ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

জঙ্গী নেতাকে ধরিয়ে দিতে ৫০ লাখ ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র

দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার ॥ আইএস প্রধান নিহত

প্রকাশিত: ০৪:৩২, ১৭ অক্টোবর ২০১৭

দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার ॥ আইএস প্রধান নিহত

জঙ্গী গ্রুপে আইএসের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রধান ফিলিপিন্সের মারাউই শহরে নিহত হয়েছেন। জঙ্গীরা শহরের নিয়ন্ত্রণ অনেকদিন ধরে রেখেছে। ফিলিপিন্সের সরকারী বাহিনীর সঙ্গে জঙ্গীদের এখন লড়াই চলছে। ফিলিপিন্সের প্রতিরক্ষামন্ত্রী সোমবার একথা বলেছেন। এএফপি। জানা গেছে, নিহত ইসনিলন হাপিলনের নাম যুক্তরাষ্ট্রের মোস্ট ওয়ান্টেড টেরোরিস্ট লিস্টে ছিল। ফিলিপিন্সের সরকারী বাহিনী চার মাস ধরে শহরটি অবরুদ্ধ করে রেখেছিল। এ সময়ে এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। আইএস দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশটিকে এ অঞ্চলে তাদের নতুন ঘাঁটি তৈরি করেছে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন আইএস ইরাক ও সিরিয়ায় যে বিশাল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছিল ইসনিলন তার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আইএস বর্তমানে সিরিয়া ও ইরাক থেকে বিদায় নেয়ার পথে। ফিলিপিন্সের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ডেলফিন লরেঞ্জানা সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘আমাদের বাহিনী ইসনিলন ও ওমর মাউতকে হত্যা করেছে। মে মাসে ইসনিলনের নেতৃত্বাধীন যে বাহিনী মারাউই শহর আক্রমণ করেছিল তাদের সঙ্গে মাউতও ছিলেন। আমাদের অপারেটিং ইউনিট নিহতদের মৃত দেহগুলো উদ্ধার করেছে। ফিলিপিন্সের মিলিশিয়া গ্রুপ আবু সায়াফের নেতা ৫১ বছর বয়সী ইসনিলনকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য তথ্য দিতে পারলে মার্কিন সরকার ৫০ লাখ ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছিল। আবু সায়াফকে যুক্তরাষ্ট্র বিদেশী সন্ত্রাসী সংগঠন গণ্য করে থাকে। লরেঞ্জানা বলেন, ‘ফিলিপিনো বাহিনী সোমবার সকালে জঙ্গীদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত যুদ্ধ শুরু করার পর ইসনিলন ও মাউত নিহত হন। মার্কিন ও ফিলিপিনো সরকারের পক্ষ থেকে পুরস্কার ঘোষণা করায় মৃতদেহ দুটির ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি অভিযান এখন শেষের পথে। আগামী দুয়েক দিনের মধ্যেই আমরা অভিযানের পরিসমাপ্তি ঘোষণা করতে পারব।’ ফিলিপিন্স কর্তৃপক্ষ এর আগে অনেকবার বলেছিল অভিযান শীঘ্রই শেষ হবে। কিন্তু এবার তাদের ঘোষণা সঠিক হতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন। ২৩ মে ইসনিলনকে ধরার ব্যর্থ অভিযান চালানোর পর আইএসপন্থী বন্দুকধারীরা ওই শহর নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়। চার মাসের বেশি সময় ধরে চলা অভিযানে এ পর্যন্ত এক হাজারের বেশি লোক নিহত এবং চার লাখের বেশি বাসিন্দা শহর ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে বেশ কয়েকজন জঙ্গী নেতা নিহত হওয়ার খবর প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা দিয়েছেন। মারাউইতে একজন মালয়েশীয় জঙ্গী নেতাকে ফিলিপিনো সৈন্যরা খুঁজছে বলে লরেঞ্জানা সোমবার জানিয়েছেন। মারাউইতে জঙ্গীবিরোধী অভিযানে মার্কিন বিমান বাহিনী অংশ নিয়েছে। টানা বিমান ও স্থল হামলায় শহরের অধিকাংশ জায়গা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। একজন পালিয়ে আসা জিম্মির দেয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে রবিবার ইসনিলনের অবস্থান সম্পর্কে ধারণা পাওয়া সম্ভব হয়েছে বলে লরেঞ্জানা জানিয়েছেন। ইসনিলনের বিরুদ্ধে ২০০৩ সালে তিন জন মার্কিনী অপহরণে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। শহরটিতে শীঘ্রই পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু হবে প্রেসিডেন্টের দফতর থেকে দেয়া বিবৃতিতে আশা প্রকাশ করা হয়েছে। মিন্দানাও দ্বীপের লানাওডেলসুর প্রদেশের মারউই শহরটি মূলত মুসলিম অধ্যুষিত। সেখানে যে স্থানীয় জিহাদী গোষ্ঠীটি আগে থেকেই সক্রিয় ছিল তারা পরে আইএসের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে। সরকারী সূত্রে জানা যায়, আইএস ইসনিলনকে দেশটিতে তাদের শীর্ষ নেতা হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিল। তাকে ধরতে সেনাবাহিনীর অভিযান যখন ব্যর্থ হলে বহু সশস্ত্র ব্যক্তি মারাউই শহরের রাস্তায় নেমে আসে। এরা সেখানে আইএসের পতাকা ওড়ায়। সরকারের একজন মুখপাত্র বলেছেন আবু সায়াফ আদর্শে অনুপ্রাণিত হলেও আইএসের সাহায্য তাদের কাছে পৌঁছানোর কোন প্রমাণ তাদের কাছে নেই।
×