ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

বাংলাদেশ ০-৪ জাপান

জাপানের কাছে হেরে ষষ্ঠ বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৫:০৪, ২১ অক্টোবর ২০১৭

জাপানের কাছে হেরে ষষ্ঠ বাংলাদেশ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এশিয়া কাপ হকির দশম আসর শুরুর আগেই বাংলাদেশ দলের লক্ষ্য ছিল আট দলের মধ্যে কমপক্ষে ষষ্ঠ স্থান অধিকার করা। কেননা ষষ্ঠ হতে পারলেই পরবর্তী আসরে বাছাইপর্বে না খেলে সরাসরি মূলপর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করা যাবে। মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত বৃহস্পতিবার প্রাক স্থান নির্ধারণী ম্যাচে অবিশ্বাস্যভাবে চীনকে হারিয়ে সেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় মাহবুব হারুনের শিষ্যরা। নিশ্চিত হয়ে যায় কমপক্ষে ষষ্ঠ স্থান। শুক্রবার তারা অবতীর্ণ হয় পঞ্চম স্থান নির্ধারণী ম্যাচে। কিন্তু জাপানের কাছে ০-৪ গোলে হেরে পঞ্চম হওয়া হলো না তাদের। শেষ পর্যন্ত ষষ্ঠ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় ৩৪ নম্বর র‌্যাঙ্কিংধারী বাংলাদেশকে। ফলে বলা যেতে পারে, যেমনটা চেয়েছিল তারা তেমনটিই পেল তারা। চলতি আসরে গ্রুপপর্বে জাপানের কাছে ১-৩ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ। যদিও আসর শুরুর আগে ৪০ মিনিটের এক প্রস্তুতি ম্যাচে জাপানকে ২-১ গোলে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার রাত থেকেই শুরু হয়েছিল আকাশের অবিরাম কান্না। দিনেও বিরাম নেই। প্রবলবর্ষণ। মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামের নীল টার্ফ জলমগ্ন। এমনই অবস্থা যে, এটাকে হকি টার্ফ না বলে ওয়াটার পোলোর সুইমিং পুল বলাই ভাল। বৃষ্টি না থামায় এবং টার্ফ খেলার উপযোগী করা সম্ভব না হওয়াতে দিনের প্রথম ম্যাচটি (ওমান-চীন) পিছিয়ে দেন আয়োজকরা। ঘোষণা দেয়া হয় দিনের দ্বিতীয় ম্যাচটির ব্যাপারে। বাাংলাদেশ-জাপান ম্যাচটি শুরু হওয়ার কথা ছিল সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায়। রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ম্যাচ শুরুর জন্য অপেক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তবে ৫টার পরেই বৃষ্টি থেমে গেলে এবং টার্ফের উন্নতি হলে সন্ধ্যা সোয়া ৬টাতেই খেলা শুরু হয়। তবে খেলা শুরুর মিনিট দশেকের মধ্যে আবারও বিপুল বেগে বৃষ্টিপাত আরম্ভ হয়। এর মধ্যেই চলতে থাকে খেলা। প্রথম কোয়ার্টারে জাপানের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই খেলে বাংলাদেশ। এই অর্ধে বাংলাদেশ গোল করতে না পারলেও জাপানকেও গোল করতে দেয়নি। তবে দ্বিতীয় কোয়ার্টারে খুবই বাজেভাবে গোল হজম করে বসে বাংলাদেশ। পেনাল্টি কর্নার (পিসি) পায় জাপান এবং তা থেকে সৌভাগ্যক্রমে গোল পেয়ে যায় তারা। কেননা পিসির পুশ করা বলটি বৃষ্টিভেজা টার্ফের কারণে অনেক ধীরগতিতে গড়িয়ে জাপানের সোতা ইয়ামাদার কাছে পৌঁছে। অথচ পোস্টে থাকা বাংলাদেশী খেলোয়াড়রা একটু চেষ্টা করলেই দৌড়ে এসে সেই বলটি ক্লিয়ার করতে পারতেন। কিন্তু তাদের দৌড়ই ছিল শ্লথগতির। এই ফাঁকে ইয়ামাদা একটু গ্যাপ খুঁজে পোস্টের ডানদিকে বলটি যেভাবে ড্র্যাগ করেন সেটাও ছিল যথেষ্ট ধীরগতির। অথচ এমন গতির বলটি কি না বিপদমুক্ত করতে পারলেন না ডিফেন্ডার মামুনুর রহমান চয়ন। তার চোখের সামনে দিয়েই বলটি ঢুকে গেল পোস্টে। গোল (১-০)! জাপানের পিসিটা যতটা না ছিল বাজে তারচেয়েও বাজেভাবে গোল হজম করে বাংলাদেশ। তৃতীয় কোয়ার্টারে উভয় দলকেই ক্লান্ত মনে হয়েছে। কেননা উভয় দলই তাদের আগের ম্যাচটি খেলেছে ২৪ ঘণ্টারও কম সময় আগে। খেলায় এর প্রভাব পড়ে। দু’দলই আক্রমণ করে খেললেও তাতে ধারের অভাব ছিল। এই অর্ধে কোন দলই গোলের দেখা পায়নি। চতুর্থ কোয়ার্টারে গিয়ে বাংলাদেশ দল পুরোপুরি ক্লান্ত হয়ে পড়ে। যার পুরোপুরি ফায়দা লোটে দূরপ্রাচ্যের এবং সূর্যোদয়ের দেশটি। ৪৬ মিনিটে কেনজি কিতাজাতো, ৪৯ মিনিটে কাজুমা মুরাতা এবং ৫৩ মিনিটে সেরেন তানাকা তিনটি ফিল্ড গোল করলে হার এবং ষষ্ঠ স্থান নিশ্চিত হয়ে যায় লাল-সবুজদের।
×