ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

ইসি’র সংলাপে বিএনপির প্রস্তাব জনগণের স্বার্থে নয় ॥ কাদের

প্রকাশিত: ০১:২২, ১৯ অক্টোবর ২০১৭

ইসি’র সংলাপে বিএনপির প্রস্তাব জনগণের স্বার্থে নয় ॥ কাদের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের সংলাপে বিএনপির দেয়া প্রস্তাব জনগণের স্বার্থে নয়। তারা যে প্রস্তাব দিয়েছে তা তাদের দলীয় স্বার্থে। তারা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য যেভাবে যেভাবে তাদের সুবিধা, সেভাবেই প্রস্তাব করেছে বলেও দাবি করেন তিনি। বৃহস্পতিবার সেতু ভবনে এক চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শেষে তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন। নির্বাচন কমিশনের সংলাপে বিএনপির দেয়া প্রস্তাব জনগণের স্বার্থে নয় বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যে প্রস্তাব দিয়েছে তা হচ্ছে জনস্বার্থে। আমরা দলীয় স্বার্থে প্রস্তাব দিইনি। আমরা প্রস্তাবগুলো দিয়েছি একটা অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য। পার্থক্য এইখানেই। নির্বাচন কমিশনও আওয়ামী লীগের এ প্রস্তাবকে সাধুবাদ দিয়েছে বলে দাবি করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আমি কারও নাম ধরে বলতে চাই না। নির্বাচন কমিশনেরই যারা কমিশনার তারাও কেউ কেউ খুব জোরালোভাবে বলেছেন, আওয়ামীলীগের এ প্রস্তাবে সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ, পার্টিসিপেটরি, ইনক্লুসিভ, ক্রেডিবল, একসেপ্টেবল একটা নির্বাচন করার জন্য যা যা প্রয়োজন, তা আছে’। খালেদা জিয়াকে শুভেচ্ছা জানাতে যত মানুষ জড়ো হয়েছিল, শেখ হাসিনার সংবর্ধনা দিতে তার ২০ গুণ মানুষ হয়েছিল বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বিদেশ ফেরত খালেদাকে শুভেচ্ছা জানাতে বুধবার ঢাকার সড়কে লাখ লাখ মানুষ জড়ো হয় বলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম দাবি করেন। তিনি বলেন, এতে প্রমাণিত হয়ে খালেদা জিয়া ‘সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী’। এর আগে গত ৭ অক্টোবর জাতিসংঘ সফর করে ফেরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একইভাবে গণসংবর্ধনা দিয়ে ছিল ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। দুটি কর্মসূচীর তুলনা করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, সেদিন শেখ হাসিনাকে সংবর্ধনা জানাতে বিএনপির চেয়ে প্রায় ২০ গুণ বেশি লোকের সমাগম হয়েছিল। দুই দলের কর্মসূচীর কারণে ঢাকার সড়কে যানজটের দুর্ভোগে পড়তে হয়েছিল ঢাকার মানুষকে। অনেকে সড়কে এই ধরনের কর্মসূচীর যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। ওবায়দুল কাদের দাবি করেন, তাদের কর্মসূচীতে মানুষ বেশি হলেও শৃঙ্খলাবদ্ধ ছিল বলে জনভোগান্তি হয়নি। অন্যদিকে বিএনপির কর্মসূচীতে মানুষ কম থাকলেও বিশৃঙ্খলা ছিল বলে জনগণকে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। সেখানে (আওয়ামী লীগের কর্মসূচী) সর্বস্তরের লোকজনের অংশগ্রহণ ছিল। কিন্তু কেউ রাস্তায় নেমে আসেনি। এত সুশৃঙ্খল সংবর্ধনা আমি আগে লক্ষ্য করিনি। আমরা যেভাবে নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছি তারা সেভাবেই সেখানে অবস্থান নিয়েছে। বিএনপির লোকসংখ্যা এমন বেশি কিছু ছিল না দাবি করে কাদের বলেন, তাদের নেতা-কর্মীদের উপর তাদের (বিএনপি নেতাদের) নিয়ন্ত্রণ ছিল না। জনদুর্ভোগ এড়াতেই ছুটির দিনে প্রধানমন্ত্রীর গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয় জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ৫ তারিখ বৃহস্পতিবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আসার কথা ছিল। আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি, শুক্রবার শনিবার হলে জনদুর্ভোগ কম হবে। জনদুর্ভোগ যেন না হয় সেদিকে চিন্তা করে প্রধানমন্ত্রী দুদিন পরে ৭ তারিখ এসেছেন। সেদিন সরকারি ছুটির কারণে রাস্তায় যানজটের আশঙ্কা ছিল না। সরকার বিচার বিভাগকে প্রভাবিত করছে বলে বৃহস্পতিবার আদালতে গিয়ে যে অভিযোগ করেন খালেদা জিয়া, তার জবাবও দেন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আদালতের সিদ্ধান্ত সরকারের বিপক্ষে গেলে তারা খুশি হন,আর তাদের বিপক্ষে গেলে আদালতের স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। প্রধান বিচারপতি যখন ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে রায় ঘোষণা করেন, তখন এটা সরকারের বিরুদ্ধে গিয়েছে মনে করে তারা মহাখুশি। তখন বিচার বিভাগ খুব স্বাধীন। আপনার বিরুদ্ধে গেলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নেই, সরকারের হস্তক্ষেপ হচ্ছে। এই দ্বিচারিতা পরিহার করেন।
×