ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সবজির দাম চড়া

প্রকাশিত: ০২:০৮, ১৩ অক্টোবর ২০১৭

সবজির দাম চড়া

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ গ্রীষ্মকালীন সবজির সরবরাহ কমে আসায় বাজারে সব ধরনের শাক-সবজির দাম বেড়েছে। তবে নবেম্বরের শুরুতে বাড়বে শীতকালীন সবজির সরবরাহ। ওই সময় দাম কমে আসবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। ইতোমধ্যে ফুলকপি, বাঁধাকপি ও শিমের মতো শীতকালীন সবজি বাজারে আসতে শুরু করেছে। তবে দাম চড়া। গড়ে ৬০ টাকার নিচে কোন সবজি নেই বাজারে। মরিচের দাম সামান্য কমেছে। এছাড়া এ বছর অতিবৃষ্টি ও বন্যার কারণে ফসলি জমি নষ্ট হয়ে যাওয়ার প্রভাব পড়েছে বাজারে। প্রতিবছর শীত মৌসুম সামনে রেখে এ সময়টাতে সব ধরনের সবজির দাম বেড়ে যায়। ভাল মানের বেগুন, বরবটি, ঢ্যাঁড়স, ঝিঙে, চিচিঙ্গা, করলা, শসা প্রভৃতি প্রতিকেজির দাম ৭০ থেকে ৮০ টাকা। একটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়। একটি জালি কুমড়া কিনতে খরচ হচ্ছে ৪০ টাকা। কম দামি সবজির মধ্যে আছে কাঁচা পেঁপে, প্রতিকেজি ২০-২৫ টাকা। কাঁচা মরিচের দাম সামান্য কমেছে। ১০০ গ্রাম ২০ টাকা ও ২৫০ গ্রাম ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি কিনলে দাম পড়ছে মানভেদে ১৩০ থেকে ১৬০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ২৫০ টাকায় উঠেছিল। শুক্রবার রাজধানীর কাওরান বাজার, কাপ্তান বাজার, ফকিরাপুল বাজার, টাউন হল মার্কেট এবং পলাশী বাজার ঘুরে নিত্যপণ্যের দরদামের এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এদিকে, সবজির সঙ্গে চলতি সপ্তায় কেজিতে ১০-১২ টাকা বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। দেশী ও আমদানিকৃত সব ধরনের পেঁয়াজের দাম এখন বেশি। খুচরা বাজারে প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৫ টাকায়। এক সপ্তাহ পূর্বে এই পেঁয়াজ ৩৫-৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ব্রয়লার মুরগির বিক্রি হচ্ছে ১২৫-১৩৫ টাকায়। এছাড়া আদার দাম বেড়ে প্রতিকেজি ১০০-১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি রসুন। এছাড়া চাল, ডাল, আটা, ভোজ্যতেল, চিনি এবং অন্যান্য পণ্যের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার বাজার করতে এসে অনেকেই সবজির দাম শুনে বিরক্ত হয়েছেন। অনেকে জানতে চাচ্ছেন সবজির সরবরাহ রয়েছে কিন্তু দাম এত বেশি কেন? এই প্রশ্নের জবাবে বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারি মূল্য বেশি হওয়ার কারণে তাদেরকেও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এ বছর বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে সবজিক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। তবে শীঘ্রই শীতকালীন সবজির সরবরাহ বাড়বে বলে জানালেন এই বিক্রেতা। ফকিরাপুল বাজারের সবজিক্রেতা সালাম জানালেন, এ বছর সবজির দাম চড়া। প্রতিবছর এই সময়টাতে দাম বাড়লেও এবার ক্রেতাদের অনেক বেশি মূল্য দিতে হচ্ছে। এদিকে, বাজারে মোটা ও সরু চালের দাম নিয়ে ক্রেতাদের এখনও অসন্তুষ্টি রয়েছে। দাম বাড়ার পর সরকারী পদক্ষেপে কেজিতে ৩-৫ টাকা মূল্য কমার পর এখন আগের দামে স্থিতিশীল রয়েছে। জাত ও মানভেদে প্রতিকেজি মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৮-৫২ টাকায়। এছাড়া নাজির ও মিনিকেটের মতো সরু চাল বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৬ টাকায়। মরিচের পর এবার বাড়লো পেঁয়াজের দাম। গত কোরবানি ঈদের সময় সিন্ডিকেট করে পেঁয়াজ ৬০-৬৫ টাকা দামে বিক্রি করা হয়। ওই সময় সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপে এই পণ্যটির দাম কমলেও আবার এখন বাড়ছে। চলতি মাসের প্রথম দিকে প্রতিকেজি দেশী পেঁয়াজ ৪০ এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ৩৫ টাকায় বিক্রি হয়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, পেঁয়াজের এই মূল্যবৃদ্ধির কারণ ভারতে দাম বেড়ে যাওয়া। সূত্রগুলো আরও বলছে, দেশটির মহারাষ্ট্রের নাসিকের লাসালগাঁও পাইকারি বাজারে ১০ দিনে পেঁয়াজের দাম ৮০ শতাংশ বেড়েছে। ঢাকার কৃষিপণ্যের পাইকারি বাজার শ্যামবাজারকেন্দ্রিক আমদানিকারকরা বলছেন, পেঁয়াজ পচনশীল বলে আমদানি করে দ্রুত বিক্রি করতে হয়। দাম বাড়লেও আমদানিকারকদের এখনো লোকসান হচ্ছে। তবে ভোক্তারা বলছেন, নতুন করে পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হচ্ছে। এর পেছনে সিন্ডিকেট চক্রের কারসাজি থাকতে পাওে বলেও আশঙ্কা তাদের।
×