন তার শিষ্যদের। রিয়াল মাদ্রিদ আজ পূর্ণশক্তির দল নিয়েই মাঠে নামবে। লস ব্ল্যাঙ্কোসদের সমর্থকদের স্বস্তির খবর হলো চোট কাটিয়ে অনুশীলনে ফিরেছেন ওয়েলস তারকা গ্যারেথ বেল। এই ম্যাচে না খেললেও চ্যাম্পিয়ন্স লীগে তার সাবেক ক্লাব টটেনহ্যাম হটস্পারের বিপক্ষে ফিরতি ম্যাচেই খেলতে পারবেন বেল। এদিকে গত জুনে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনালে শিরোপা জিতেছিল ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর রিয়াল। হারিয়েছিল জুভেন্টাসকে। আসরে প্রাইজমানি ও রাজস্ব বাবদ রিয়াল জেতে ৮ কোটি ১০ লাখ ৫১ হাজার ইউরো। কিন্তু শিরোপা জিতেও আয়ের দিক থেকে রানার্সআপ জুভেন্টাসের পিছনে পড়ে গেছে রিয়াল। শুধু তাই নয় রিয়ালকে পিছনে ফেলেছে লিচেস্টার সিটিও। আয়ের দিক থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়েও রিয়ালের অবস্থান তিন নম্বরে। উয়েফা প্রকাশিত ২০১৬-১৭ মৌসুমে আয়ের হিসেব প্রকাশিত হওয়ার পর এই তথ্য বের হয়ে এসেছে। সবার ওপরে থাকা জুভেন্টাসের আয় ১১ কোটি চার লাখ ৩৪ হাজার ইউরো। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা লিচেস্টার আয় করেছে ৮ কোটি ১৬ লাখ ৮১ হাজার ইউরো। মূলত উয়েফার মার্কেট পুল নীতির কারণেই আয়ের এমন তারতম্য হয়েছে। এসবের মধ্যে টিভি স্বত্বের বাজার থেকে বড় একটি লভ্যাংশ এসে থাকে। সেটা নির্ধারণ করা হয় দুটি বিষয় মাথায় রেখে। প্রথমত আসরে দল কয়টি ম্যাচ খেলেছে, দ্বিতীয়ত ঘরোয়া চ্যাম্পিয়নশিপে দলের অবস্থান। আয়ের দিক থেকে শীর্ষ পাঁচ ক্লাবের মধ্যে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে নেপোলি। ইতালিয়ান সিরি’এ লীগের দলটি আয় করেছে ছয় কোটি ৬০ লাখ নয় হাজার ইউরো। পঞ্চম অবস্থানে থাকা ফ্রেঞ্চ লীগ ওয়ানের মোনাকোর আয় ৬ কোটি ৪৬ লাখ ৮৬ হাজার ইউরো। তবে এসবে খুব বেশি মনোযোগী নাই রিয়াল মাদ্রিদের। তারা দলকে শক্তিশালী করতেই মরিয়া। সেজন্য ব্রাজিলের বিস্ময় বালক আলান সুজাকে কিনে নিয়েছে স্প্যানিশ জায়ান্টরা। স্প্যানিশ দৈনিক এএস এর দাবি, সবকিছু ঠিক থাকলে চুক্তি অনুযায়ী ২০১৮ সালেই রিয়াল মাদ্রিদের ‘বি’ দল কাস্তিল্লার সঙ্গে যোগ দেবেন আলান। পালমেইরাসের যুব দলে খেলেন আলান। ব্রাজিলের অনুর্ধ-১৭ দলেরও নিয়মিত সদস্য তিনি। কিন্তু ক্লাবটির সঙ্গে তার চুক্তির মেয়াদ ২০১৯ সাল পর্যন্ত। এ কারণেই রিলিজ ক্লজ বাবদ পাঁচ কোটি ইউরো গুনতে হচ্ছে রিয়াল মাদ্রিদকে। বাংলাদেশী মুদ্রায় যা প্রায় ৪৮৭ কোটি টাকা। শুধু আলান নয়, রিয়াল মাদ্রিদ কিনতে আগ্রহী টটেনহ্যামের হ্যারি কেনকেও। স্পার্শদের এই তারকা ফুটবলারের জন্য ২০০ মিলিয়ন বিড করার প্রস্তুতি নিচ্ছে রিয়াল। কিন্তু হ্যারি কেন শেষ পর্যন্ত স্প্যানিশ ক্লাবটিতে যোগ দেন কি না তা নিয়ে রয়েছে সংশয়। কেননা রোল মডেল হলেও রোনাল্ডোর সঙ্গে খেলতে চান না তিনি। এ বিষয়ে কেন বলেন, ‘আমি ওয়ান ক্লাব ম্যান হতে চাই। সবকিছু নির্ভর করে আপনার প্রতি ক্লাব ও কোচের দৃষ্টিভঙ্গির ওপর। আমি আগেও বলেছি আমি এখানেই থাকতে চাই। এখানে খুব ভাল আছি আমি। আমাদের অনুশীলনের মাঠটা অসাধারণ। নতুন স্টেডিয়ামও বানানো হচ্ছে। দলের ম্যানেজারও দুর্দান্ত। নিঃসন্দেহে এটা সবার জন্য ভাল। আমার ধ্যান-ধারণা টটেনহ্যামকে ঘিরেই।’ টটেনহ্যাম ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদের মতো বড় ক্লাবে কেন যেতে চান না? জবাবে ২৪ বছর বয়সী কেন বলেন, ‘ফুটবলে কখন কি ঘটে তার কোন নিশ্চয়তা নেই। তবে আমি বলতে পারি, টটেনহ্যাম আমার ঘর। আমি এখানেই বড় হয়েছি। ভবিষ্যতে সকল শিরোপা এই ক্লাবের হয়েই জিততে চাই।’ চলতি মৌসুমে শুরুটা দুর্দান্ত হয়েছে কেনের। ১৫ ম্যাচ খেলে ১৫ গোল করে তার ইঙ্গিতটাও দিয়েছেন ভাল করেই। অসাধারণ পারফর্মেন্সের কারণেই ইউরোপের শীর্ষ ক্লাবগুলো তাকে দলে পেতে আগ্রহী হয়েছে।
×