ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার রঙ্গিন স্বপ্ন দেখছে ॥ কাদের

প্রকাশিত: ০৫:১০, ২২ অক্টোবর ২০১৭

বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার রঙ্গিন স্বপ্ন দেখছে ॥ কাদের

স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট অফিস ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার রঙ্গিন স্বপ্ন দেখছে। সিইসির এক বক্তব্যে তারা মহাখুশি। ফখরুল সাহেব বলেছিলেন একশ বছরেও নাকি আমাদের ক্ষমতায় আসতে দিবেন না। লন্ডনে বসে বসে ক্ষমতায় যাওয়ার নীলনক্সা ইনশাল্লাহ বাংলাদেশে সফল হবে না। লন্ডনে বসে খালেদা জিয়া যেসব নীলনক্সা করেছেন এর কোনটাই বাস্তবায়ন হবে না। কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে বিএনপি উৎফুল্ল ছিল। তারা মনে করেছিল সরকার এই সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে পারবে না। কিন্তু মমতা দিয়ে ৬ লাখ মানুষকে শেখ হাসিনা আশ্রয় দিয়েছেন এবং তাদের সহায়তায় সকল সুবিধা দিচ্ছেন। দেশের জনগণ শেখ হাসিনার সঙ্গে রয়েছে। তাই ক্ষমতায় যাওয়ার যে দিবাস্বপ্ন বিএনপি দেখছে কোনদিনই তা বাস্তবে রূপ নেবে না। শনিবার বেলা ১২টায় সিলেটের ঐতিহাসিক রেজিস্ট্রারি মাঠে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন নতুন সদস্য সংগ্রহে এবার আওয়ামী লীগের মূল টার্গেট হচ্ছে নারী ভোটার। দেশের জনগোষ্ঠীর অর্ধেক হচ্ছে নারী, তাই সদস্য সংগ্রহের গুরুত্বপূর্ণ টার্গেট হচ্ছে নারী। এছাড়া দ্বিতীয় টার্গেট হচ্ছে নতুন ভোটার। নতুনদের দলের সদস্য করতে হবে। অফিসে বসে সদস্য ফরম পূরণ বা কাউকে সদস্য করা যাবে না। ঘরে ঘরে গিয়ে মানুষকে আওয়ামী লীগের সদস্য করতে হবে। কোন চিহ্নিত সন্ত্রাসী, স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি, চিহ্নিত চাঁদাবাজ আওয়ামী লীগের সদস্য হতে পারবে না। এই বিষয়টিকে সামনে রেখে সদস্য সংগ্রহ অভিযান পরিচালনা করতে হবে। খালেদা জিয়ার দেশে ফেরা প্রসঙ্গে তিনি বলেন- দুই মাসের ছুটি নিয়ে সাড়ে তিনমাস পর খালেদা জিয়ে দেশে ফিরেছেন। দেশে ফিরলে তার নেতাকর্মীরা রাস্তা বন্ধ করে, মানুষকে কষ্টের মধ্যে রেখে সংবর্ধনার আয়োজন করে। এতে সাধারণ মানুষ বিরক্ত হয়েছে। তারা বলছে এখনই খালেদা জিয়ার নেতাকর্মীরা রাস্তাঘাট দখল করা শুরু করেছেন, ক্ষমতায় গেলে তারা আবার হাওয়া ভবনের দুর্নীতি শুরু করবে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য ও সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের সভাপতিত্বে এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরীর পরিচালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ এবং সদস্য অধ্যাপক রফিকুর রহমান। সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এ্যাডভোকেট লুৎফুর রহমান, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ। সকালে বৃষ্টি উপেক্ষা করেই সভার কাজ শুরু হয়। সকাল থেকেই দলে দলে মিছিলসহকারে সভাস্থলে আসতে থাকেন নেতাকর্মীরা। সকাল ১১টা ১০ মিনিটে অতিথিদের নিয়ে সভাস্থলে উপস্থিত হন প্রধান অতিথি বাংলাদেশ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি। এ সময় স্লোগানে স্লোগানে সভাস্থল মুখরিত করে তোলেন উপস্থিত নেতাকর্মীরা। সভার শুরু থেকে শেষ পুরো সময় জুড়েই ছিল বৃষ্টি। সভাস্থলের মঞ্চের সামনে সামিয়ানার ওপরে ত্রিপল না থাকায় বৃষ্টিতে ভিজেই সভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। মন্ত্রী বলেন, সিলেটের মানুষের কাছে যিনি সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য তাকে মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন দেব। আমরা দলের প্রার্থীদের খবর নিচ্ছি। বিরোধীদেরও খবর নিচ্ছি। মনোনয়ন নিয়ে নিজেদের মধ্যে ঝগড়া-ঝাটি করা যাবে না। মনে রাখতে হবে আমাদের প্রতীক হচ্ছে নৌকা, আমাদের সকলকে নৌকার জন্য কাজ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, সংসদ নির্বাচনেও আমরা একইভাবে প্রার্থী মনোনয়ন দেব। জনগণের কাছে যিনি অধিকতর গ্রহণযোগ্য তিনিই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবেন। তিনি বলেন ২/৪ জন সন্ত্রাসীর জন্য দল বদনামের ভাগী হতে পারে না। ছাত্রলীগ নেতা ওমর মিয়াদ হত্যাকান্ডের সঙ্গে যারাই জড়িত তাদের কোন ছাড় দেয়া হবে না। এরই মধ্যে এ হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত খুনীদের গ্রেফতার করতে সিলেটের পুলিশ ও সিভিল প্রশাসনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কোন সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ বা স্বাধীনতার বিরোধী আওয়ামী লীগের সদস্য হতে পারবে না। তিনি বলেন, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে সিলেটে দুটি রক্তাক্ত ঘটনা ঘটেছে। আমি এসব ঘটনার খোঁজ-খবর নিতে এসেছি। খুনী যেই হোক-তার রেহাই নেই-এটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ। এসব ঘটনার সঙ্গে কিংবা নেপথ্যে যারাই রয়েছে-তাদের উপযুক্ত শাস্তি হবে। তিনি বলেন, আপনি যত প্রভাবশালীই হোন না কেন, কাউকে রক্তাক্ত করার অধিকার আপনার নেই। এ ঘটনার পর জেলা ছাত্রলীগের কমিটি ভেঙ্গে দেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যতই কমিটি ভাঙ্গুন না কেন, এ ঘটনার বিচার হবেই হবে। সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে সিলেটকে বাঁচাতে হবে। আজকের সিলেটের উন্নয়ন, রাস্তাঘাট উন্নয়নের ওপর নির্ভর করছে। সিলেট পর্যটন এরিয়া। তিনি বলেন, আমি গতকাল শুক্রবার বাইরোডে সিলেটে এসে খুব কষ্ট পেয়েছি। ঢাকা-সিলেট সড়কের বিভিন্ন জায়গা অনেক খারাপ। সিলেট- কোম্পানীগঞ্জ নতুন সড়ক হচ্ছে। সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কের টেন্ডার হয়ে গেছে। সিলেট-জাফলং সড়ক সেদিকেও আমরা নজর দিচ্ছি। তিনি বলেন সিলেট আমাদের যা দেয় সেই তুলনায় আমাদেরও দিতে হবে। সিলেট জাতীয় অর্থনীতির প্রাণ। সিলেটের উন্নয়নের যারা ব্যবস্থা নিবেন না তাদের বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয় থেকে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এর আগে শুক্রবার রাতে সিলেটে পৌঁছে হযরত শাহজালাল ও শাহপরাণ (রহ.)’র মাজার জিয়ারত করেন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। শুক্রবার (২০ অক্টোবর) রাত দশটার দিকে ওবায়দুল কাদের সিলেট পৌঁছেন। মাজার জিয়ারত শেষে তিনি সার্কিট হাউসে রাত যাপন করেন।
×