ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

হাইকোর্টের নির্দেশেও চাকরি ফিরে পেলেননা মোঃ রানা

প্রকাশিত: ২১:১৩, ১৪ অক্টোবর ২০১৭

হাইকোর্টের নির্দেশেও চাকরি ফিরে পেলেননা  মোঃ রানা

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ হাইকোর্টের নির্দেশেও চাকরি ফিরে না পাওয়ায় বেকার হয়ে পরা যুবক তার অসুস্থ্য বৃদ্ধ মাকে নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। অর্থাভাবে তার মায়ের চিকিৎসা করাতে না পারার অসহ্য যন্ত্রণায় ভূগছেন ছাত্রলীগ কর্মী মোঃ রানা। এমনকি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের খামখেয়ালীপনায় চাকরি থেকে বের করে দেয়ার পর চরম আর্থিক সংকটে পরায় একবছর পূর্বে রানার স্ত্রীও চলে গেছে তাকে (রানা) ছেড়ে। হৃদয় বিদারক ঘটনাটি জেলার গৌরনদী উপজেলা সদরের টিকাসার গ্রামের। ওই গ্রামের মৃত মালেক হাওলাদারের পুত্র ছাত্রলীগ কর্মী মোঃ রানা জানায়, বিগত নয় বছর পূর্বে গৌরনদী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কার্যালয়ের অফিস সহায়ক (এমএলএসএস) পদে সে যোগদান করেন। প্রথম দুইবছর বিনাবেতনে কর্মরত থাকলেও পরবর্তীতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে মাস্টাররোলের নিয়োগে দৈনিক ১৮০ টাকা হাজিরায় পাঁচ বছর কর্মরত ছিলো রানা। সম্প্রতি ওইপদে স্থায়ী নিয়োগ ঘোষণার পর দীর্ঘদিন থেকে মাস্টাররোলে কর্মরত রানাসহ তিনজন প্রার্থী ওইপদে আবেদন করেন। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে প্রার্থী নির্বাচনের কথা থাকলেও শুধুমাত্র মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমেই নিয়োগবোর্ডের প্রধান তৎকালীন ইউএনও তার (উপজেলা নির্বাহী অফিসার) কার্যালয়ের চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী (মালী) হিসেবে কর্মরত নাসির উদ্দিনকে প্রথম করেন। আজও লিখিত ওইপদের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। রানা আরও জানায়, প্রার্থীকে স্বহস্তে আবেদন করার জন্য বলা হলেও মৌখিক পরীক্ষায় প্রথম করা নাসির উদ্দিন নিজের স্বাক্ষর ছাড়া আর কিছুই লিখতে পারেননা। সম্পূর্ণ মনগড়াভাবে নাসির উদ্দিনকে ওইপদে স্থায়ী করার জন্যই রহস্যজনক কারণে আজও লিখিত পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়নি। ফলে নাসির উদ্দিন একসাথে দুই অফিসে কর্মরত থেকে বেতনভাতা তুলছেন। লিখিত পরীক্ষা গ্রহণ না করেই সম্পূর্ণ অনিয়মের মাধ্যমে নাসির উদ্দিনকে প্রথম করে দীর্ঘদিন মাস্টাররোলে কর্মরত মোঃ রানাকে অফিস থেকে বের করে দেয়ার বিষয়ে (ইন্টারভিউ বোর্ডের অনিয়মের বিরুদ্ধে) ২০১৩ সালের ৩১ অক্টোবর হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন রানা। পরবর্তীতে বিচারপতি আসফাকুল ইসলাম ও আশিষ রঞ্জন দাসের সমন্ময়ে গঠিত বেঞ্চ দীর্ঘদিন মাস্টাররোলে কর্মরত মোঃ রানাকে শুণ্য পদে স্থায়ী নিয়োগের জন্য চলতি বছরের ২৪ মে রায় ঘোষণা করেন। মোঃ রানা অভিযোগ করেন, ওই রায়ের কপি সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে এসে পৌঁছার পর বর্তমান পরিষদ রায়কে ভুয়া বলে আখ্যায়িত করে তা (রায়ের কপি) ছুড়ে ফেলে দেয়। বিষয়টি রিট দায়ের করা সংশ্লিষ্ট আইনজীবী এ্যাডভোকেট আকতারুজ্জামানকে জানানোর পর তিনি (আইনজীবী) কনডেম করার পূর্বে সংশ্লিষ্ট পরিষদকে দুইবার নোটিশ প্রদান করেন। নোটিশের কোন জবাব না দিয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নানা তালবাহানা শুরু করেছেন। রানা আরও জানান, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কার্যালয়ের অফিস সহায়ক (এমএলএসএস)’র শুন্যপদে নাসির উদ্দিনকে কর্মরত দেখানো হলেও সেপ্টেম্বর মাসেও সে (নাসির) উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের কর্মরত মালী হিসেবে বেতন উত্তোলন করেছেন। অসহায় যুবক মোঃ রানা তার চাকরি ফিরে পাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও স্থানীয় সংসদ সদস্যর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
×