ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রুপাকে কেন মরতে হলো!

প্রকাশিত: ০৪:২৭, ১৮ অক্টোবর ২০১৭

রুপাকে কেন মরতে হলো!

নারী নির্যাতন দেশে নিত্যনৈমিত্তিক এবং অসহনীয় অবস্থায় গিয়ে পৌঁছেছে। যদিও নির্যাতনকারীরা কোনভাবেই আইনের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না। অনেক ক্ষেত্রে অপরাধী তাৎক্ষণিকভাবে ধরা না পড়লেও কোন না কোন সময় ধরা পড়ে যাচ্ছে। বিচারিক কার্যক্রম দীর্ঘসূত্রতার জালে আটকা পড়লেও অপরাধীদের সংবাদ মাধ্যমের মধ্য দিয়ে জনসম্মুখে উপস্থাপন করা হচ্ছে। তারপরও এই ধরনের পাশবিক নিষ্ঠুরতা থেমে থাকছে না। তনু থেকে শুরু করে শিশু পূজা ধর্ষণ আজও শিহরিত হওয়ার মতো দুঃসহ যন্ত্রণা। আসামিরা কাঠগড়ায় দাঁড়ালেও শেষ অবধি পূর্ণাঙ্গ বিচার যেন অনেক ক্ষেত্রে আড়ালেই থেকে যায়। আর এসবের পরিণতিতে অপরাধপ্রবণতা বাড়ে বৈ কমে না। সম্প্রতি ঘটে যায় এমনই আর এক লোমহর্ষক অমানবিক নৃশংসতা। ২৫ আগস্ট বহুজাতিক এক কোম্পানির কর্মী রুপাকে চলন্ত বাসে পরিবহন কর্মীরা ধর্ষণ করে মারাত্মক জখমের পর্যায়ে নেয়ার পরও তারা ক্ষান্ত হয়নি। মধ্যযুগীয় বর্বরতায় তাকে হত্যা করে টাঙ্গাইলের মধুপুর বনে ফেলে রেখে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠায়। এদিকে ধর্ষকরা ঘটনার পর স্বাভাবিক জীবনযাপনে থাকলেও এক সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরে পড়ে যায়। ২৮ আগস্ট রুপার ভাই মধুপুর থানায় যান এবং বোনের লাশ শনাক্ত করেন। পরবর্তীতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হলে পুলিশ আসামিদের খুঁজে বের করে। আসামিরা সবাই ধর্ষণ এবং হত্যার কথা স্বীকার করেছে। তারই ভিত্তিতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র তৈরি করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ধারায় ধর্ষণ, হত্যা এবং লাশ গুমের অভিযোগ এনে মামলার নথিপত্র গোছানো হয়। রুপার সাজানো-গোছানো জীবনটাকে তছনছ করে দিয়ে শেষ পর্যন্ত তাকে অকালে, অসময়ে নির্মমভাবে হত্যার মধ্য দিয়ে এসব নরপশু বর্বরতার যে নিদর্শন দেখাল তাতে তাদের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে শাস্তির বিধান করা এখন সময়ের দাবি। রুপার ওপর নৃশংস অত্যাচার আর জীবননাশের ঘটনা মানুষকে ক্ষুব্ধ ও ব্যথিত করেছে। কেন রুপাকে মরতে হলো, রুপাদের মতো আর কত নারীকে এভাবে মরতে হবে তার জবাব কি? এমন নৃশংসতার অভিযোগে সত্যিকারের দায়ী ব্যক্তিরা যেন কোনভাবেই ছাড় না পায়, যথাযথ আইনের মাধ্যমে যাতে তাদের শাস্তি নিশ্চিত হয় সেটাই মানুষ প্রত্যাশা করে।
×