ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

টাঙ্গাইলে বাসে ধর্ষণ মামলার চার্জশীট দাখিল

প্রকাশিত: ০৪:৪৬, ১৫ অক্টোবর ২০১৭

টাঙ্গাইলে বাসে ধর্ষণ মামলার চার্জশীট দাখিল

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল ॥ টাঙ্গাইলের মধুপুরে ঢাকার আইডিয়াল ‘ল’ কলেজের শিক্ষার্র্থী রুপা খাতুনকে চলন্ত বাসে গণধর্ষণ ও ঘার মটকে হত্যা মামলার তদন্ত শেষে পাঁচ পরিবহন শ্রমিকের বিরুদ্ধে রোববার সন্ধ্যায় আদালতে চার্জশীট দাখিল করেছে পুলিশ। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার ৫০ দিন পর মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা মধুপুরের অরনখোলা ফাঁড়ির পরিদর্শক কাইয়ুম খান সিদ্দিকী টাঙ্গাইল বিচারিক হাকিম আদালতে এ চার্জশীট দাখিল করা হয়। টাঙ্গাইলের আদালত পরিদর্শক আনোয়ারুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত ছোঁয়া পরিবহনের সহকারি শামীম (২৬), আকরাম (৩৫) ও জাহাঙ্গীর (১৯) এবং চালক হাবিবুর (৪৫) ও সুপারভাইজার সফর আলীর (৫৫) বিরুদ্ধে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের (সংশোধিত ২০০৩) ৯ এর তিন ধারায় গণধর্ষণের অভিযোগ এবং দন্ডবিধির ৩০২ ধারায় হত্যার অভিযোগ, ২০১ ধারায় লাশ গুমের অভিযোগ এবং ৩৪ ধারায় সহায়তার অভিযোগ আনা হয়েছে চার্জশীটে। চার্জশীটে ৩২জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। এদের মধ্যে পুলিশ, চিকিৎসকসহ পাঁচ/ছয়জন সরকারি কর্মকর্তা রয়েছেন। গত ২৫ আগস্ট বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে রুপা খাতুনকে চলন্ত বাসে পরিবহন শ্রমিকরা ধর্ষন করে। পরে তাকে হত্যা করে টাঙ্গাইলের মধুপুর বন এলাকায় ফেলে রেখে যায়। পুলিশ ওই রাতেই তার লাশ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্ত শেষে পরদিন বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় গোরস্থানে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় অরণখোলা পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম বাদি হয়ে মধুপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। রুপাকে হত্যার পর ময়মনসিংহ-বগুড়া রুটে চলাচলকারী ছোঁয়া পরিবহনের শ্রমিকরা স্বাভাবিক ছিলেন। ঘটনার পরদিন থেকেই তারা স্বাভাবিকভাবে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। রুপার ভাই ২৮ আগস্ট মধুপুর থানায় এসে লাশের ছবি দেখে রুপাকে সনাক্ত করেন। পরে পুলিশ ছোঁয়া পরিবহনের চালক হাবিবুর (৪৫), সুপারভাইজার সফর আলী (৫৫) এবং সহকারি শামীম (২৬), আকরাম (৩৫) ও জাহাঙ্গীর (১৯) কে গ্রেপ্তার করে। পুলিশের কাছে তারা রুপাকে ধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকার করে। ২৯ আগস্ট বাসের তিন সহকারি শামীম, আকরাম, জাহাঙ্গীর এবং ৩০ আগস্ট চালক হাবিবুর এবং সুপারভাইজার সফর আলী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। তারা সবাই এখন টাঙ্গাইল কারাগারে আছে। ৩১ আগস্ট রুপার লাশ উত্তোলন করে তার ভাইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে তাকে সিরাজগঞ্জের তাঁরাশ উপজেলার নিজ গ্রাম আসানবাড়িতে নিয়ে দাফন করা হয়। গত ১২ সেপ্টেম্বর ময়নাতদন্তকারি চিকিৎসক সাইফুর রহমান খান ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন জমা দেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন মাথায় আঘাত জনিত কারনে রুপার মৃত্যু হয় এবং মৃত্যু আগে রুপাকে ধর্ষণ করা হয়।
×