ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ফ্যাশনে পাশ্চাত্যের স্টাইল

প্রকাশিত: ০৫:০৪, ২০ অক্টোবর ২০১৭

ফ্যাশনে পাশ্চাত্যের স্টাইল

প্রকৃতির পালাবদল মনকে দোলা দিয়ে যায়। পালাবদলের পরিক্রমায় ঘটে যায় নানা ঘটনা। কখনও প্রকৃতি রুদ্র মূর্তি ধারণ করে আবার কখনও স্নিগ্ধ পরশ বুলিয়ে দেয় ভোরের শিশিরের মতো। দিন বদলায় সময় বদলায় বদলে যায় মন। সেই পালাবদলে এখন উত্তরের হিমেল হাওয়া বইতে শুরু করেছে। প্রকৃতিতে আসছে শীত। প্রকৃতির রূপ যেমন বদলায় ঠিক তার সঙ্গে পালা দিয়ে বদলে যায় ফ্যাশনও। এসবের মাঝে পোশাক নিয়ে তরুণীদের ভাবনাটা একটু বেশি। তরুণীদের পোশাকের বর্তমান হালচাল নিয়ে আমাদের এবারের আয়োজন। লিখেছেন- রোদেলা ফারাবি ঋতু অনুযায়ী পোশাক তৈরির ট্রেডিশন খুব বেশিদিন হয়নি এ দেশে চালু হয়েছে। তারপরেও খুব দ্রুত এ ট্রেডিশনটি ক্রেতাদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কারণ ব্যস্ত জীবনে ঋতুর সঙ্গে তাল মিলিয়ে পোশাক এখন হাতের কাছেই মেলে। যার ফলে বাড়তি চিন্তা মাথায় নিয়ে ঘুরতে হয় না। সালোয়ার কামিজের পাশাপাশি আরও অনেক রকমের পোশাক পরতে শুরু করল মেয়েরা কিছুদিন আগেই। কিন্তু কর্ম ব্যস্ততা বলি আর বিশ্বায়নের জোয়ারই বলি দিনে দিনে বাঙালী মেয়েদের পছন্দের পোশাক হিসেবে পরিণত হয়েছে জিন্স। আর জিন্সের সঙ্গে অনুষঙ্গ ব্যবহারের ক্ষেত্রেও রয়েছে বৈচিত্র্য। যে মেয়েটি হয়ত বাড়ির বাইরে জিন্স পরবে কি পরবে না ভাবছিল সেই কিছুদিন পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসে যেতে সঙ্গী করল জিন্স আর ফতুয়াকে। তারও পরে ফ্যাশন এবং সময়ের প্রয়োজনে ফতুয়ার লেন্থটাও কমতে থাকল। আর এখন তো ফতুয়ার বদলে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে টপস। পশ্চিমা পোশাক হিসেবে টপস বরাবরই জনপ্রিয়। আর শীতের দিনে পাতলা উলের টপস হলে তো কথাই নেই। একরঙা বা কয়েকটি রঙের শেডের এসব টপস মানিয়েও যাবে আর মানাবেও বেশ। উষ্ণতা পেতে তরুণীরা বেছে নিচ্ছে রঙিন উলের টপস। ছিমছাম এই টপসগুলো একেবারেই হালকা হয়ে থাকে যার ফলে এর নিচে চাইলে পরে নিতে পারেন সিভলেস টপস। বাঙালী মেয়েরা সচারচর জিন্সের সঙ্গে টপস পরে থাকে কিন্তু বর্তমানে তরুণীরা একটু স্কিনি টাইপের জিন্স পরে থাকেন যার সঙ্গে পরে নিতে পারেন গলায় লম্বা ঝুলানো হার আর কানে ছোট দুল। পায়ে পরে নিতে পারেন স্যু টাইপের হাইহিল যা টপসের সঙ্গে মানানসই। কখনও বিশেষ কোন স্টাইলের জন্য ট্রেন্ডি জায়গা দখল করে নেয় ফ্যাশন। মেয়েদের টপস ডিজাইনে এখন জনপ্রিয় নাম ফ্রিল স্টাইল। ফ্রিল হচ্ছে কুচি। মানে কুচির বিভিন্ন ব্যবহার এখন মেয়েদের টপসে লক্ষ্য করা যায়। লন্ডন ফ্যাশন উইক সামার-স্প্রিং ২০১৬ থেকে বেরিয়ে এসেছে এই ট্রেন্ড। সে সুবাদে তা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে এখন। আমাদের দেশেও একই চিত্র। ট্র্যাডিশনাল লেডিস ড্রেসে খুব সহজে জায়গা করে নিয়েছে এই স্টাইল। কি গরম, কি শীতে। কিছু ক্ষেত্রে পোশাকে কুচি মানেই বর্ণিল সাজসজ্জা! এই যেমন গাউন বা লেহেঙ্গায় আধিপত্য ছাড়িয়ে কুচি এনে দিচ্ছে লেডিস টপসে অন্যরকম বৈচিত্র্য। আর উৎসব, পার্টিতে সেহেতু বরাবরই তরুণীদের পছন্দের শীর্ষে থাকে রংচঙা টপস, তাই এমন ডিজাইনের জায়গা পেতেও দেরি হচ্ছে না। টপসেই ট্রেন্ডের প্রতিফলন দেখা যায় বেশি। আজকাল ঢিলেঢালা টপসের চল বেশ চোখে পড়ছে। ঢিলেঢালা টপসেও ফ্রিলের ব্যাপকতা দেখা যায়। বডিতে ফিটিং প্যাটার্নই গত কয়েক বছর অধিকাংশ ডিজাইনে দেখা গেছে। যার সঙ্গে পুরোপুরি ভিন্নমাত্রা এনেছে ফ্রিল। টপসের নেকের অংশে দেখা যায় বেশি ফ্রিলের কাজ। ফ্রিল টপসের নেকে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম মাত্রা এনে দিয়েছে, যা এখন বেশ জনপ্রিয়। নেক থেকে নরমাল গেদার বা ফ্রিল নিচে নেমে আসার ডিজাইন কমবেশি সব সময়ই পরিলক্ষিত। এবার এটি পরিবর্তিত হয়েছে একটু প্লিট আকারে। নেকের বিভিন্ন শেপেও ব্যবহৃত হচ্ছে ফ্রিলের বিশেষ ব্যবহার। এখনকার ট্রেন্ডি পোশাকে নতুনত্ব এসেছে ড্রেসে নিচের অংশ, অর্থাৎ বটমে। মানে ফ্রিলের সবচেয়ে বেশি ব্যবহার দেখা যায় এখন বটমেই। অনেকটা সময় দেশীয় কামিজে প্রায় একই রকম কাটিং দেখা গেছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মানুষের বিচরণ সে ডিজাইন, চাহিদা পাল্টে দিয়েছে। বহির্বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তাই ডিজাইনের সবচেয়ে পরিবর্তন দেখা যায় ড্রেসের বটম পার্টে। নতুন আঙ্গিকের ডিজাইনের টপস যার হাতায় ও নিচে একই রঙের সরু বর্ডার যা শীতে ভীষণ আরামদায়ক। রঙটিও মনোরম। আর শৈল্পিক তারুণ্যতে ভরা। তরুণীরা হালকা এবং গাড় সাজের সঙ্গে এটি পরতে পারবেন। দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলো, যেমন, দেশাল, নিপুণ, বিবিয়ানা, কে ক্র্যাফট, বাংলার মেলা, সাদাকালো, নগরদোলা, মেঘ, নিখুঁত বাংলাদেশ, নবরূপাসহ বিভিন্ন ফ্যাশন হাউস তরুণীদের জন্য নতুন ধরনের সব পোশাক এর মধ্যে রয়েছে মেয়েদের টপস যা কেনা যাবে ৫০০ থেকে ৬৫০ টাকায়। দেশীয় ফ্যাশন হাউস ছাড়াও নিউমার্কেট, গাউছিয়া, বসুন্ধরা সিটি, যমুনা ফিউচার পার্কে তরুণীদের পোশাক কেনা যাবে বিভিন্ন ওয়েস্টার্ন ফ্যাশন হাউস থেকে যেখানে মেয়েদের টপস কেনা যাবে ১ হাজার থেকে ৩ হাজার পর্যন্ত। ছবি : নাঈম ইসলাম
×