ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে নিরাপত্তা পরিষদের সমর্থন

প্রকাশিত: ১৮:০২, ১৪ অক্টোবর ২০১৭

আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে নিরাপত্তা পরিষদের সমর্থন

অনলাইন ডেস্ক ॥ মিয়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কফি আনান কমিশনের সুপারিশমালা বাস্তবায়নে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। স্থানীয় সময় শুক্রবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরের ইকোসক চেম্বারে অনুষ্ঠিত আরিয়া ফর্মুলা সভায় অ্যাডভাইজরি কমিটি অন রাখাইন স্টেট-এর চেয়ারম্যান নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান উপস্থিত ছিলেন। ব্রিটিশ ও ফরাসি ডেলিগেশন আয়োজিত আরিয়া ফর্মুলা সভার আয়োজন করে। বৈঠকে কফি আনান তার বক্তব্যে সম্প্রতি মিয়ানমার সরকারের কাছে পেশকৃত 'অ্যাডভাইজরি কমিটি অন রাখাইন স্টেট' এর রিপোর্টের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোকপাত করেন। রাখাইন প্রদেশের জনগণের স্থায়ী শান্তি, নিরাপত্তা, সমৃদ্ধি, উন্নয়ন ও চলমান সংকটের সমাধানের লক্ষ্যে মিয়ানমার সরকার তার কমিশন প্রণীত রিপোর্টের সুপারিশমালার আশু বাস্তবায়ন করবে মর্মে তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। কফি আনান রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব বিষয়ে মিয়ানমার সরকারের ১৯৮২ সালে প্রণীত নাগরিকত্ব আইন আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী সংশোধনের বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করেন। রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের মর্যাদা ও নিরাপত্তার সাথে নিজ ভূমিতে প্রত্যাবর্তন, মানবিক সহায়তা ও মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করতে কফি আনান তার রিপোর্টে উল্লেখ করেন। তিনি বাংলাদেশের সাথে সীমান্ত নিরাপত্তা ও দ্বিপাক্ষিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা রক্ষা করার বিষয়ে জোর দিয়ে বলেন এই সুসম্পর্ক ও সহযোগিতার মাধ্যমে উভয় দেশই লাভবান হবে। কফি আনান রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে মিয়ানমারের আন্তঃসম্প্রদায়ের মধ্যে সংলাপ ও সমঝোতার উপর বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন 'এই ভয়াবহ রোহিঙ্গা সমস্যা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে না, যতক্ষণ না পর্যন্ত রাখাইন প্রদেশের জনগণের কল্যাণে মিয়ানমার সরকার রাখাইন জনগোষ্ঠী ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ঐক্যমত্য হয়ে কাজ না করে।' নিরাপত্তা পরিষদের সকল সদস্যই এ সংকট সমাধানের পক্ষে বক্তব্য রাখেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি এটিকে মানবিক বিপর্যয় আখ্যা দিয়ে বলেন, 'এনাফ ইজ এনাফ। আমরা এটি আর গ্রহণ করতে পারছি না। আমরা মিয়ানমার সিকিউরিটি ফোর্সের এই হীন কাজের নিন্দা জানাই।' যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি অনতিবিলম্বে মানবিক সহযোগিতা প্রদানের সুযোগ সৃষ্টি, সহিংসতা বন্ধ, জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের পূর্ণ প্রবেশাধিকার, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপদ ও নিশ্চয়তার সাথে স্বদেশে প্রত্যাবর্তনসহ কফি আনান কমিশনের রিপোর্টের পূর্ণ বাস্তবায়নের উপর জোর দেন। প্রায় একই ভাষায় কথা বলে নিরাপত্তা পরিষদের অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিনিধিগণ। তারা বাস্তুচ্যুত ও অসহায় রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মানবিক সাহায্য প্রদান করায় বাংলাদেশ সরকার ও বাংলাদেশের জনগণের ভূয়সী প্রশংসা করেন। সকলেই সহিংসতা বন্ধ, কফি আনান কমিশনের সুপারিশমালা বাস্তবায়ন এবং উদ্বাস্তু প্রত্যাবাসনের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যগণের বাইরে বাংলাদেশ, মিয়ানমার, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ড এর প্রতিনিধিগণ বক্তব্য রাখেন। এছাড়া অফিস অব দ্যা হাই কমিশন অব হিউম্যান রাইটস, অফিস ফর দ্যা কো-অর্ডিনেশন অব হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্স, ইউএনএইচসিআর এর প্রতিনিধি, ওআইসি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিগণ বক্তব্য রাখেন।
×