ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

মুগদার খালে পড়ে নিখোঁজ শিশুর হদিস মেলেনি

প্রকাশিত: ০২:৪৯, ১৬ অক্টোবর ২০১৭

মুগদার খালে পড়ে নিখোঁজ শিশুর হদিস মেলেনি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চব্বিশ ঘন্টা পরেও রাজধানীর মুগদার খালের নর্দমায় পড়ে নিখোঁজ তিন বছরের শিশু হৃদয়ের হদিস মেলেনি। খালের দুই পাড়ে শত শত মানুষ ভিড় করেছে। হৃদয়ের পিতামাতা, বোন, আত্মীয়স্বজন আর প্রতিবেশীদের আহাজারিতে সেখানকার আকাশ বাতাস ভারি হয়ে আছে। সবার মুখে মুখে ফিরছে হৃদয়ের করুণ পরিণতির কথা। ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও র্যাব শিশুটিকে উদ্ধারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এলাকাবাসীর দাবি, খালটির উপর তারা দীর্ঘ দিন ধরেই একটি ছোট সেতুর আবেদন জানিয়ে আসছেন প্রশাসনের কাছে। একটি সেতু তৈরি করে দিলে এমন ঘটনা নাও ঘটতে পারতো বলে তাদের দাবি। আর যেন কোন শিশু এভাবে নিখোঁজ না হয়, এজন্য দ্রুত খালটির উপর যেন একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। রবিবার বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে মুগদার মদিনাবাগ লাগোয়া খালের উপর দিয়ে যাওয়া বাঁশের সাঁকু দিয়ে পার হচ্ছিল শিশু হৃদয়। স্থানীয়রা জানান, পা পিছলে সাঁকু থেকে পড়ে যায়। পড়ার পর পরই হৃদয়ের চিৎকারে সেখানে লোকজন জড়ো হয়। লোকজন জড়ো হয়ে খালে নামতে নামতেই আস্তে আস্তে হৃদয় ময়লার নিচে তলিয়ে যেতে থাকে। খালটি উপর প্রচুর ময়লা জমে আছে। আর ময়লার নিচে প্রচন্ড গতি পানি বয়ে যাচ্ছে। নিমিষেই হৃদয় ময়লার নিচে তলিয়ে যায়। মুগদা থানার ওসি এনামুল হক জনকণ্ঠকে বলেন, খালের পানির উপর প্রচন্ড ময়লা আর ময়লার নিচের পানিতে স্রোত থাকায় উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে। হৃদয়কে উদ্ধারে ইতোমধ্যেই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। সিটি করপোরেশন ইতোমধ্যেই জনবল নিয়োগ দিয়েছে। তারা খালের উপর থাকা ময়লা কেঁটে পরিষ্কার করছেন। এরপর সেখান দিয়ে তল্লাশী অভিযান চলছে। তবে সোমবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত হৃদয়ের হদিস মেলেনি। জানা গেছে, হৃদয়ের পিতার নাম কালাম। আর মা রোজি বেগম। পিতামাতা পুরনো জিনিসপত্র কুড়িয়ে ভাঙ্গারী দোকানে বিক্রি করেন। এটিই তাদের পেশা। তাদের সংসারে এক মেয়ে রয়েছে। মেয়েটি নিখোঁজ হৃদয়ের বড়। বাড়ি কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম থানাধীন সোনাপুর গ্রামে। তারা খালের পাড়ের একটি টিনের ঘরে মাসিক প্রায় হাজার টাকা ভাড়ায় দীর্ঘ ধরে ছেলে মেয়ে বসবাস করে আসছেন। খালের দুই পাড়ে জড়ো হয়েছে শত শত মানুষ। নিখোঁজ হৃদয়ের পিতামাতা, বোন আর আত্মীয়স্বজনসহ আশপাশের বাসিন্দাদের আহাজারিতে সেখানে এক শোকাবহ পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। মানুষের ভিড় সামলাতে কাজ করছেন পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স সদর দফতরের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এনায়েত হোসেন জনকণ্ঠকে জানান, ঘটনা জানার পর থেকেই ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরী দল কাজ করছে। ডুবুরী দলে ৫ জন দক্ষ ডুবুরী রয়েছেন। তারা নিরলসভাবে শিশুটিকে উদ্ধারের চেষ্টা করছেন। তাদের পুলিশ ও র্যাব সহায়তা করছে। তবে সোমবার সন্ধ্যা ছয়টা নাগাদ শিশুটির সন্ধান মেলেনি। রাতেও অভিযান চলবে। অভিযান কখন শেষ হবে তা নিশ্চিত নয়।
×