স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ যৌতুকলোভী শিক্ষক স্বামীর দাবিকৃত মোটরসাইকেল ও চার ভরি স্বর্ণলংকারসহ অন্যান্য মালামাল দেয়া সত্বেও এবার পাঁচ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে অমানুষিক নির্যাতন করে পানিতে চুবিয়ে হত্যার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়ে আটক করে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে সোমবার রাতে থানা পুলিশ আটক গৃহবধূ তাইবা ইসলাম সেতুকে (২০) উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। ঘটনাটি জেলার গৌরনদী উপজেলার হাপানিয়া গ্রামের।
গৌরনদী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আগৈলঝাড়া উপজেলার ছোট বাশাইল গ্রামের প্রবাসী মনজু আলীর কন্যা তাইবা ইসলাম সেতু অভিযোগ করেন, গত এগারো মাস পূর্বে সামাজিকভাবে গৌরনদীর হাপানিয়া গ্রামের দাদন আলী মাস্টারের পুত্র দিদারুল ইসলামের সাথে তার বিয়ে হয়। দিদারুল ইসলাম বর্তমানে ৩৭নং শরিফাবাদ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। গৃহবধূ সেতু আরও জানান, বিয়ের সময় যৌতুকলোভী দিদারুলের চাহিদা অনুযায়ী চার ভরি স্বর্ণালংকারসহ অন্যান্য মালামাল পরিশোধ করা হয়।
বিয়ের কয়েক মাস যেতে না যেতেই মোটরসাইকেলের দাবিতে দিদারুল তাকে নির্যাতন শুরু করেন। পরবর্তীতে মেয়ের সুখের জন্য তার (সেতু) বাবা দিদারুলকে মোটরসাইকেল ক্রয় করে দেয়। অতিসম্প্রতি ঢাকায় ফ্লাট ক্রয়ের জন্য পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক আনার জন্য দিদারুল তার স্ত্রী তাইবা ইসলাম সেতুকে চাঁপ প্রয়োগ করেন। এতে সে (সেতু) অস্বীকৃতি জানালে প্রায়ই তাকে শারিরিক নির্যাতন করা হয়। সর্বশেষ সোমবার রাতে দিদারুল ইসলাম তার দাবিকৃত যৌতুকের টাকা আনার জন্য সেতুকে চাঁপ প্রয়োগ করে। এনিয়ে উভয়ের মধ্যে বাগ্বিতন্ডার একপর্যায়ে দিদারুল ও তার মা গৃহবধূ সেতুকে অমানুষিক নির্যাতন করে পানিতে চুবিয়ে হত্যার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়ে ঘরের একটি কক্ষে আটক করে রাখে।
গৃহবধূ তাইবা ইসলাম সেতুর বাবা মনজু আলী জানান, বিষয়টি স্থানীয়রা অতিগোপনে তাকে জানানোর পর সোমবার রাতেই থানা পুলিশের সহযোগীতায় আটককৃত সেতুকে উদ্ধার করে গৌরনদী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মনজু আলী অভিযোগ করেন, হাসপাতাল ত্যাগসহ বিষয়টি ধামাচাঁপা দেয়ার জন্য স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালীরা তাকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি প্রদর্শন অব্যাহত রেখেছেন। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও তিনি (মনজু আলী) উল্লেখ করেন।