ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

মাদারীপুরে রাতে স্কুলে ঢুকে টেস্ট পরীক্ষার খাতা সংশোধন

প্রকাশিত: ২২:১১, ১৬ অক্টোবর ২০১৭

মাদারীপুরে রাতে স্কুলে ঢুকে টেস্ট পরীক্ষার খাতা সংশোধন

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর ॥ মাদারীপুরের সরকারি ইউনাইটেড ইসলামিয়া (ইউআই) সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, এক সহকারী শিক্ষকের ছেলেসহ ৩ শিক্ষার্থী রবিবার রাতে বিদ্যালয়ে ঢুকে চলতি এসএসসি টেস্ট পরীক্ষার খাতা সংশোধন করতে গিয়ে স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়ে। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন ও শিক্ষার্থীরা ঘটনায় বিচার দাবী করে সোমবার (১৬ অক্টোবর) স্কুলের মধ্যে বিক্ষোভ করেছে। এদিকে এই বিষয়ে প্রধান শিক্ষক নূরুল ইসলাম তার ছেলেসহ ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকদের নিয়ে বৈঠক করেছেন। স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, চলতি এসএসসি টেস্ট পরীক্ষার বাংলাদেশ বিশ্ব ও পরিচয় বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় সোমবার দুপুর ২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত। বিদ্যালয়ের মূলভবনের দরজার চাবি ছিল সহকারী শিক্ষক কবিতা রাণী মালো’র কাছে। তার ছেলে অভ্র মালো বাসা থেকে চাবি নিয়ে তার বন্ধু একই শ্রেণীর ছাত্র শাকিল ও প্রধান শিক্ষক নূরুল ইসলামের ছেলে জায়েদকে নিয়ে সন্ধ্যার পর বিদ্যালয়ের ভেতরে ঢুকে। এরপর রাতে নিরাপত্তা প্রহরী সানাউল হক প্রধান শিক্ষকের চাচাতো ভাই জায়েদের চাচা। প্রধান শিক্ষক ও এক শিক্ষিকার ছেলে হওয়ায় তাদের চাপের মুখে ভেতরে ঢুকতে দেয় ওই নিরাপত্তা প্রহরী। পরে ওই তিন শিক্ষার্থী ভেতরে ঢুকে খাতায় লিখতে শুরু করলে স্থানীয় লোকজন টের পেয়ে তাদের চ্যালেঞ্জ করে এবং আটকে রাখে। খবর পেয়ে বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকরা সেখানে গিয়ে উপস্থিত হয় এবং ওই শিক্ষার্থীদের স্কুল থেকে বের করে দেয়। এদিকে এই খবর সকালে ছড়িয়ে পড়লে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে এবং প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকের বিচার দাবী করে। তবে, ঘটনার বিষয়টি স্বীকার করে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক। স্থানীয় মুন্না, জাহিদুল ইসলাম, রাশেদুল ইসলামসহ একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণী একাধিক শিক্ষার্থী জানান, লাইব্রেরি কক্ষের চাবি থাকার কথা প্রধান শিক্ষকের কাছে। এই ধরনের ঘটনায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা দাবি করছি। মাদারীপুর ইউনাইটেড ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কবিতা রাণী মালো সাংবাদিকদের বলেন, আমার কাছে যে চাবি ছিল তা ঘরে রেখেছিলাম। আমার ছেলে চুরি করে চাবি নিয়ে স্কুলে ঢুকে পড়ে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নূরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ছুটি নিয়ে বরিশালে ছিলাম। বিদ্যালয়ের চাবি ছিল সহকারি শিক্ষক কবিতা রাণী মালো’র কাছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়ে জরুরী বৈঠকে বসেছি। সবার মতামত অনুযায়ীই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আমার ছেলেসহ যেসব শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে ঢুকে পরীক্ষায় খাতায় লিখতে চেয়েছিল তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিদ্যালয়ের সভাপতি মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মো.ওয়াহিদুল ইসলামের কাছে চাইলে মুঠোফোনে তিনি বলেন, আমাকে এখনো কেউ বিষয়টি জানায়নি। আমি ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি, এমন ঘটনা লুকানো হয়েছে কেন এবং কেন জানানো হয়নি বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দোষীদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×