ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

মুগদার খালে পড়ে যাওয়া শিশুর লাশ উদ্ধার

প্রকাশিত: ০৪:১৪, ২২ অক্টোবর ২০১৭

মুগদার খালে পড়ে যাওয়া শিশুর লাশ উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ টানা সাত দিনের চেষ্টার পর অবশেষে রাজধানীর মুগদার খালে পড়ে যাওয়া তিন বছরের শিশু হৃদয়ের অর্ধগলিত মৃতদেহ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা। লাশটি শনিবার বিকেলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শিকদার জানান, শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে হৃদয়ের লাশ উদ্ধার করতে সক্ষম হয় ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। মুগদা খালের যে জায়গায় পড়েছিল, তার দশ হাত দূরেই হৃদয়ের লাশ পাওয়া যায়। পচা কাদা পানিতে থাকায় হৃদয়ের মরদেহে পচন ধরেছে। লাশটি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, সুরতহালের জন্য লাশটি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে। গত ১৫ অক্টোবর রবিবার বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে মুগদার মদিনাবাগ লাগোয়া খালের উপর দিয়ে যাওয়া বাঁশের সাঁকো দিয়ে পার হচ্ছিল শিশু হৃদয়। স্থানীয়রা জানান, পা পিছলে সাঁকো থেকে পড়ে যায় সে। পড়ার পর পরই হৃদয়ের চিৎকারে সেখানে লোকজন জড়ো হয়। লোকজন জড়ো হয়ে খালে নামতে নামতেই আস্তে আস্তে হৃদয় ময়লার পানিতে তলিয়ে যেতে থাকে। খালটির উপর প্রচুর ময়লা জমে আছে। আর ময়লার নিচে প্রচ- গতিতে পানি বয়ে যাচ্ছে। নিমিষেই হৃদয় ময়লার নিচে তলিয়ে যায়। মুগদা থানার ওসি এনামুল হক জানান, খালের পানির উপর প্রচ- ময়লা আর ময়লার নিচের পানিতে স্রোত থাকায় উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হয়েছে। হৃদয়ের লাশ খুঁজে পেতে সময় লেগেছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন খালের উপর থাকা ময়লা কেটে পরিষ্কার করে দেয়ার উদ্ধার তৎপরতা চালানো সহজ হয়েছে। জানা গেছে, হৃদয়ের পিতার নাম কালাম। আর মা রোজি বেগম। পিতামাতা পুরনো জিনিসপত্র কুড়িয়ে ভাঙ্গারি দোকানে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। হৃদয়ের বড় তাদের এক মেয়ে রয়েছে। বাড়ি কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম থানার সোনাপুর গ্রামে। তারা খালের পাড়ের একটি টিনের ঘরে মাসিক প্রায় হাজার টাকা ভাড়ায় দীর্ঘদিন ধরে ছেলেমেয়ে নিয়ে বসবাস করে আসছেন। প্রসঙ্গত ২০১৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর ম্যানহোলের ঢাকনা চুরি হওয়া এবং না থাকার কারণে রাজধানীর শাহজাহানপুর বালুরমাঠ সংলগ্ন রেলওয়ে কলোনিতে ওয়াসার পরিত্যক্ত পানির পাম্পে পড়ে চার বছর বয়সী শিশু জিহাদের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। এ নিয়ে সারাদেশে ব্যাপক তোলপাড় হয়েছিল। প্রায় ২৩ ঘণ্টা পর শিশু জিহাদকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার হয়। এ ঘটনায় রেলওয়ের জ্যেষ্ঠ উপসহকারী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলমকে বরখাস্ত করা হয়। আর গভীর নলকূপ বসানোর কাজ পাওয়া এসআর হাউজকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়। উচ্চ আদালত শিশু জিহাদের পরিবারকে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দেয়। এমন ঘটনার পর ২০১৫ সালের ৮ ডিসেম্বর রাজধানীর কদমতলী থানাধীন পালপাড়ায় ঢাকনা না থাকায় খেলতে গিয়ে ওয়াসার স্যুয়ারেজ পাইপে পড়ে যায় পাঁচ বছর বয়সী শিশু নিরব। চার ঘণ্টার টানা চেষ্টার পর ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার কর্মীরা নিরবের লাশ ঘটনাস্থল থেকে কমপক্ষে এক কিলোমিটার ভাটিতে বুড়িগঙ্গা নদী থেকে উদ্ধার করে।
×