ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

১৬ দিনের বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব শেষ

প্রকাশিত: ০৫:০৮, ২২ অক্টোবর ২০১৭

১৬ দিনের বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব শেষ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সংস্কৃতির সবকিছু যখন ঢাকাকেন্দ্রিক তখন সেলুলয়েডের সুবাদে দেশজুড়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে উৎসব। দেশের ৬৪ জেলার সিনেপ্রেমীরা একযোগে উপভোগ করেছে বৈচিত্র্যময় বিষয়ের চলচ্চিত্র। ঢাকার বাইরের জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনসহ বিভিন্ন প্রাঙ্গণে বিনা দর্শনীতে প্রদর্শিত হয়েছে এসব ছবি। ৪৪টি চলচ্চিত্র নিয়ে দেশজুড়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের আয়োজনে ৬ অক্টোবর সূচনা হওয়া এ উৎসবের সমাপনী দিন ছিল শনিবার। এদিন বিকেলে সমাপনী আয়োজনটি বসেছিল শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে। এতে উৎসবের প্রদর্শিত সমকালীন ১১টি চলচ্চিত্র নিয়ে বিশেষ প্রতিযোগিতা বিভাগের নির্মাতাদের পুরস্কার প্রদান করা হয়। এই বিভাগে জুরি কমিটির মাধ্যমে বাছাই করে ৩টি শাখায় প্রদান করা হয়। শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের পুরস্কারটি পেয়েছে ইমপ্রেস টেলিফিল্মের ছবি অজ্ঞাতনামা। শ্রেষ্ঠ নির্মাতার পুরস্কার পেয়েছেন তৌকীর আহমেদ। শ্রেষ্ঠ জুরি পুরস্কার জয় করেছে রুবাইয়াত হোসেন নির্মিত ছবি আন্ডার কনস্ট্রাকশন। শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের পুরস্কার হিসেবে ২ লাখ টাকা, শ্রেষ্ঠ নির্মাতাকে ১ লাখ টাকা এবং বিশেষ জুরি পুরস্কারপ্রাপ্ত নির্মাতাকে প্রদান করা হয় ৫০ হাজার টাকা। শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে সমাপনী আয়োজনে অতিথি ছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমাম, চলচ্চিত্র নির্মাতা মস্হিউদ্দিন শাকের ও মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন শিল্পকলা একাডেমির নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের পরিচালক বদরুল আনাম ভূঁইয়া। সমাপনী অনুষ্ঠানে একাডেমির পরিবেশনায় উপস্থাপিত হয় অষ্ট নায়িকা ও উড়ন্ত পাখি শিরোনামের দু’টি দলীয় নৃত্য। এ ছাড়া সমাপনী দিনের সকালে একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার কক্ষে ‘ধ্রুপদী চলচ্চিত্র : পরিপ্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। বিকেল ৪টায় চিত্রশালা মিলনায়তনে প্রদর্শিত হয় মোরশেদুল ইসলাম নির্মিত চলচ্চিত্র ‘অনিল বাগচীর একদিন’। পুরস্কার প্রদান শেষে রাত আটটায় প্রদর্শিত হয় উৎসবের নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র ‘অজ্ঞাতনামা’। সমাপনী দিনে রাজশাহী জেলায় ‘নারী নির্মাতাদের চলচ্চিত্রে নারীর প্রতিকৃতি’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. সাবরিনা সুলতানা চৌধুরী। যশোর জেলায় মুশফিকুর রহমান গুলজার উপস্থাপন করেন ‘চলচ্চিত্র প্রদর্শন ব্যবস্থার সঙ্কট ও সমাধান’ শীর্ষক প্রবন্ধ। ময়মনসিংহ জেলায় বিধান রিবেরু উপস্থাপন করেন ‘ঢাকাই ছবি ও সংস্কৃতি কারখানা’ শীর্ষক প্রবন্ধ। বরিশাল জেলায় সাইদুল আনাম টুটুল উপস্থাপন করেন ‘চলচ্চিত্র চর্চা, শিক্ষা, নির্মাণ ও প্রদর্শন : ষাট বছরে কী পাওয়া’ শীর্ষক প্রবন্ধ। চট্টগ্রাম জেলায় অনুপম হায়াৎ উপস্থাপন করেন ‘চলচ্চিত্র শিল্প উন্নয়নে সরকারের উদ্যোগ’ শীর্ষক প্রবন্ধ। সুনামগঞ্জ জেলায় বেলায়াত হোসেন মামুন উপস্থাপন করেন ‘বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে শিক্ষাহীনতার সঙ্কট এবং চলচ্চিত্র শিক্ষা সারাদেশে প্রসারের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক প্রবন্ধ। ১৬ দিনের এ ঢাকাসহ প্রতিটি জেলায় প্রতিদিন বেলা ৩টা, বিকেল ৫টা ও সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। ধলেশ্বরী অপেরা নাটকের দ্বিতীয় মঞ্চায়ন ॥ নদী তীরবর্তী মানুষের জীবনকে ঘিরে এগিয়েছে নাটকের কাহিনী। সেখানকার এক যাত্রাদলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব হচ্ছে প্রযোজনাটির মূল বিষয়। ধলেশ্বরী অপেরা নামের নাটকটি মঞ্চে এনেছে আগন্তুক রেপার্টরি। প্রযোজনাটির রচনার পাশাপাশি নির্দেশনা দিয়েছেন পান্থ শাহরিয়ার। শনিবার বৃষ্টিস্নাত সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির নাট্যশালার এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হলো নাটকটি। এটি ছিল প্রযোজনাটির দ্বিতীয় মঞ্চায়ন। প্রযোজনাটি প্রসঙ্গে নির্দেশক পান্থ শাহরিয়ার বলেন, অন্য এক গল্পের ভেতর দিয়ে এ নাটকে বর্ণিত হয়েছে ম্যাকবেথের গল্প। তাই বলে কোনভাবেই ধলেশ্বরী অপেরাকে ম্যাকবেথ ভাবার কারণ নেই। নাটকের কাহিনী আবর্তিত হয়েছে ধলেশ্বরী পাড়ের এক যাত্রাপালার দলকে কেন্দ্র করে। এই যাত্রাদলটি ম্যাকবেথ নাটকের মহড়া শুরু করে। এরই মধ্যে যাত্রাদলের নায়ক মুরাদ জংয়ের সঙ্গে সঙ্গে সংঘাত বাধে অঘোরনাথের। এদিকে মুরাদের সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্ক নায়িকা নয়নতারার। দু’জনে মিলে হত্যা করে অঘোরনাথকে। ঘটনাক্রমে মুরাদ হয়ে যায় ধলেশ্বরী অপেরার প্রধান। এভাবেই এগিয়ে যায় নাটকের। প্রযোজনাটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন ত্রপা মজুমদার, শতাব্দী ওয়াদুদ, তানজুম আরা পল্লী, জাহাঙ্গীর আলম, তাহনীনা ইসলাম, রাশেদুল আউয়াল শাওন, পলাশ হেনড্রি সেন, পান্থ শাহরিয়ার প্রমুখ।
×