ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

হাওড়ে বন্যার জন্য ইঁদুর ও স্থানীয় লোকদের ফের দুষলেন মন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৮:০৭, ২০ অক্টোবর ২০১৭

হাওড়ে বন্যার জন্য ইঁদুর ও স্থানীয় লোকদের ফের দুষলেন মন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ হাওড়ে বন্যার জন্য আবারও ইঁদুর ও স্থানীয়দের বাঁধ কাটাকে দায়ী করলেন পানিসম্পদমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। পাশাপাশি তিনি স্বীকার করেন, বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম ও লুটপাট হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেসরকারী গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত ‘২০১৭ সালের বন্যা পরিস্থিতি ও করণীয়’ শীর্ষক সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, আমেরিকাতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ইঁদুর মারতে জনবল নিয়োগ দেয়া আছে। কিন্তু আমাদের দেশে ইঁদুর মারতে সে ধরনের লোকবল নেই। সংলাপ সঞ্চালনা করেন সিপিডি’র বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। ইঁদুরে বাঁধ কাটার কারণে, নাকি মেরামত ত্রুটির কারণে বাঁধ ভেঙ্গে বন্যা হলো তা ভেবে দেখার জন্য পানিসম্পদমন্ত্রীকে আহ্বান জানান দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। সিপিডি তাদের গবেষণায় দেখায়, এ বছরের বন্যার আর্থিক ক্ষতি জিডিপির ০.৩৫ শতাংশ থেকে ০.৪৪ শতাংশ। দফায় দফায় ওই বন্যায় ৩২ জেলায় কমপক্ষে ১ কোটি ২৮ লাখ মানুষ পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, জলবায়ুর যে পরিবর্তন হচ্ছে, সেটাকে বিবেচনায় না নিতে পারলে আগামীদিনে বন্যা ব্যবস্থাপনায় কার্যকারিতা সীমিত হবে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো বলছে, এ বছর বন্যার কারণে বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১০ লাখ মেট্রিক টন। আমন ও আউশের ক্ষতি এখনও নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি। সিপিডি আয়োজিত এ সংলাপে দেশের বন্যা, দুর্যোগ ও পানিবিশেষজ্ঞরা অংশ নেন। তারা বন্যাপরবর্তী পুনর্বাসন কাজে কৃষি খাতকে গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান জানান। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধগুলো শুষ্ক মৌসুমে মেরামত করার পরামর্শ দেন তারা। সংলাপে বক্তারা বলেন, বন্যাপরবর্তী পরিস্থিতিতে দুশ্চিন্তার একটি বড় কারণ দ্রব্যমূল্যের লাগাম টেনে ধরতে না পারা। তবে বন্যার কারণেই যে দ্রব্যমূল্যের এমন চিত্র, তা মেনে নেয়া যায় না। আইনুন নিশাত বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক ও বাঁধ মেরামতে হরিলুট হতে পারে। এ বিষয়ে সরকারকে সাবধান হতে হবে। এসব সংস্কার কাজে সংসদ সদস্যদের দূরে রাখতে হবে। স্থানীয় জনগণকে কাছে রাখতে হবে ও সম্পৃক্ত করতে হবে। আইনুন নিশাতের এসব অভিযোগের জবাবে পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, বন্যাপরবর্তী সংস্কার কাজ নিয়ে লুটপাট হতে পারে, তবে হরিলুট হবে বলে আমি মনে করি না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজে কোন দুর্নীতি হয় না এমন কথা আমি বলব না। কিন্তু দুর্নীতির কারণে বাঁধ ভেঙ্গে বন্যা হয়েছে, এটা আমি মানতে রাজি না।
×