ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় নোম্যান্স ল্যান্ডে ১৬ হাজার রোহিঙ্গা

রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে কালক্ষেপণের কৌশল মিয়ানমারের

প্রকাশিত: ০৫:২৫, ২২ অক্টোবর ২০১৭

রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে কালক্ষেপণের কৌশল মিয়ানমারের

হাসান নাসির/এইচএম এরশাদ ॥ বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে জাতিসংঘসহ বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থার চাপ থাকলেও তা কাজ করছে না মিয়ানমার সরকারের ওপর। স্টেট কাউন্সিলর আউং সান সুচির কয়েক দফা আশ্বাস এবং এক মন্ত্রীর বাংলাদেশ সফর বাদ দিলে ইতিবাচক কোন অগ্রগতি নেই। চাপের মুখে দেশটি কালক্ষেপণের কৌশল নিয়েছে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা। কেননা, আশ্বাস এবং বিতাড়ন দুটিই চলছে একসঙ্গে। রোহিঙ্গা সমস্যা মিয়ানমারের একান্ত অভ্যন্তরীণ হলেও এর ধকল এসে পড়েছে বাংলাদেশের ওপর। প্রশ্ন উঠেছে, রাষ্ট্রহীন এ জনগোষ্ঠীর চাপ একটি দেশ এককভাবে বইবে কেন? এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃঢ় ও কার্যকর পদক্ষেপ প্রত্যাশা করছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সঙ্কটের দায় শুধুমাত্র দরিদ্র বাংলাদেশের ওপর না চাপিয়ে সবারই এ বিষয়ে যৌথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে মনে করে সংস্থাটি। এদিকে, খুব অল্প সময়ের মধ্যে প্রায় ছয় লাখ রোহিঙ্গা এসে পড়ায় কক্সবাজারের টেকনাফ এবং উখিয়ায় এক ধরনের বিপর্যয়কর পরিস্থিতি সৃষ্টির উপক্রম হয়েছে। শুধুমাত্র গাছ কেটে গৃহ নির্মাণেই শেষ নয়, প্রতিদিনের রান্নাবান্নার কাঠ সংগ্রহে বিরান হচ্ছে বনভূমি। প্রতিদিনই কাটা হচ্ছে গাছ। অন্তত তিন হাজার একর পাহাড় ও বনাঞ্চল বৃক্ষশূন্য হওয়ার পথে। এমতাবস্থায় উদ্বিগ্ন পরিবেশ রক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো। শুধু পরিবেশ নয়, ভোগ্যপণ্যের বাজারের ওপরও পড়েছে বাড়তি চাপ। এতে মূল্য বাড়ছে তরিতরকারিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যাদির। রোহিঙ্গারা ত্রাণসামগ্রী পেলেও বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন স্থানীয় অধিবাসীরা। শনিবারও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটেছে অন্যান্য দিনের মতোই। স্রোত কমার অর্থ এই নয় যে, তাদের সীমান্ত পাড়ি দেয়ার প্রবণতা কমেছে। বরং রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গার সংখ্যা কমে যাওয়ায় এখন প্রবাহ কিছুটা কম মনে হচ্ছে। রাখাইন থেকে এখন যারা আসছে তারাও স্বীকার করছে যে, নির্যাতন এখন তেমন নেই। পাড়ায় পাড়ায় মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অবস্থান এবং টহলও আগের মতো নয়। কিন্তু তারপরও কেন তারা এ পারে আসছে- এ প্রশ্নের জবাবে তাদের বক্তব্য, সেখানে দুই বেলা খেয়ে বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। জীবিকার অবলম্বনও নেই। রাখাইনে কঠিন অবস্থা এবং বাংলাদেশে মোটামুটি সুব্যবস্থা। সার্বিক বিবেচনায় তারা নাফ নদী অতিক্রম করছে। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে মিয়ানমারের আশ্বাসবাণী ছাড়া কার্যকর পদক্ষেপ না থাকায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে অনিশ্চয়তা ক্রমেই বাড়ছে। দিন যতই গড়াচ্ছে ততই টেকনাফ এবং উখিয়ায় রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনে কার্যক্রমও বৃদ্ধি পাচ্ছে। শঙ্কা এখানেই যে, পুরোপুরি পুনর্বাসিত হয়ে গেলে এ রোহিঙ্গারা শেষ পর্যন্ত ফিরতে রাজি হবে কি-না। বায়োমেট্রিক নিবন্ধন প্রক্রিয়া চলমান থাকলেও বাংলাদেশকে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করতে চায় এমন অনেক রোহিঙ্গাই নিবন্ধিত হতে অনাগ্রহী। অনেকেই ছড়িয়ে পড়ছে কক্সবাজারের বাইরেও। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে নানা আন্তর্জাতিক তৎপরতার পাশাপাশি তাদের জন্য ঘরবাড়ি, হাসপাতাল, স্কুল, স্যানিটেশনসহ নানান নাগরিক সুবিধা সৃষ্টির প্রক্রিয়া চলমান থাকায় তাদের অবস্থান দীর্ঘস্থায়ী হতে চলেছে কি-না সে আশঙ্কা ক্রমেই বদ্ধমূল হচ্ছে। নতুন আসা রোহিঙ্গাদের জীবনাচারেও পরিবর্তন ঘটছে। তাদের বসবাস এখন অনেকটা আয়েশে নিজ দেশে থাকার মতোই। শনিবার মুদি দোকান বসাতে বাধা দেয়ায় এক রোহিঙ্গা নারী পুলিশের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটিয়েছে। রোহিঙ্গাদের দায়িত্ব বাংলাদেশের ওপর না চাপানোর আহ্বান মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সঙ্কটের কারণে যে ছয় লাখ রোহিঙ্গা পালিয়েছে তাদের দায়িত্ব এককভাবে বাংলাদেশের ঘাড়ে চেপে বসা সঙ্গত নয় বলে মনে করছে মানবাধিকার সংস্থা এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সংস্থাটি উপলব্ধি করছে যে, বাংলাদেশের মতো দরিদ্র এবং আয়তনে ক্ষুদ্র দেশের পক্ষে এ বোঝা বহন করা খুবই কঠিন। সে কারণে যুক্তরাজ্যভিত্তিক এ মানবাধিকার সংগঠন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে। ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এ্যামনেস্টির সাউথ এশিয়ার ডেপুটি পরিচালক ওমর ওয়ারাচ বলেছেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে অসাধারণ উদারতার পরিচয় দিয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু এ দায়িত্ব এককভাবে ছোট এ দেশটির ওপর চাপানো যাবে না। রোহিঙ্গা নিয়ে যে সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে তা নিরসনে সবার যৌথ উদ্যোগ প্রয়োজন। বিষয়টি শুধু বাংলাদেশের সমস্যা নয়, ওই অঞ্চলের অন্য দেশগুলোকেও বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে হবে, এ দায়িত্ব ভাগাভাগি করে নিতে হবে। পাশাপাশি রোহিঙ্গা সঙ্কটের সমাধান না হলে উগ্রপন্থার উত্থানের আশঙ্কাও করেছে সংস্থাটি। এ সমস্যার সমাধান না করলে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী কোন এক সময়ে উগ্রপন্থা অবলম্বনে উদ্বুদ্ধ হতে পারে। যদি তেমন হয় তাহলে তা কারও জন্যও সুখকর হবে না বলে বিবৃতিতে সতর্ক করে দেয়া হয় । আন্তর্জাতিক চাপ কাজ করছে না মিয়ানমারের ওপর রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনে এবং বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারীদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার সরকারের ওপর জাতিসংঘ এবং বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার চাপ সেভাবে ফলপ্রসূ হচ্ছে না। এ পর্যন্ত সুচি কয়েক দফায় আশার বাণী শুনিয়েছেন, পাঠিয়েছেন তার দফতরের এক মন্ত্রীকে। এর বাইরে তেমন কোন অগ্রগতি নেই। তবে বাংলাদেশ থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন একটি প্রতিনিধি দল মিয়ানমার সফর করবে। তাতেও কেমন ফল আসে তা নিয়ে সংশয় মিয়ানমার সরকারের আন্তরিকতার প্রতিফলন না থাকায়। কেননা, এমন আশ্বাসের মধ্যেও বাংলাদেশমুখী রোহিঙ্গা স্রোত বন্ধ হয়নি। চীনা কমিউনিস্ট পার্টির উপপ্রধান গিউ ইয়েজেউ আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে বলেছেন, তার দেশ মিয়ানমারের স্থিতিশীলতা চায়। সেখানে অস্থিতিশীলতা বজায় থাকলে তার নেতিবাচক প্রভাব চীনের ওপরও পড়বে। কারণ, মিয়ানমারের সঙ্গে চীনের অনেক দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। তবে সে দেশের সরকারের ওপর বৈদেশিক চাপ কাজ করছে না বলেও তিনি স্বীকার করেন। চীন কেন চাপ দিচ্ছে না- এমন প্রশ্নের জবাবে গিউ বলেন, অন্য কোন দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা চীনের নীতি নয়। তবে আমরা যে কোন ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকা-ের বিরুদ্ধে। আমরা চাই মিয়ানমার সরকার নিজেই উপলব্ধি করে এ সমস্যার সমাধানে সচেষ্ট হোক। রান্নার কাজে প্রতিদিন লাগছে ৫ লাখ কেজি লাকড়ি মিয়ানমার থেকে আসা ছয় লাখ রোহিঙ্গা বনের গাছ ও বাঁশ কেটে তৈরি করেছে থাকার ঘর। কিন্তু এখানেই শেষ নয়, রান্নাবান্নার জন্য প্রতিদিনই লাগছে অন্তত পাঁচ লাখ কেজি লাকড়ি। বিভিন্ন ধরনের ত্রাণসামগ্রী সরবরাহ করলেও লাকড়ি তো আর ত্রাণ হিসেবে আসছে না। ফলে প্রতিদিনই কাটা হচ্ছে বনাঞ্চলের গাছ। এতে পাহাড়ের পর পাহাড় বৃক্ষশূন্য হওয়ার উপক্রম। বাংলাদেশ পরিবেশ অধিদফতরও এ বিষয়ে উদ্বিগ্ন। কক্সবাজার পরিবেশ অধিদফতরের সহকারী প্রকৌশলী সাইফুল এরশাদ এ উৎকণ্ঠার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, খাদ্যসহ ভোগ্যপণ্যের ত্রাণ এলেও জ্বালানির জন্য বনজ কাঠই ভরসা। সে কারণে গাছ কাটা হচ্ছে। এর থেকে উত্তরণের পথ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা রাখাইন থেকে এসে অনেকেই অস্থায়ীভাবে পাহাড়ে আবাসন গেড়েছে। সরকারীভাবে তাদের সেখান থেকে সরিয়ে নির্ধারিত ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হবে। এরপর পাহাড়গুলোতে নতুন করে গাছ লাগাতে হবে। পুলিশকে পেটাল রোহিঙ্গা নারী মুদি দোকান বসানোর চেষ্টা বাধাপ্রাপ্ত হওয়ায় ক্ষুব্ধ এক রোহিঙ্গা নারী পিটিয়েছে এক পুলিশ কর্মকর্তাকে। শনিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে কক্সবাজারের টেকনাফের নয়াপাড়া এলাকায়। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি ব্লকের কাছাকাছি একটি জায়গায় দোকান বসানোর চেষ্টা করে দিলবাহার নামের এক রোহিঙ্গা নারী। এতে বাধা দেন সিভিল পোশাকে থাকা পুলিশের এসআই কবির আহমেদ। তিনি ছিলেন সেখানে স্থাপিত ফাঁড়ির ইনচার্জ। ক্ষিপ্ত হয়ে রোহিঙ্গা নারী দিলবাহার হামলা চালায় ওই এসআইয়ের ওপর। এলোপাতাড়ি পিটুনিতে আহত হন পুলিশের এ কর্মকর্তা। পরে তাকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই রোহিঙ্গা নারীর স্বামীর নাম সৈয়দ আহমদ। এ ঘটনায় ওই নারীসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে। ভোগ্যপণ্যের বাজারে মূল্যবৃদ্ধি নতুন ও পুরনো ১০ লাখ রোহিঙ্গার কারণে দুর্গতির মধ্যে রয়েছে উখিয়া ও টেকনাফের প্রায় পাঁচ লাখ স্থানীয় লোকজন। নিত্যপণ্যের দামে উর্ধগতি, যানবাহনের ভাড়া বৃদ্ধি, পড়ালেখায় বিঘœ সৃষ্টি, পরিবেশ বিপর্যয়সহ নানান রোগবালাইয়ের প্রাদুর্ভাবসহ জনজীবন বিপর্যস্ত হওয়ার পথে। স্থানীয় বাজারে স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। প্রতি কেজি ৭০ টাকার নিচে কোন তরকারি নেই। রোহিঙ্গা স্রোতের পর থেকেই দাম বাড়ছে হু হু করে। পালংখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, মানবিক কারণে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের জন্য ভোগান্তি সহ্য করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তিনি জানান, তার ইউনিয়নে স্থায়ী বাসিন্দার সংখ্যা ৫০ হাজার। সেখানে তিন থেকে চার লাখ রোহিঙ্গা এসে পড়ায় সমস্যা বেড়েই চলেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এখন বন্ধ। পিইসি, জেএসসি, এসএসসি, এইচএসসি, দাখিলসহ পাবলিক পরীক্ষাগুলো সন্নিকটে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এবং পড়াশোনার স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘিœত হওয়ায় দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকরা। বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা আসায় নিত্যপণ্য ও গাড়িভাড়া দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আলী হোসেন রোহিঙ্গা সঙ্কটের কারণে নেতিবাচক প্রভাব স্বীকার করে বলেন, মানবিক কারণে আশ্রয় দিতে হয়েছে। কিন্তু এতে স্থানীয় বাসিন্দারা অবশ্যই দুর্ভোগে। তবে ধীরে ধীরে সব সমস্যা সমাধান করতে কাজ করছে সরকার। জিরো লাইনে ১৬ হাজার রোহিঙ্গা জীবন বাঁচাতে পরিবার-পরিজন নিয়ে আসা প্রায় ১৬ হাজার রোহিঙ্গা অবস্থান করছে বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ির সীমান্তের জিরো লাইন এলাকায়। তাদের দিন কাটছে ভয়ভীতির মধ্যে। সেখানে অবস্থানকারী রোহিঙ্গাদের অভিযোগ, তমব্রু চাকঢালার বড় ছনখোলা, আশারতলীর সাপমারা ঝিরি ও ফুলতলী শূন্য রেখায় এসে বিনা উস্কানিতে অসংখ্যবার গুলি ছুড়েছে মিয়ানমারের সরকারী বাহিনী। এজন্য রাতজেগে পাহারা দিতে হচ্ছে রোহিঙ্গা যুবকদের। তাদের রাত কাটছে নির্ঘুম, আশ্রয় নেয়া সবাই রয়েছে আতঙ্কে। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম সরওয়ার কামাল জানান, তমব্রু সীমান্তের জিরো পয়েন্টে যে রোহিঙ্গারা রয়েছে, তাদের অবস্থা এবং উৎকণ্ঠা প্রসঙ্গে নানা অভিযোগ এসেছে। এ বিষয়ে উর্ধতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্কাবস্থায় রয়েছে। মজুদ আছে পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী কক্সবাজারের টেকনাফ, উখিয়া ও বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে অবস্থানরত লাখ লাখ রোহিঙ্গার জন্য পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী মজুদ আছে বলে জানা গেছে। টেকনাফ-উখিয়ার লাখো রোহিঙ্গা ছাড়াও নাইক্ষ্যংছড়ি সদর এবং তমব্রু সীমান্তের জিরো পয়েন্টে অবস্থানরত রোহিঙ্গারা প্রবেশাধিকার না পেলেও তাদের মধ্যে নিয়মিত ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। সূত্র জানায়, নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের তিনটি ক্যাম্পে ১৬ হাজার ১৬০ জন নিবন্ধিত রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। এসব রোহিঙ্গার মাঝে বিতরণের জন্য ১২ হাজার ৬১৫ কেজি চাল, ৬২৮ কেজি ডাল, এক হাজার ৫০২ কেজি লবণ, ৫শ’ কেজি চিড়া, ৭২৪ কেজি চিনি, এক হাজার ২শ’ লিটার তেল, ৩২ কেজি পেঁয়াজ-রসুন, ২১ কেজি শুঁটকি, বিস্কুট, কাপড়, ওষুধ, কম্বল, সাবান, পেস্ট, থামি, বালতি, জগ, গ্লাসসহ গৃহস্থালির ৩৮ কার্টন জিনিসপত্র মজুদ রয়েছে। এছাড়াও ছয়টি মেডিক্যাল টিম সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সরকারের নির্দেশে রোহিঙ্গাদের মানবিকতা দেখানো হচ্ছে।
×